বুধবার   ১৬ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ১ ১৪৩১   ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬

পলাতক মুকিতের গলাবাজি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১০:১০ পিএম, ১ অক্টোবর ২০২৪ মঙ্গলবার

 

 

# আ.লীগ সরকারের পতনের আগে অনুমতিবিহীন চাঁদাবাজির অভিযোগে মুকিতকে নিজের বলয় থেকে বের করে দিয়েছিলেন আজমেরী ওসমান

 

‘অতীতেও জননেতা আজমেরী ওসমানের কর্মী ছিলাম, বর্তমানেও আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো’। ‘আমরা নেতা পাল্টাপাল্টি করার লোক না’। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নিজের আইডিতে এমনই একটি ভিডিও আপলোড করেছেন আজমেরী ওসমানের অনুসারী মোশাঈদ রহমান মুকিত। যা নিয়ে জেলার সর্বত্রই চলছে নানা আলোচনা। কেননা, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে মুকিতকে নিজের বলয় থেকে বের করে দিয়েছিলেন আজমেরী ওসমান। মুকিতের এমন পোস্টের পর অনেকেই তাকে ‘মাত্রাহীন দালাল’ বলেও আখ্যায়িত করছেন। পোস্টটির ক্যাপশনে মুকিত লিখেছেন, ত্যাগী কর্মীরা অভিমানী হয়, বেঈমান না

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দীতা করে আলোচনায় আসেন মুকিত। সেসময় নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের পরিবারের পক্ষ থেকে সমর্থন দেওয়া হয় মুকিতকে। নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে একাধিকবার মুকিতের হয়ে প্রচারণা চালান নাসিম ওসমানের সহধর্মীনি ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পারভীন ওসমান ও তার পুত্র আজমেরী ওসমান। মুকিতকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্যে বন্দরবাসীর প্রতি আহবান জানান তারা। যদিও নির্বাচনে ভরাডুবি হয় মুকিতের। বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয় সে। পরবর্তীতে চাঁদাবাজির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিজ বলয় থেকে মুকিতকে বের করে দেন আজমেরী ওসমান নিজেই।

 

এদিকে, আজমেরী ওসমানের বলয়ে পূর্ণ মাত্রায় রাজনীতি করা অবস্থায় নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে বিশাল এক অফিস খুলে বসেছিল মুকিত। যেখানে বসে সে চালাতো তার রাজরাজত্ব। প্রভাব খাটিয়ে বড় কনস্ট্রাকশনের কাজ হাতিয়ে নেয়াই ছিল মুকিতের পেশা। সেসময় মুকিতের বিরুদ্ধে ছিল চাঁদাবাজির বিস্তর অভিযোগ।

 

অপরদিকে, অনুমতি ছাড়া চাঁদাবাজি করার অভিযোগের মুকিতকে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর নিজ বলয় থেকে বের করে দেন আজমেরী ওসমান। এরপর থেকেই ছন্নছাড়া হয়ে পরে মুকিত। এমতাবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই ধারাবাহিকতায় স্ব-পরিবারে পালিয়ে যায় ওসমান পরিবারের সকল সদস্য। আজমেরী ওসমান ও তার পারভীন ওসমান পালিয়ে গেলে ভয়ে গা ঢাকা দিতে শুরু করে তার অনুগত-অনুসারীরা। পালিয়ে যান মোশাঈদ রহমান মুকিতও। বর্তমানে তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন বলে নিশ্চিত করেছে বেশ কয়েকটি সূত্র।

 

সম্প্রতি আজমেরী ওসমানের বন্দনায় মেতে এমন পোস্টে নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন মুকিত, বলছেন সচেতন নাগরিকরা। তাদের মতে, চাটুকারিতারও একটা মাত্রা হয়। যার সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে মুকিত। শুধুমাত্র নির্বাচনে পরাজয়ের কারণে যে মুকিতকে চাঁদাবাজের তকমা লাগিয়ে নিজ বলয় থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া হয়েছে সেই আজমেরী ওসমানের-ই দালালি করে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়া মুকিতের সাজে না।