মঙ্গলবার   ২২ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ৭ ১৪৩১   ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অনুপ্রবেশকারীদের হর্তাকর্তা মান্নান

এম মাহমুদ :

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:৩৭ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০২৪ রোববার

সোনারগাঁ উপজেলায় চাঁদাবাজ বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারী লুটেনাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে তাদের হর্তাকর্তা এখন মান্নান। কেননা সোনারগাঁয়ে নয়া পরিবহন ও নৌ চাঁদাবাজদের আশ্রয় প্রশয় দিয়ে বেপরোয়া করে তুলার বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও তার দেনদরবারের কমতি হয় না। এছাড়াও লুটপাটের সাথে সম্পৃক্ত নেতাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিলেও সন্ত্রাস,নৈরাজ্য প্রতিবাদ সভা করলেও সেখানে লুটপাটকারীদের উদ্দেশ্য করে বক্তব্য রাখেন না। এছাড়াও আওয়ামীলীগ,জাতীয় পার্টি থেকে ভোল পাল্টে বিএনপি সাঁজার প্রচেষ্টা করলেও তাদেরকেও আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন মান্নান। যার কারণে সোনারগাঁয়ে চাঁদাবাজ,অনুপ্রবেশকারী,লুটেরাদের হর্তাকর্তা বলা হচ্ছে মান্নানকে।


সূত্র বলছে, সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া এলাকায় আজহারুল ইসলাম মান্নানের আস্থাভাজন আতাউর রহমান জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে জড়িয়ে গেলেও পুনরায় মান্নানে আর্শীবাদের মোগরাপাড়া ইউপি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান। এছাড়াও তার পুত্র শাফিন উপজেলা ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও এখন মান্নান পুত্র সজীবের আশকারায় উপজেলা ছাত্রদল নেতা হিসেবে নিজেকে জাহির করার প্রচেষ্টা করছেন। কিন্তু গত ৫আগস্টের সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুর নিয়ন্ত্রিত পরিবহন সেক্টার, ফুটপাত, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি ও মিল ইন্ডাষ্ট্রির নিয়ন্ত্রণ এসকল কিছুই আতাউরের নিয়ন্ত্রণে চলে যান ৫আগস্টের পর। পরবর্তীতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর আতাউর রহমানকে চাঁদাবাজির অভিযোগে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করে। 

 

পরবর্তীতে আতাউরকে জামিন করাতে উঠে পরে লাগেন মান্নান পরবর্তীতে জামিন করতে সক্ষম হলে আতাউর যে সকল মহল থেকে চাঁদাবাজি করতেন সেখানকার লোকালয়ে গিয়ে তাদের স্বীকাররক্তি নেন তিনি চাঁদাবাজির সাথে সম্পৃক্ত নন এমনটা। কিন্তু গত ৫আগস্টের পর আতাউর রহমান যতটা বেপরোয়া হয়েছেন তার ছেলে শাফিনও সমতালে বেপরোয়া হয়েছেন মান্নান ও পুত্র সজীবের আশকারায়। বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরবর্তীকে ধাপের নির্বাচনে সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টির সাংসদ হিসেবে লিয়াকত হোসেন খোকা সোনারগাঁয়ে শাসনতন্ত্র পরিচালনা করলে এই সাবেক সংসদ খোকার হাত ধরেই জাতীয় পার্টিতে যোগদেন বর্তমান সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম বিডিআর ও তার পুত্র জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন। 

 

অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের চাঁকা সচল রাখতে জাতীয় পার্টি যোগ দিয়েই বাবা-ছেলে আবারও পিরোজপুরে শাসনতন্ত্র চালিয়ে যেতে থাকে। সেই সাথে রফিকুল ইসলাম ও তার পুত্র শাহাদাতকেও সাবেক সাংসদ খোকার আস্থাভাজন হিসেবে কাজ করতে থাকে যার ফলাফল হিসেবে রফিকুল ইসলামকে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সি.সহ-সভাপতিও করেছিলেন সাবেক সাংসদ খোকা। কিন্তু ২০২২ সাল থেকেই বিএনপি জোড়ালো আন্দোলন সংগ্রাম ও সুসময়ের একটি হাওয়া প্রবাহমান হতে থাকলে হঠাৎ করে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হতে থাকেন রফিকুল ইসলাম ও তার পুত্র শাহাদাত। রফিকুল ইসলাম বিএনপিতে আবারও ঠাঁই পেতে আজহারুল ইসলাম মান্নান উপজেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ায় তার হাত ধরেই বিএনপিতে আবারও পরিচয় গ্রহণ করেন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি। 

 

অপরদিকে পুত্র শাহাদাতও জাতীয় পার্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচির মশিউর রহমান রনির সাথে যুবদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করেন। যার কারণে সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের ব্যানারে এখন সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করছেন। কিন্তু গত ৫আগস্টের পর পিরোজপুর ইউপিতে আবারও রফিকুল ইসলাম ও তার পুত্র শাহাদাত প্রভাব বিস্তার করছেন আজহারুল ইসলাম মান্নানের ছত্রছায়ায়। এছাড়া গত ৫আগস্টের পর সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের শেল্টার পেয়ে আওয়ামীলীগের আঁতাত কারী সন্ত্রাসী বাহিনী ও ডাকাত বাহিনী দ্বারা ব্যাপক লুটপাট কায়েম করে জামপুর জুড়ে। লুটপাটের বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, জামপুরের বস্তল বাজারের ডাক্তার বসু নামে এই হিন্দু লোকের ঔষধের দোকানে গোলজারের নির্দেশে তার ডাকাত বাহিনী মামুন,মনির,আলমগীর লুটপাট করে। এছাড়াও জামপুরের কলতাপাড়ার কাইলাটেক গ্রামের হাবিবুল্লাহ মিয়ার দুটি গরু ছিনিয়ে নিয়ে মাংস বিক্রি করে ফেলেন তার ডাকাত বাহিনীর সদস্য শাহপরান ও কামরুল। এছাড়াও দিনের আলোতে জামপুরের হোন্ডা বাহিনী দিয়ে ভীতি প্রদর্শন করে হামলা, লুটপাট,ভাঙচুরে লেলিয়ে দেন। 

 

অপরদিকে সোনারগাঁয়ে শম্ভুপুরা ইউপির চরকিশোরগঞ্জ এলাকা মুন্সিগঞ্জ জেলার সাথে গা ঘেষা এবং এলাকাটি সম্পূর্ণ নদী বিস্তৃত। যার কারণে সেখানে বছরজুড়েই চলে নৌ চাঁদাবাজি ও অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। কিন্তু ওই এলাকার সম্্রাট ছিলেন এবং এই অপরাধ জগৎতের নিয়ন্ত্রক ছিলেন প্রয়াত নাসির মেম্বার। পরবর্তীতে সে মৃত্যুবরণ করলে তার স্থানে আসেন পুত্র রাসেল। কেননা নাসির মেম্বার পুরো পরিবার ছিলেন আওয়ামীলীগ এবং সাবেক এমপি কায়সারের একান্ত ঘনিষ্ঠ। কিন্তু গত ৫ আগস্টে আওয়ামীলীগের পতনের পর চরকিশোরগঞ্জ এলাকায় নিয়ন্ত্রণে আসেন সজীব সেখানে নিয়োগ দেন নাসির মেম্বারের ভাই খোকনকে বিএনপিতে ঠাঁই দিয়ে। কিন্তু সে গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী কায়সারকে ফুলের মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। সোনারগাঁজুড়ে এসকল চাঁদাবাজ,অনুপ্রবেশকারী,লুটেরাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে তাদের হর্তাকর্তা সেজেছেন মান্নান।