গণধোলাই-অবাঞ্ছিত ঘোষণায় উত্তপ্ত মহানগর আ.লীগ
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:৩০ পিএম, ৩ জুলাই ২০২৪ বুধবার
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের বিভক্তি এখন দৃশ্যমান হয়ে কোন্দল চরম আকার ধারন করেছে। ওয়ার্ড কমিটি ঘোষনা নিয়ে এখানকার দলীয় কোন্দল কেন্দ্রীয় নেতা পর্যন্ত গিয়েছে। কিন্তু দলের মধ্যে থাকা অনৈক্য দূর করার চাইতে আরও বেরেছে। সম্প্রতি ওয়ার্ড কমিটি ঘোষনাকে কেন্দ্র করে মহানগর আ.লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে রয়েছে। তার মাঝে মাহনগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাতের নেতৃত্বে থাকা একটি পক্ষ একই কমিটির সভাপতি সেক্রেটারিকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করেছে।
এবার ১ জুলাই বন্দরের এক সভায় আনোয়ার খোকনের নেতৃত্বে থাকা গ্রুপটি জি এম আরাফাতকে গণধোলাইয়ের ঘোষনা দিয়েছে। আর এই পাল্টা পাল্টি বক্তব্যে মাহনগর আওয়ামী লীগে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরী হয়েছে। এতে করে দলের মাঝে বিশৃঙ্খলা বেরেই চলছে। এই বিশৃঙ্খলা যে কোথায় গিয়ে শেষ হয় তাও কেউ জানে না।
এ দিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার পক্ষ নিয়ে জি এম আরাফাতকে হুঙ্কার দিয়ে যুবলীগ নেতা খান মাসুদ বলেন এক শ্রেনীর কর্মীবিহীন লোক আমাদের মহানগরের দুই শীর্ষ নেতার সমালোচনা করছে। বন্দরের মাটিতে এসে যদি আপনারা কোন উল্টা পাল্টা কথা বলেন, তাহলে এমন ধোলাই খাবেন, যেই ধোলাইয়ের পর আপনারা আওয়ামী লীগের নাম ভুলে যাবেন।
বন্দরের কোথাও আপনারা কোন প্রোগ্রাম করতে পারবেন না। আনোয়ার ভাই ও খোকন দাদার বিরুদ্ধে আর কোন কথা বইলেন না ভাই। নাহলে আমরা আপনাকে লাঞ্ছিত করবো। এমন লাঞ্ছিত করবো, আপনাদের মান-ইজ্জত যাই আছে, শেষ হয়ে যাবে।
এর আগে ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সভায় বন্দরের একাধিক নেতৃবৃন্দ বলেন, মহানহগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন ওয়ার্ড কমিটিতে জামায়াত –বিএনপি,হত্যা মামলার আসামীকে দলের গুরুপূর্ণ দায়িত্বে রাখা হয়েছে। আর এজন্য মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহাকে নিয়ে নানা ভাবে সমালোচনা করা হচ্ছে। কোন ভাবে তারা এই সমালোচনা থেকে বের হতে পারছেন না।
দিনের পর দিন ওয়ার্ড পর্যায়ের তেৃনমূলের পদ বঞ্ছিত নেতা কর্মীরা তাদের নিয়ে ক্ষোভ ঝেরেই যাচ্ছেন। ক্ষোভের বহিপ্রকাশ হিসেবে নেতা কর্মীরা মহানগরের দুই কর্ণধার সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং খোকন সাহাকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ শহর বন্দরের ওয়ার্ড গুলোতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করে নতুনদের স্থান দেয়া হয়েছে। সভাপতি সেক্রেটারি স্বজন প্রীতি করে বিভিন্ন ফায়দা নিয়ে নিজেদের অনুগত কিছু ব্যক্তিকে কমিটিতে স্থান দিয়েছে। আর ্এতে করে দলকে আরও দুর্বল করেছে বলে অভিযোগ তৃনমুল নেতা কর্মীদের।
এ ছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সমালোচনা করে একই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত বলেন, আওয়ামী লীগ তো এত পঁচা দল হয়ে যায়নি। যাতে করে যাদের পূর্ব পুরুষ স্বাধীনতা বিরোধী তাদের সন্তানের হাতে ওয়ার্ড কমিটি তুলে দিতে হবে। যারা দলের জন্য দূরসময়ে জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তাদেরকে বাদ দিয়ে নিজেদের ধান্দার জন্য পকেট কমিটি অনুমোদন দিতে হবে।
আমরা যদি মুখ খুলি বাসা থেকে বের হতে পারবেন না। এসমস্ত নোংরা রাজনীতি পরিহার করুন। শ্রদ্ধা করি শ্রদ্ধার জায়গায়ই থাকেন। আজ অনেকে বড় বড় কথা বলেন। দূর সময়ে ঘরে বসে থাকতেন। একটি ওয়ার্ডেও কাউন্সিলে মেয়রকে অতিথি হিসেবে রাখেননি। দলকে দুর্বল করার জন্য নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে ত্যাগিদের অব মুল্যায়ন করে নতুনদের কমিটিতে পদ দিয়েছেন। তাছাড়া দলের অন্যান্য নেতারা বলছে দলকে ধংসের জন্য তাদের মত দুজন নেতাই যথেষ্ঠ।
তাদের পাল্টা পাল্টি বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যপক ভাবে সমালোচনার ঝর বয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে একই কমিটির দুটি গ্রপ তৈরী হওয়ায় তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা এখন তুঙ্গে। তার মাঝে এক পক্ষ চায় গণধোলাই দিতে আরেক পক্ষ দলের শীর্ষ নেতাকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করেন। আসলে কে কাকে কি করবে তা সময়ে বলে দিবে। কিন্তু তাদের এই মন্তব্য দলের ভাবমুর্তিকে নষ্ট করছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক সচেতন মহল।