মঙ্গলবার   ২২ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ৭ ১৪৩১   ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

সংস্কারের নামে অফুরন্ত সময় নিলে জনপ্রিয়তা হারাবেন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:৩২ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০২৪ রোববার

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি পারেন নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন। জনগণ ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের নেতা নির্বাচিত করবেন এবং তারাই দেশ পরিচালনা করবেন। সংস্কারের নামে যদি অফুরন্ত সময় নিয়ে আপনারা কাজ করেন তাহলে জনপ্রিয়তা হারাবেন। জনগণের সমর্থন হারাবেন। গতকাল শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে নাসিক ১০নং ওয়ার্ড বিএনপি আয়োজিত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন তিনি।


গিয়াসউদ্দিন আরো বলেন, সম্মান নিয়ে যদি যেতে চান তাহলে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার শেষ করে জনগণকে ভোটের অধিকার দিয়ে আপনারা ক্ষমতা থেকে চলে যান। তবেই সম্মানের সাথে আপনারা যেতে পারবেন। স্বৈরশাসকের মতো লোভ যদি আপনাদের গ্রাস করে যে, আপনারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন, তবে হয়তো আপনারা কিছু দিন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন, কিন্তু সম্মান নিয়ে যেতে পারবেন না। আপনাদের সম্মানের কথা ভাবতে হবে। আর যদি সম্মানের কথা ভাবেন তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আপনাকে নির্বাচন দিতে হবে। যেই আন্দোলন সংগ্রামের কারণে স্বৈরাচার দেশ থেকে পালিয়ে গেছে, জনগণের যেই আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন আপনারা বাস্তবায়ন করবেন সেই দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের আছে। আমাদের অকুন্ঠ সমর্থন আপনাদের প্রতি আছে। 

 

তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান বিদেশ থেকে আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আপনাদেরকে কিন্তু ভালোভাবে সুযোগ দিচ্ছেন। আপনারা ক্ষমতায় থেকে ভালো কাজগুলো করেন। আপনাদের বার বার উনি অনুরোধ করছেন, উনি দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। তার এই সুযোগ আপনারা গ্রহণ করবেন।
 

বক্তব্যের এক পর্যায়ে গিয়াস উদ্দিন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এক শ্রেণীর সাংবাদিক আজ রাজনীতিবিদ ও গণমানুষের দুশমন হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বৈরশাসক এতো বড় স্বৈরশাসক হতো না যদি সাংবাদিকরা ওই সরকারকে পৃষ্ঠপোষকতা না দিতো। অন্যায়ের বিরুদ্ধে যদি তারা লিখতো, রুখে দাঁড়াতো এবং অন্যায়কারীদের ডাকে যদি তারা সাড়া না দিতো। তাহলে শেখ হাসিনা এতো বড় সন্ত্রাসী, গড়ফাদার এবং এতো বড় স্বৈরাচার হতে পারতো না। সেই সাংবাদিকরাও শেখ হাসিনার পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে পরাজিত হয়েছে। পালিয়ে যাচ্ছে এবং যাওয়ার সময় ধরা পড়ছে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী এবং হত্যা মামলা হচ্ছে। এরা এখনও জনগনের বিপক্ষে। তারা কৌশল করছে বিভিন্ন ভাবে লিখনির মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে কিভাবে ব্যার্থ করা যায়। তাদের কি কি দোষ খুঁজে পাওয়া যায়। অন্তর্র্বতী সরকারকে লোভ লালসা দেখিয়ে কিভাবে তাদের সময়কে বৃদ্ধি করে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় সেই চেষ্টা করছে তারা। দ্রুত যাতে গণতন্ত্র না আসতে পারে সেই জন্য তারা বিভিন্ন রকম উস্কানি দিচ্ছে তাদের লিখনির মাধ্যমে। 

 

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি নারায়ণগঞ্জের কিছু সাংবাদিকদের সমালোচনা করে বলেন, এখানে অনেক ভালো ভালো সাংবাদিক রয়েছে। যাদের নিয়ে আমরা বুক ফুলিয়ে কথা বলতে পারি। অনেক ভালো ভালো সাংবাদিক এই নারায়ণগঞ্জে সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি কিছু কুলাঙ্গার সাংবাদিকও এই নারায়ণগঞ্জে তৈরী হয়েছে। যাদেরকে অনেকে হলুদ সাংবাদিক বলে। তারা এই স্বৈরাচারের, গডফাদারদের পাশে ছিলো। এবং সেই গডফাদারকে মদদ দিতো। এমনকি যখন চূড়ান্ত আন্দোলন চলছিলো সেই দিন সাংবাদিক রাইফেল হাতে নিয়ে গুলি করতে করতে সন্ত্রাসীদের সাথে ছিলো। এরাও দাবী করে সাংবাদিক। এরা এখন ষড়যন্ত্র করছে জনগণের বিজয়কে যাতে নস্যাৎ করতে পারে। কিছু সাংবাদিক এখনো ওই গডফাদারের পৃষ্ঠপোষকতায় স্থানীয় অনেক পত্রিকায় আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করছে। 

গিয়াসউদ্দিন আরও বলেন, সাংবাদিক দুই ধরনের। ভালো এবং মন্দ। আমি ভালো সাংবাদিকের প্রশংসা করছি এবং মন্দ সাংবাদিককে ঘৃণা করছি। নারায়ণগঞ্জের মতো ছোট জেলায় এতো পত্রিকা যা পৃথিবীর আর কোথাও নাই। আমরা যদি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারি তাহলে এইসব হলুদ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করে টিকে থাকবো। যদি একটি মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা হয় তবে আইন আদালতের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। 

 

এসময় গিয়াস উদ্দিন আরো বলেন, আমি কমিটি গঠন করে দিতেছি। আমার একটা নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে কোন কিছু করলে আমি ছাড় দিবো না। একটা সংবাদ যদি মিথ্যা লেখা হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা মামলা করবো। আমরা অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে করবো। কোন ভালো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে করবো না।


গিয়াসউদ্দিন আরও বলেন, আমাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। পলাতক জীবন যাপন করেছি। ৫ আগষ্ট জনগণের আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছে। তারা তিন তিনটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে। দিনের ভোট রাতে করেছে। জবরদখল করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। সেই শেখ হাসিনা গর্ব করে বলত, শেখের বেটি পালায় না। এত দাম্ভিকতা, সে কেন নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পালিয়ে গেল।

 

নাসিক ১০নং ওর্য়াড বিএনপির সভাপতি আনিস সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জামাল প্রধানের পরিচালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম,এ,হালিম জুয়েল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আব্দুল আল মামুন, মোস্তফা কামাল, ডি,এইচ,বাবুল, এস,এম, আসলাম, রওশন আলী, মাসুদুজ্জামান মন্টু, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক আবুল হোসেন, কামরুল হাসান শরীফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মহানগর যুবদলের সাবেক আহবায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তুু, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সাগর প্রধান, ১০নং ওর্য়াড বিএনপির সহ-সভাপতি মফিজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক জসিম মিয়া খোরশেদ আলম, আব্দুল রাজ্জাক, রেজাউল করিম, তাজুল ইসলাম, মামুন, মানিক, জুয়েল, সুহিন ও ৩নং ওর্য়াড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ভূইয়া প্রমূখ।