শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৭ ১৪৩১   ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বাদলের ভূমিদস্যু সাত্তার এখনো তৎপর

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৫:২৮ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শনিবার

 

 

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদলের সকল অপকর্মের সহযোগী ও অন্যতম ভূমিদস্যু কাশীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. এ সাত্তার ওরফে (সাত্তার মেম্বার)। যিনি গত ১৬ বছরে বাদলের ছত্রছায়ায় মানুষের রক্ত চুষে বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। নামে বেনামে হয়ে গেছেন ৫টি বাড়ির মালিক, কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স বনে গেছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।

 

 নেই কোন ব্যবসা বানিজ্যে শুধু দখল দারিত্ব, বিচারের নামে প্রহসন, খাসের জমি দখল, মাদক ব্যাবসায়ীদের শেল্টারসহ ডজনখানিক অপকর্ম পরিচালনাকারী এম. এ সাত্তার এখনো বিএনপি নেতাকর্মীদের মোটা অংকের টাকার দিয়ে কাশীপুরে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে তার ভূমিদস্যুতার হার এতোই উপরে চলে গিয়েছিলো যে তিনি তার আপন ভাইয়ের জমি ও খেয়ে ফেলার পায়তারা করেছিলেন। কিন্তু প্রহশন ও ভূমিদস্যুতায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলে ও ভাড়া বাসায় থেকে নিজেকে অনেকটাই অসহায় বানিয়ে রাখতেন তিনি।  


এদিকে গত (১৯ জুলাই) সাইফুল্লাহ বাদলের নির্দেশনায় কাশীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আইয়ূব আলী ও এই সাত্তার কাশীপুর থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে শামীম ওসমানের সাথে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ২ নং রেলগেইট এলাকায় অবস্থান নিয়ে গুলি বর্ষন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু গত ০৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করে এমনকি নারায়ণগঞ্জে তাদের নেতা শামীম ওসমান পালিয়ে গেলে ও কিছু বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে আতাঁত করে এখনো কাশীপুরে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এই কুখ্যাত ভূমি খেকো এম. এ সাত্তার।

 

 জানা গেছে, ২০০০ সালের পূর্বে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও কাশীপুরের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ বাদলের নেতৃত্বে তিনি আওয়ামীলীগের যোগদান করেই যেন তার ভাগ্যলিপি পুরোটাই বদলে ফেলেন। হাইব্রিড এ নেতার তেমন কোন ব্যবসা বানিজ্য না থাকলেও প্রভাবশালী সাইফুল্লাহ বাদলের বদৌলতে তিনি বর্তমানে ৫টি বাড়ি ও অঢেল সম্পত্তির মালিক। কিন্তু এখনো দেখানো হিসেবে তিনি কাশীপুর ৮ নং ওয়ার্ডের আমবাগান এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

 

 আরো জানা গেছে, বিএনপি ছেড়ে আওয়ামীলীগের যোগদানের পর থেকেই যেন সাত্তার সাহেবের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কোন ব্যবসা বানিজ্য না থাকলে কাশিপুর হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সদস্য পদ থেকে বাতিল হওয়া সত্ত্বে ও তিনি বাদলের সাথে আতাঁত করে স্কুলের বিভিন্ন সেক্টর থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন তা ছাড়া কাশিপুরে থাকা কয়েকটি ঘাট এবং হাট দেখভাল, কাশীপুরের অনাচে-কানাচে সরকারী খাস জমি নিরীহ মানুষের জমি জোড়পূর্বক এবং আওয়ামীলীগের ভয়-ভীতি প্রদানের মাধ্যমে কমমূল্যে করে বেশী মুল্যে বিক্রয় বিচারের নামে প্রহসন আরও কতইনা কি। 

 

আর এমএ সাত্তারের এ সকল কাজের অংশীদার হিসেবে ছিলেন। সাইফুল্লাহ বাদলের পুত্র নাজমুল হাসান সাজন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আইয়ুব আলী, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক রেহান শরীফ বিন্দু।

 

একাধিক সূত্র বলছে, সাইফুল্লাহ বাদলের মদদেই নাকি এম.এ সাত্তার এতটা বেপরোয়াভাবে অল্প সময়েই ৫টি বাড়িসহ কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। আর এ সকল মুলে রয়েছে সরকারী খাস জমি দখল করেছে বিক্রি, সাধারন নিরীহ মানুষের জমিগুলো ভীতি প্রদানের মাধ্যমে কমমূল্যে সংগ্রহ করে অধিকমুল্যে ,বিক্রি, হাজি উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাৎ, হাট এবং ঘাটের মাধ্যমেই নাকি তার এত সম্পদের পাহাড়। কর্মহীন এই সাত্তার। 

 

এর আগে ২০১৯ সালের (৫ সেপ্টেম্বর ) এম.এ সাত্তারের ছেলে রবিউল ইসলাম ধিরাজকে এক স্কুল ছাত্রীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ ছেলে ও মেয়েকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার পর বিকেলে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীকে থানায় এসে পুলিশ ও সেই মেয়ের পরিবারের সাথে বিচা-শালিশ করে মোটা অংকের অর্থ ও বাদলের পোন দেওয়ায় তার অপরাধী ছেলে পুরোটাই কলঙ্কম্ক্তু হয়ে পরেন।

 

 তা ছাড়া জানা গেছে, আমবাগান এলাকায় এই সাত্তার একটি গ্যাং পালতেন যাদের দ্বারা তিনি মানুষের জায়গা দখল ও বহু অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পরেছিলেন। এদিকে গত ৫ আগষ্টের পর দফায় দফায়কৃত হত্যা মামলায় ২টিতে নাম পাওয়া গেছে এই সাত্তারের। তা ছাড়া বর্তমানে কিছু বিএনপি নেতাকর্মীর শেল্টারে তিনি এখনো বহাল থাকায় এখানো আতঙ্ক রয়েছে কাশীপুরে। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি হত্যা মামলা হলে ও বিএনপির কিছু কথিতরা টাকা খেয়ে তাকে আশ্রয় পশ্রয় দিয়ে রেখেছেন বলছেন সূত্র।