মণ্ডপে মণ্ডপে বিদায়ের সুর, আজ বিজয়া দশমী
যুগের চিন্তা রিপোর্ট :
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১১:৫১ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০২৪ রোববার
সারা বছর ধরে যে উৎসবের জন্য অপেক্ষায় থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা, তার বিদায় ঘণ্টা বাজে নবমী নিশিতে। আর তাই নবমী নিশিকে ধরে রাখার আকুতিতে ভক্ত মনে বাজে একটাই সুর- ‘ওরে নবমী-নিশি, না হইও রে অবসান’। কিন্তু সময় সে তো বহমান। কোনো আকুতি-মিনতিতেই সে বদলায় না। আজ বিজয়া দশমীতে বিদায় নিবেন মা দুর্গা। শেষবেলার নবমীতে আনন্দটুকু পুরোপুরি উপভোগ করতে ব্যস্ত ছিলেন উৎসব প্রিয় বাঙালি। মন্ডপে মন্ডপে দেখা যায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভীড়।
গত বুধবার (৯ অক্টেবার) ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবছর দেবী দুর্গার আগমন করেছে দোলায়। ওই পালকি বা দোলায় দেবীর আগমন বা গমন হলে ফলাফল হয় মড়ক। যা শুভ ইঙ্গিত নয়। এছাড়াও দেবী স্বর্গে গমন করবেন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। শাস্ত্র মতে দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল ছত্রভঙ্গ হয়। এটি যুদ্ধ, বিগ্রহ, আশান্তি , বিপ্লবের ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। টানা পাঁচ দিনের আনন্দ উৎসবের পর আজ রোববার বিজয়া দশমীর দিন দেবী বিসর্জনের মাধ্যমে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
তবে গতকাল নবমী থেকেই দেবীর বন্দনায় প্রতিটি পূজামন্ডপে ছিল কেবলই বিষাদের ছায়া। ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টাসহ বিভিন্ন বাদ্যে, আলোকিত করা ধূপ আরতি ও দেবীর পূজা-অর্চনায় কেবলই ছিল দেবী দূর্গার বিদায়ের সুর। প্রথা অনুসারে গতকাল নবমীতে বেশ কয়েকটি মন্দিরে হয়েছে নবমীর বিশেষ পূজা। পূজা শুরুর সময় যেমন সংকল্প, তেমনই পূজা শেষের প্রক্রিয়া দক্ষিণান্ত। নানা উপাচারে দেবীর আরাধনা।
মধুর সুর আর ভক্তদের কলকাকলিতে বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের রং। পাশাপাশি গতকাল নবমীতে পূজার মন্ডপ গুলোতে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। বিশেষ করে নগরীর মিশন পাড়ার রাম কৃষ্ণ মন্দির, গলাচিপা, নন্দিপাড়ার আখড়া এলাকার প্রতিটি মন্ডপ, নিতাইগঞ্জ এলাকার কয়েকটি মন্ডপে ভিড় ছিল অনেক। সিদ্ধিরগঞ্জের ২নং ঢাকেশ্বরীসহ আশেপাশের এলাকার মন্ডপে মন্ডপে দলবেঁধে ঘুরে বেড়িয়েছেন নানা বয়সি মানুষ। সন্ধ্যায় মন্ডপে মন্ডপে অনুষ্ঠিত হয়েছে আরতী প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দর্শনার্থীরা বলছেন, এবার মনে হচ্ছে যে পূজো এই এলো আবার এই চলে গেলো। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পূজার আনুষ্ঠানিকতা একদিন কম হয়েছে। সাধারণত সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত প্রতিদিনই সকাল থেকে শুরু হয় পূজা। তবে এবারই প্রথম তিথির কারণে অষ্টমী ও নবমী আলাদা দিনে না হয়ে একদিনেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূজার আনুষ্ঠানিকতা যতই কম হোক না কেন, ভক্তদের মনে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস ও ভক্তি অটুট রয়েছে। এন. হুসেইন রনী /জেসি