পাগলা হামিদের রিমান্ডে এসআই কামালের কারিশমা !
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১০:০০ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৪ সোমবার
দুই বছর আগেও তিনি ফতুল্লা মডেল থানায় কর্মরত ছিলেন। এরপর হাজীগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতেও দায়িত্ব পালন করেন। উল্লেখিত সময়ে ফতুল্লার বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের সাথে তিনি সখ্যতা গড়ে তুলেছিলেন। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার উপর হামলা মামলায় ফতুল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী পাগলা হামিদ যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। ঐ মামলায় আদালত হামিদকে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের দায়িত্বপান এসআই কামাল। পূর্ব সখ্যতার জের ধরে থানায় হামিদকে রিমান্ডের নামে এসআই কামাল জামাই আদর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফতুল্লা মডেল থানায় পুনরায় যোগদান করে তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এমন অভিযোগও সংশ্লিষ্ট সূত্রের ।
বিগত আওয়ামীলীগ সরকারেরর সময়ে অল্প কিছু পুলিশ সদস্য বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িত ছিলো। তাদের অপকর্মের মাসুল পুরো পুলিশ বাহিনীকে গুনতে হয়েছে। এমনই একজন বিতর্কিক পুলিশ অফিসার এসআই কামাল। ফতুল্লা মডেল থানায় দুই বছর আগে তিনি কর্মরত ছিলেন। সেই সময় ফতুল্লা বিভিন্ন অপরাধীর সাথে ছিলো তার সখ্যতা। ফতুল্লা থেকে বদলী জনিত কারনে অনত্র যোগদান করেছিলেন তিনি। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার গনঅভ্যূত্থানের পর সারা দেশে পুলিশ প্রশাসনে রদ বদল হয়। আর এই সুযোগে কামাল পুনরায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পোষ্টিং নিয়ে আসে। যোগদানের পর পুনরায় তিনি ফতুল্লার অপরাধীদের সাথে মিশে গেছেন।
ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় গড ফাদার শামীম ওসমানের ভাতিজা ভয়ংকর সন্ত্রাসী আজমেরী ওসমানের সহযোগী পাগলা হামিদকে গ্রেফতার করে যৌথ বাহিনী। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে আদালত তাকে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের দায়িত্ব পান এসআই কামাল। থানায় রিমান্ডে এনে পাগলা হামিদের কাছ থেকে তথ্য আদায়ের কথা থাকলেও এসআই কামাল তাকে জামাই আদর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হামিদের কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্যই আদায় করতে পারেনি কামাল। চাঁদনী হাউজিং এলাকার লোকজন জানায়, ফতুল্লায় এসআই কামাল থাকাবস্থায় খুব ভালো সখ্যতা গড়ে তুলেছিলেন হামিদের সাথে। হামিদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় উৎকোচও পেতেনে তিনি। তাই রিমান্ডে হামিদকে তেমন কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করেননি তিনি। রিমান্ডের নামে প্রহসন করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অপর একটি সূত্র জানায়, ফতুল্লার লামা পাড়ার সন্ত্রাসী চুন্নু, তোফাজ্জল, মোজাফফর ও তার দুই ভাতিজা জিহাদ ওরফে নূর আলম, জিসান ওরফে গোলাম রহমানের সাথেও এসআই কামালের সখ্যতা রয়েছে। এবার ফতুল্লায় পোষ্টিং নিয়ে পুনরায় এই সন্ত্রাসী গ্রুপের সাথে কামাল গড়ে তুলেছেন দহরম মহরম সখ্যতা। সম্প্রতি একটি বিরোধপূর্ন সম্পত্তি দখল করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন চুন্নু ও তোফাজ্জলের সহযোগীরা। তবে এসআই কামাল ফতুল্লায় যোগদানের পর চুন্নু ও তোফাজ্জল থানায় আদালতে মামলা চলা সেই জমির দখল নিতে থানায় একটি ভুয়া অভিযোগ করেন। আর এই অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব নেন এসআই কামাল। গত কয়েকদিন আগে চুন্নু ও তোফাজ্জলের সহযোগীদের হয়ে সেই জমির আশপাশের নিরীহ লোকজনদের উপর নানা রকম অত্যাচার শুরু করেন এসআই কামাল।
উল্লেখ্য,গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরপর ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের লামাপাড়া এলাকায় সিনিয়র সাংবাদিক ও নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় দৈনিক যুগের চিন্তার সম্পাদক মোরছালীন বাবলার নিজস্ব জমিতে বালু ফেলে ভরাট করে দখলের পাঁয়তারা শুরু করে সন্ত্রাসী তোফাজ্জল, মোজাফফর বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে তারা সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের কুখ্যাত সন্ত্রাসী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামের আশ্রয়ে ছিল। এখন ভোল পাল্টে বিএনপি নেতা পরিচয়ে জমিটি দখল শুরু করে। এর আগে বেশ কয়েকবার দখল করতে গেলেও প্রশাসনের কারণে পারেনি। জায়গাটিতে বারবার মালিকানার সাইনবোর্ড লাগালেও তোফাজ্জল, মোজাফফর বাহিনীর লোকজন তা খুলে ফেলে।
সূত্র আরো জানায়, মোজাফফর বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন মানুষের জমি দখল করার বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, তারা সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও তার অনুসারী সন্ত্রাসী শাহ নিজামের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। শামীম ওসমান ও শাহ নিজামের নাম ভাঙিয়ে এলাকার অসহায় মানুষের ওপর নানান অত্যাচার করত। শুধু তাই নয় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে গেলে চালানো হতো নির্যাতন। পূর্বের রাজনৈতিক পরিচয় আওয়ামী লীগের থাকলেও সরকার পতনের পরপরই এক দিনের মধ্যে ভোল পাল্টে বিএনপির নেতা পরিচয় দিতে থাকেন। আবারও শুরু করেন মানুষের প্রতি জুলুম অত্যাচার। এই সন্ত্রাসী গ্রপকে ফতুল্লা মডেল থানায় যোগদানের পরই শেল্টার দিতে শুরু করেছে এসআই কামাল।