স্বৈরাচারের দোসরদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে
আল আমিন
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৮:৪৩ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শনিবার
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, এই আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে-কতৃত্বে এই শেখ হাসিনা মানুষের বুকে গুলি চালিয়েছে, রাষ্ট্রের সম্পদ লুন্ঠন করেছে, গণতন্ত্রকে হরণ করেছে, মানুষের মৌলিক অধিকারকে ধ্বংস করে দিয়েছে, আইন-আদালত বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে, দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে, দেশের অর্থনীতিকে লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে, এই দেশের মানুষকে এক দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে স্বৈরাচার ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
গতকাল শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১ নং ওয়ার্ডের মিজিমিজি বাতেনপাড়া এলাকায় ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজীর বিরুদ্ধে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় গিয়াস উদ্দিন বলেন, এত বড় অপরাধী, এত বড় স্বৈরাচার পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল, যেই স্বৈরাচার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হয়েছিল। একসময়ের পাকিস্তান আমলের মুসলিম লীগ অন্যায়-অত্যাচার করেছে, বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীন করার পর সেই মুসলিম লীগের অস্তিত্ব আজ নেই।
আবার স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে আবার আওয়ামীলীগ নিঃশেষ হয়ে গেছে। আজকে যদিও থাকে তবুও মুসলিম লীগ যেমন কলঙ্কজনক হয়ে আছে, তেমনি আওয়ামীলীগ যারা করবে এই কলঙ্কের বোঝা তাদেরকে টানতে হবে।
তিনি বলেন, এই বিধ্বস্ত দেশ এবং বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে গড়ার জন্য আজকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছে। এই সময়েও তারা ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত নয়, বিদেশে থেকে এবং যারা দেশে রয়েছে অবৈধভাবে অর্থ-সম্পদ লুট করেছে, তারা আজ অর্থ-সম্পদ বিনিয়োগ করে চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটানোর জন্য, শিল্প-কলকারখানা বন্ধ করে দেয়ার জন্য।
এ দেশের মানুষের দু:খ-দুর্দশা বেড়ে গিয়ে আবার যেন মানুষ বলতে শুরু করে আগের সরকারই ভাল ছিল। এই কথা বলানোর জন্য তারা ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রকে আপনার-আমাদেরকে মোকাবেলা করতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমরা ৫ই আগষ্ট নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। নতুন বাংলাদেশে আমাদেরকে নতুন ইতিহাস গড়তে হবে। ছাত্র-জনতার রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। আমাদের আন্দোলন সংগ্রামকে সফল করেছি, বিফল হতে দেয়া যাবে না।
স্বৈরশাসকের সাথে যারা ছিল ওরা ওৎ পেতে বসে আছে এবং ষড়যন্ত্র করছে, কিভাবে আমাদের দেশে আত্মকলহ সৃষ্টি করে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে নষ্ট করে, আমাদের সম্পদ ধ্বংস করে আবার কিভাবে তারা ক্ষমতায় আসবে এবং তারা আবার কিভাবে সমাজে আসবে, এটা হতে দেয়া যাবে না।
নেতাকর্মীদেরকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়ে গিয়াস উদ্দিন বলেন, স্বৈরাচার চলে গেছে এখন আমাদের কি করতে হবে, আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। কোন জায়গায় কেউ যেন চাঁদাবাজী করতে না পারে, মানুষের সম্পদ অবৈধভাবে দখল করতে না পারে, কোন ভাবে যাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য অতন্ত্র প্রহরীর মত যার যার এলাকা পাহারা দিয়ে রাখতে হবে।
আমাদের জাতীয় সম্পদের যাতে আর ক্ষতি না হয় সেদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে। কোন শিল্প-কারখানায় চাঁদাবাজী-মাস্তানি করতে দেয়া যাবে না। কারো জায়গা দখল করা যাবে না, ফুটপাতে চাঁদাবাজী করা যাবে না, কোন রাস্তার পরিবহনে চাঁদাবাজী করা যাবে না। এগুলো মুক্ত করে যদি আমরা মানুষের মাঝে স্বস্তি দিতে পারি তাহলেই আন্দোলনের যে ফসল আমরা ঘরে তুলতে পারব।
নাসিক ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো: রওশন আলীর সভাপতিত্বে এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ও যুবদল নেতা মো: শহিদুল্লাহর সঞ্চালনায় উক্ত জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মো: মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো: ইকবাল হোসেন, সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু।
সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিম জুয়েল,সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহ-সভাপতি মো: মোস্তফা কামাল, ডিএইচ বাবুল, এসএম আসলাম, একেএম সামছুল হক, মো: সেলিম মাহমুদ, এড. আসাদুজ্জামান মন্টু, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন ও ১নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিনসহ প্রমূখ। এন. হুসেইন রনী /জেসি