বুধবার   ১৬ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ১ ১৪৩১   ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬

যোগদান করেই প্রভাব বিস্তারে মরিয়া সোহেল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:৩৮ পিএম, ৬ অক্টোবর ২০২৪ রোববার

 

 

নারায়ণগঞ্জের ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে যুক্ত থেকে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের অফিস সহাকরী সোহেল রানার বিরুদ্ধে। একই সাথে দুর্নীতির দায়ে তাকে গত বছর এই হাসপাতাল থেকে বদলী করা হয়।  কিন্তু এক বছর না যেতেই নিয়মের বাইরে গিয়ে কি করে সোহেল আবারও এত দ্রুত সময়ে খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে যোগদান করলেন তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লা গাবতলী এলাকার সন্তান হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে দাপট দেখাতে নেমে পড়েছে।

 

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানযায়, নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের অফিস সহকারি সোহেল রানা তার আগের জায়গা ফিরে পেতে আগ্রাসী ভুমিকায় নেমেছে। তার স্থানে দায়িত্বে থাকা সামসুন্নাহারকে সরিয়ে সেখানে সোহেলে বসার জন্য নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছে হাসপাতাল কতৃপক্ষকে। তার সাথে কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তারাও যোগ দিয়েছে। তাদের নামও প্রকাশ হতে যাচ্ছে। সুত্রমতে, সোহেল ইসদাইর গাবতলী এলাকার বাসিন্দা। তার ৪তলা বাড়ি রয়েছে এই এলাকায়।

 

এছাড়া সোহেলের মা ডিসি অফিসের  ৪র্থ শ্রেনীর র্কমচারী ছিলেন। একই সাথে শ্রমিক লীগের নেত্রী বলে পরিচয় দিতেন। তাছাড়া এই সোহেল আজমেরী ওসমানের সন্ত্রাসী নাসির সহ অন্যদের সাথে সখ্যতা রেখে তার কর্মস্থল সহ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে বেরাত। আজমেরী ওসমান এবং গডফাদার শামীম ওসমান যে ভাবে গুন্ডামি করে বেরাত সেই সন্ত্রাসী ভুমিকয়া নেমেছে ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের কর্মচারী সোহেল। তার স্থান দখল করে নেয়ার জন্য এসেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চাপ প্রয়োগ করছে। এছাড়া এলাকায় কিশোর গ্যাং বাহিনীর সাথে জরিত থাকার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। 

 

অপরদিকে এর আগে ৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রধান সহকারী নাসরিন সুলতানা ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রানাকে বছর দেরেক আগে দুর্নীতির অপরাধে বদলী করা হয়। তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ডাক্তার, নার্সদের রুঢ় আচরণেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা দুজনেই বিগত সময়ে শামীম ওসমান সহ ওসমান পরিবারের সাথে সখ্যতা রেখে নানা অপকর্ম করে গেছে। কিন্ত তখন পার পেয়ে গিয়ে সরকারি দলের বদনাম করেছে তারা। 

 

এখন তারা ওসমান দোসর হয়ে আওয়ামী লীগের আগ্রাসী ভুমিকয়া আসায় তাদের  নিয়ে ব্যপক আকারে সমালোচনা হচ্ছে। এছাড়া এই সোহেলের যন্ত্রনা এলাকার মানুষ পর্যন্ত অত্যাচারিত। আজমেরী ওসমানের গুন্ডাদের সাথে সখ্যতা রেখে নিজেকে আজমেরী ওসমানের লোক বলে পরিচয় দিত। এই সোহেল নারায়লগঞ্জের পোলা হওয়ায় হাসপাতালের অন্যান্য ডাক্তাররাও তাকে ভয় পান। অন্য হাসপাতালে গিয়ে প্রভাব বিস্তার করতে না পারায় সে ৩শ’ শয্যা হাসপাতাল ছারতে চান না। ঘুরে ফিরে এখানে মধুর আটার মত লেগে থাকেন সোহেল। অথ্যাৎ খানপুর ছারতে নারাজ। কেননা এখানে অপকর্ম করে নানা ভাবে টাকা কামাতে পারে। যা অন্য জায়গায় সম্ভব না। 

 

একাধিক বিশ্বস্ত সুত্র জানান, ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রাক্তন প্রধান সহকারী নাসরিন সুলতানা ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রানার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তার মাঝে ২০২৩ সনে ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের ৪০ জন আউট সোর্সিং নিয়োগের চাকুরী প্রার্থীদের থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ করে টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। 

 

সোহেল মুক্তা সিন্ডিকেট গড়ে তোলে ৩০ লাখ টাকা দিয়ে ওই হাসপাতালের পাশেই গ্যাষ্ট্রলিভ ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার কিনে নিয়ে তারা চালাচ্ছেন। খানপুর হাসপাতালের ডাক্তারদের জিম্মি করে রোগীদের বিভিন্ন ডিজিটাল পরীক্ষা হাসপাতালে না করে তাদের ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে করার জন্য বাধ্য করতেন।

 

উল্লেখ্য, ২০২৩ সনের ৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকের পক্ষে সহকারী পরিচালক ডা. মুহাম্মদ মইনুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রধান সহকারী নাসরিন সুলতানা ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রানাকে দুর্নীতির অভিযোগে বদলির আদেশ দেয়া হয়। তাদের মধ্যে নাসরিন সুলতানাকে ঢাকার দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে কর্মরাত থেকেও এখানে আসার জন্য টাকার বান্ডিল নিয়ে দৌরঝাপ করছে।

 

এছাড়া তখন সোহেল রানাকে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে সোহেল দুর্নীতির দায়ে বদলীয় হয়েও স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে গিয়ে তদ্বীর করে খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে এসে যোগদান করেছে। তিনি দুর্নীতি করেও সেই একই হাসপাতালে আবারও দর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তোলার জন্য এসেছে বলে অভিযোগ একাধিক ব্যক্তির। মুক্তা আজমেরী ওসমানের বাসায় গিয়ে তাদের পরিবারের সকলকে করোনা টিকা প্রদান করে তার কাছে আইফোনের মত দামী মোবাইল উপহার পান। এই সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন সোহেল।