দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বদলী হওয়া সোহেল ফের ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে
অর্ণব হাসান
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৮:৪৮ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০২৪ বৃহস্পতিবার
# সোহেল-মুক্তা ছিলেন শামীম ওসমানের দোসর
# ওসমানদের সাথে সখ্যতা থাকায় হাসপাতালে প্রভাব বিস্তার করে তারা
নারায়ণগঞ্জের ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের সত্যাতা পেয়ে ৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রধান সহকারী নাসরিন সুলতানা ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রানাকে বছর দেড়েক আগে বদলী করা হয়। তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ডাক্তার, নার্সদের রুঢ় আচরণেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বদলী হওয়ার বছর খানিক পরেই এই সপ্তাহে খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে এসে যোগদান করেন। তাছাড়া বদলী হওয়া নাসরিন সুলতানা মুক্তা এখানে আসার জন্য প্রতিনিয়ত দৌড়ঝাঁপ করে যাচ্ছে। তারা দুজনেই বিগত সময়ে শামীম ওসমান সহ ওসমান পরিবারের সাথে সখ্যতা রেখে নানা অপকর্ম করে গেছে।
একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানান, ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রাক্তন প্রধান সহকারী নাসরিন সুলতানা ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রানার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তার মাঝে ২০২৩ সনে ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের ৪০ জন আউট সোর্সিং নিয়োগের চাকুরী প্রার্থীদের থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ করে টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৩ সনের ৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকের পক্ষে সহকারী পরিচালক ডা. মুহাম্মদ মইনুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রধান সহকারী নাসরিন সুলতানা ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রানাকে দুর্নীতির অভিযোগে বদলির আদেশ দেয়া হয়। তাদের মধ্যে নাসরিন সুলতানাকে ঢাকার দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী করা হয়।
বর্তমানে তিনি সেখানে কর্মরাত থেকেও এখানে আসার জন্য টাকার বান্ডেল নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছে।এছাড়া তখন সোহেল রানাকে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে সোহেল দুর্নীতির দায়ে বদলীয় হয়েও স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে গিয়ে তদবির করে খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে এসে যোগদান করেছে। তিনি দুর্নীতি করেও সেই একই হাসপাতালে আবারও দর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তোলার জন্য এসেছে বলে অভিযোগ একাধিক ব্যক্তির।
অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের একাধিক ব্যক্তি জানান, সোহেল মুক্তা সিন্ডিকেট গড়ে তোলে ৩০ লাখ টাকা দিয়ে ওই হাসপাতালের পাশেই গ্যাষ্ট্রলিভ ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার কিনে নিয়ে তারা চালাচ্ছেন। খানপুর হাসপাতালের ডাক্তারদের জিম্মি করে রোগীদের বিভিন্ন ডিজিটাল পরীক্ষা হাসপাতালে না করে তাদের ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে করার জন্য বাধ্য করতেন। এই পরীক্ষা গুলোর মাধ্যমে নিজেরা মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিতেন।
অথচ একই পরীক্ষা সরকারি ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে অল্প খরচে করা যায়। কিন্তু সেখানে করতে দিতেন না। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে করোনা কালিন সময়ে এই সোহেল ও মুক্তা যোগসাজস করে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের থেকে অর্থ নিয়ে তাদের বাসায় গিয়ে করোনা টিকা দিতেন। যা অনিয়মের মাঝে পরে। এমনকি মুক্তা আজমেরী ওসমানের বাসায় গিয়ে তাদের পরিবারের সকলকে করোনা টিকা প্রদান করে তার কাছে আইফোনের মত দামী মোবাইল উপহার পান।
এদিকে ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি প্রভাব বিস্তার করে হাসপাতালের কোয়ার্টারে তার বোনকে থাকার ব্যবস্থা করে দিছেন। অথচ তার বোন ঢাকা মেডিকেলে চাকরী করেন। আর থাকেন নারায়ণগঞ্জের ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের কোয়র্টার বাসায়। এনিয়ে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ তা ছেড়ে দেয়ার কথা বললেও তিনি ছাড়েন নাই। এই ভাবে তাদের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগের শেষ নেই।
এবিষয়ে তখন ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রানা বলেন, আমার বদলী হয়েছে আমি তার চিঠি পেয়েছি আমার কর্মস্থলে যোগদান করেছি। কিন্তু আমার নামে কোন অভিযোগ নেই। আর যদি কেউ অভিযোগ করে বলে থাকে তাহলে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। হাসপাতালের কোন দুর্নীতির সাথে আমি জড়িত নই।