বুধবার   ১৬ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ১ ১৪৩১   ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬

৭ দিনে সন্ত্রাসী খোপা ইকবালের কামাই ২ কোটি টাকা!

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:৫৮ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

 

 

আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নেয়ার পরে যেন আলাদিনের চেরাগের সন্ধান পেয়েছেন ফতুল্লার কাশীপুরের যুবদল সন্ত্রাসী খোপা ইকবাল। আচমকা কপাল খুলে গেছে তার। ৫ আগষ্টের পরে মাত্র ৭ দিনেই কামাই করেছেন মাত্র ২ কোটি টাকা! পট পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে শুধুমাত্র অপহরণ, দখল ও বাড়িঘরে হামলা দিয়ে কামাই করেছেন ওই টাকা। মাদক ব্যবসা, জমি দখল ও আরও অনেক খাতে আগেই সিদ্ধহস্ত ছিলেন এই চতুর সন্ত্রাসী।

 

পুরো নাম  সৈকত হাসান ইকবাল হলেও এলাকায় খোপা ইকবাল নামেই সে পরিচিত। কাশীপুর ইউনিয়ন যুবদলে তার একটি পদও রয়েছে। ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাইফ উল্লাহ বাদললের কয়েকটি বাড়ির পরেই তার বাড়ি। 

 

স্থানীয়রা জানায়, ৫ আগষ্ট বিকাল থেকেই রঙ বদলে যেতে শুরু করে খোপা ইকবালের। সময় ও সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিশোর গ্যাং লিডার ডাকাত শহীদের সঙ্গে গড়েন জোট। রাতেই হামলা চালায় কাশীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফ উল্লাহ বাদলের বাড়িতে। পরে চেয়ারম্যান তাকে ডাকালে এসব থামাতে ও আর হামলা হবে না-এমন শর্তে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তবে চেয়ারম্যানের কাছ থেকে নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি সে। 

 

একই শর্তে চেয়ারম্যানের ছেলে সাজনের কাছ থেকেও ৪ লাখ টাকা নেয়। শুধু তাই নয়, সাজনের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলও নিয়ে নেয়। ডাকাত শহীদের সঙ্গে মিলে ছাত্রলীগ কর্মী তুষারের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা আদায় করে তাকে দেশের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পাঠিয়ে দিয়েছে। খিল মার্কেট মালিক সমিতির সিদ্দিকের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা, আওয়ামী ঘরনার ব্যবসায়ী বাবুলের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা, বাদল চেয়ারম্যানের ছেলে সাজনের ব্যবসায়িক কেয়ারটেকার কাশেমের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা আদায় করেছে। খিল মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে এক লাখ টাকা আদায় করে।

 

স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, জমি-জমার ব্যবসায় সে সাইফ উল্লাহ বাদলের পার্টনার। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নিয়মিত কমিশনের বিনিময়ে ব্যবসা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে মিলে একটি জমি মোটা অঙ্কের টাকায় বায়নাও করেছে। কিন্তু পট পরিবর্তনের সুযোগে সে টাকাও একাই মেরে দিয়েছে খোপা ইকবাল। পট পরিবর্তনের মাত্র ৭ দিনে মুক্তিপণ, চাঁদাবাজি ও দখল থেকেই তার কামাই হয়েছে দুই কোটি টাকার উপরে। শুধু তাই নয়, গোয়ালবন্দ সমাজ উন্নয়ন সংসদ ও খিলমার্কেট দোকান মালিক সমিতিও দখল করেছেন ক্ষমতার জোরে।

 

এদিকে খোপা ইকবালের এসব অপকর্মের কথা এখন কাশীপুরে মুখে মুখে ফিরছে। এ নিয়ে খোদ  দলের ভেতরেই চাপা ক্ষোভ দেয়া দিয়েছে। এসব নিয়ে বিএনপি ও যুবদলের নেতারা তাকে শাসন করলেও কারো কথাই শোনছে না ইকবাল। এমনকি সে এসব অপকর্মের জন্য তার ক্রাইম পার্টনার ডাকাত শহীদের উপর চাপিয়ে নিজেকে বাঁচাতে চেষ্টা করছে।

 

এসব অভিযোগ তার কানেও এসেছে উল্লেখ করে কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মঈনুল হোসেন রতন বলেন, বিএনপি কারো ব্যক্তিগত অপরাধের দায় নিবে না। আমাদের জেলা বিএনপির সভাপতি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন । সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

 

তবে এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।