মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩১   ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সেই চুন্নুর অস্ত্রভান্ডার কোথায়?

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১২:২৩ এএম, ১৯ আগস্ট ২০২৪ সোমবার

 

 

ফতুল্লা লামাপাড়া-নয়ামাটি এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মোফাজ্জল হোসেন চুন্নুর অস্ত্রভান্ডার কোথায়? এমন প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকাবাসীর মনে। কেননা, বিগত সময়ে বহুবার দেশী-বিদেশী অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গ্রেপ্তার হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমগুলোতে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যান ওসমান পরিবারের সকলে। সেই ধারাবাহিকতায় মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ভূমিদস্যুতায় পরিপূর্ণ নয়মাটি-লামাপাড়াবাসীর কাছে এক ‘মুর্তমান আতঙ্ক’ চুন্নুও চলে যায় আত্মগোপনে। তবে, তার অস্ত্রগুলো কোথায় তা জানা নেই কারও!


সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ৩ মার্চ ফতুল্লার লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকা থেকে বিদেশী পিস্তল, ম্যাগজিন, ৬ রাউন্ড গুলি ও বিদেশী মদ বিয়ারসহ মোফাজ্জল হোসেন চুন্নুকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১১। ওই সময় পুরাতন কোর্ট এলাকার র‌্যাব-১১ এর সিপিসি-১ এর এএসপি মাসুদ আনোয়ার জানিয়েছিলেন, চুন্নু একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর রয়েছে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। এই বাহিনী দ্বারা সে ভূমি দখল ও মাদক বিক্রি করাতো। চুন্নু গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার অস্ত্র ভান্ডারের সন্ধানে নামে র‌্যাব-১১। এর আগেই র‌্যাব জানতে পেরেছিলো, চুন্নু তাঁর স্ত্রীর মাধ্যমে তার অস্ত্র নিকট আত্মীয়দের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছে।

 

এরপরই একই বছরের ১৪ মার্চ র‌্যাব-১১ চুন্নুর শ্যালিকা সুমাইয়া আক্তার মুন্নির চোধুরী বাড়ি এলাকার বাড়িতে অভিযান চালায় এবং সেখান থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন, ৮ রাউন্ড গুলি ও চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করে। এছাড়াও ২০১৭ সালের ৩ আগষ্ট চুন্নু ও তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন লামাপাড়া এলাকার মো. হাবিব মিয়া। এখানে হাবিব মিয়া দাবি করেছিলেন, চুন্নু ও তার বাহিনী অস্ত্র নিয়ে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং তার কাছ থেকে নগদ টাকাসহ মোবাইল ফোন লুটে নেয়। এছাড়াও একই বছরের ১০ নভেম্বর ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আতাউর রহমান চুন্নুকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়।

 

এসময় চুন্নুর বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে তাকে আটক করলেও তার সহযোগিরা পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় চুন্নু পালিয়ে গেলেও তার সহযোগি আরফান মাদবরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনার ঠিক সাড়ে তিন বছর আগে চুন্নুর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড রাফেদ আলীকে একই থানার এসআই জিন্নাহর উপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নিয়েছিলো চুন্নু বাহিনী। পরে ২৫ অক্টোবর এই রাফেদ আলীকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।


এদিকে, চুন্নু সাম্রাজ্যে পতনের পর আনন্দে আত্মহারা নয়ামাটি-লামাপাড়া এলাকাবাসী। তারা বলছেন, চুন্নু আত্মগোপনে চলে গেলেও সেই অল্প সময়ের মধ্যে তার লুকানো অস্ত্রভান্ডার সরাতে পারেনি। সুতরাং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিৎ পুরো লামাপাড়া-নয়ামাটি এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা উচিৎ। হতেও পারে সেই অভিযানের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।