মঙ্গলবার   ২২ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ৭ ১৪৩১   ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

ছাত্রদলের পর আলোচনায় যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১০:৪৪ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৪ শনিবার

দীর্ঘ ১৭ বছর পর মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ পেয়েছে বিএনপি। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে চায় শীর্ষ নেতৃত্ব। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দেড় মাস পর এবার সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ফিরছে দলটি। এ লক্ষ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও মহানগর বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের কমিটিগুলোর মধ্যে যেগুলো মেয়াদউত্তীর্ণ অবস্থায় রয়েছে সেগুলোর মধ্যে কিছুটা বিলুপ্ত ও কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এদিকে প্রথম দফায় যেসব কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিগত আন্দোলনে নিস্কিয়তা, সাংগঠনিক অদক্ষতা ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পেয়েছে সেসব কমিটি ভেঙে দেওয়া হবে বা সেখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটির মাধ্যমে রদ-বদল আসতে পারে।

 

ইতোমধ্যে তিনটি জেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এরই মাঝে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর, গাজীপুর মহানগরসহ আরও কয়েকটি বিলুপ্ত বা পূর্ণাঙ্গ করার আভাস পাওয়া গেছে। এদিকে গত (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। তা ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পূর্বেই জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির নতুনভাবে গঠন করা হয়। সেই সুবাদে ধারনা করা হচ্ছে জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটিতে আসতে পারে রদ-বদল।একই সাথে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদল কমিটি গঠনের দেড় বছরে ও ইউনিট কমিটিসহ তাদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি। ইতিমধ্যে এই দুই অঙ্গসংগঠনের কমিটি নিয়ে ও রয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। 

 

মহানগর কেন্দ্রিক রাজনীতিতে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা মন থেকে এতত্রিত না থাকলে ও কোন রকমের একসাথে আছে। কিন্তু জেলা যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি হওয়ার দেড় বছরে এখনো এক টেবিলে বসতে দেখা যায়নি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে। একইভাবে জেলা যুবদলের কমিটি দেড় বছরের বেশি হলে ও আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব একই থানার হওয়ায় তাদের মাঝে বেঁধে আছে অন্তকোন্দাল। যে পরিপ্রেক্ষিতে  হচ্ছে না ইউনিট কমিটি থেকে শুরু করে কমিটি পূর্ণাঙ্গ সেই হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎই চুপসে পরেছে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। 

 

এদিকে গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে বেপরোয়া হয়ে উঠে বিএনপির নেতাকর্মীরা। একই সাথে পদ-পদবী না নিয়েই অনেকে বিএনপির নতুন নেতা সেঁজে দখলে নিতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের ফেলে যাওয়া বিভিন্ন সেক্টর। ইতিমধ্যে হাট-ঘাট-গার্মেন্টস নিয়ে আলোচনায় মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল আলম সজল, একই সাথে মহানগর যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল এই দুই সংগঠনের সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ইপিজেডের নানা বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হতে দেখা গেছে। তা ছাড়া সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সজল প্রধান বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জ ৮নং ওয়ার্ডে প্রভাব করছে। তা ছাড়া জেলা যুবদলের আহ্বায়ক নিয়ন্ত্রণ করছেন কাশীপুর ইউনিয়ন সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন এনায়েতনগর, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খাইরুল ইসলাম সজীব বাবা-ছেলে মিলে তছনছ করছে সোনারগাঁ উপজেলা। 

 

একই রূপে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শাখাওয়াত হোসেন রানা তার নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন পরিবহন সেক্টর। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুব হোসেন ভূলতা-দাউদপুর এলাকায় বিভিন্ন্ স্থাপনা দখলে রেখেছেন। সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সাল্লূ কাঁচপুর বিসিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেক্টরে ছুরি ঘুরিয়ে যাচ্ছেন। সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিক রূপগঞ্জে দিপু ভূঁইয়ার অনুসারী যে হিসেবে তার ডান হাত জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের নির্দেশনায় রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার ও দখল বাণিজ্যে অবহৃত রেখেছে। এদের দখলকৃত সব কিছুর লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের হাতে ও রয়েছে। তা ছাড়া বর্তমানে দখলে ব্যস্ত থাকায় সাংগঠনিকভাবে অনেকটাই দূর্বল হয়ে পরেছে এই দুই সংগঠনের নেতাকর্মীরা। যে পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে ছাত্রদলের কমিটি ভাঙ্গার পরপরই এই দুই অঙ্গসংগঠনের কমিটি নিয়ে আলোচনা উড়ছে।

 


সূত্র বলছে, গত ২০২৩ সালের (২৯ আগষ্ট) জেলা ও মহানগর যুবদলের ৩ সদস্য বিশিষ্ট করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করা হলে ও নেই সংগঠনে কোন ঐক্য। মহানগর যুবদলে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এক সাথে থাকলে ও ভিতরগতভাবে কোন্দাল রয়েছে। তা ছাড়া সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এখনো মন থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে মন থেকে মেনে নিতে না পাড়ায় তিনি বেশিরভাগ সময় আসেন না কোন পোগ্রামে। তা ছাড়া জেলা যুবদল ৩ ভাগে বিভক্ত হয়ে আছেন আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক এক বলয়, সদস্য সচিব মশিউর রহমান এক বলয়, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খাইরুল ইসলাম সজীব এক বলয়। তারা কেউ এক সাথে জেলা যুবদলের এক ব্যানারে পোগ্রাম করেন না।

 

তা ছাড়া এখনো কোন প্রকারের ইউনিট কমিটিসহ নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি তারা। ২০২৩ সালের (২৯ আগষ্ট) জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ সদস্য বিশিষ্ট করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা হলে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলে ঐক্য দেখা গেলে ও কমিটি জুড়েই রয়েছে নানা বিতর্ক তা ছাড়া গত ৫ আগষ্টের পর এই কমিটি নিয়ে বহু অভিযোগ রয়েছে বলে ও শোনা গেছে। তা ছাড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবকে কেউ মেনে নেয়নি যাকে ঘিরে তিনি আলাদা ও একই সাথে সদস্য সচিব ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক একদিকে যাকে ঘিরে নেউ কোন ঐক্য যার কারণে হয়নি কোন ইউনিট কমিটি এমনকি নিজেদের কমিটি  করেত পারেনি পূর্ণাঙ্গ। বর্তমানে এই দুই সংগঠনের নেতাকর্মীরা কেউ এখনো এক টেবিলে বসে সাংগঠনিক কোন কর্মকাণ্ডে নেই কেউ। যে সুবাদে বহু সাবেক নেতারা কোন কমিটি থাকায় নিজ নিজ ওয়ার্ড, ইউনিয়ন বা থানায় সাবেক পদ বিক্রি করে দখল বাণিজ্যে চলমান। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বর্তমানে পূনরায় কমিটি গঠন বা এই কমিটিতে রদবদলের আশঙ্কা পাওয়া যাচেছ। যা চলতি পাশে বা চলতি বছরেই ভেঙে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।