শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ১৩ ১৪৩১   ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

গিয়াস ঠেকানো মিশনে মাঠে অপপ্রচারকারীরা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:১৬ পিএম, ৬ নভেম্বর ২০২৪ বুধবার

নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একজন প্রবীন নেতা হিসেবে সুপরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। সত্যের পক্ষে অনড় অবিচল থাকায় বারবারই একটি চক্র বিভিন্ন রূপে গিয়াস ঠেকাও মিশনে উঠে পরে লেগেছিলেন। বিগত দিনে স্বৈরাচার সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ সদস্য শামীম ওসমান প্রকাশ্যে তার বিরোধীতা করেছেন। বিভিন্নভাবে তাকে হেয় করতে নানা অপপ্রচার চালিয়েছেন। কিন্তু দিন শেষে তারাই সকলেই ব্যর্থ হয়ে পরেন। পরবর্তীতে পট পরিবর্তনের পর বিগত দিনে সেই ওসমানদের পদ লেহনকারী ব্যক্তিরা বিএনপির ট্যাগ লাগিয়ে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে ব্যস্ত হয়ে পরেছে। 

 

এদিকে চাঁদাবাজ, লুটপাটকারী, দখলবাজ, ব্যবসায়ী সংগঠনে ওসমান দালালরা বহাল এবং ওসমানদের দোসরদের বিপক্ষে বিগত দিনে যেমন শক্ত অবস্থানে ছিলেন তিনি বর্তমানে ও সেই অবস্থানেই রয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে লুটপাটকারী, দখলবাজ পদে থাকা বহু বিএনপি নেতাকর্মীদের গত ৫ আগষ্টের পর শোকজ ও বহিস্কার করেছিলেন এই সভাপতি। পটপরিবর্তনের পর থেকে একমাত্র জেলা বিএনপির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন আগামী নির্বাচনী ভাবনা মাথায় রেখে সম্ভাব্য নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।  আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) এলাকায় একের পর এক সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করছেন।

 

এতে করে আগামী নির্বাচনের ভোটারদের মন জয় করার কাজটি তিনিই নারায়ণগঞ্জে সর্বপ্রথম করে যাচ্ছে। একদিকে তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে সাংগঠনিকভাবে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত গড়ছেন অপরদিকে এই নির্বাচনী এলাকায় জনগণের সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হচ্ছেন। আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ব্যাপী লাগাতার রোডম্যাপ অনুযায়ী এই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড আগামী নির্বাচনে তাকে অন্য সম্ভাব্য যে কোন মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে অনেক এগিয়ে রেখেছে। এই ধারা অব্যাহত রাখলে আগামী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিকভাবে বিএনপিতে তাঁর সাথে সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা যোজন যোজন পিছিয়ে থাকবে। যাকে ঘিরে গিয়াস ঠেকাও মিশনে একদিন আলোচনায় তুলছেন বিএনপির সাবেক নেতা শাহ আলমের নাম আবার আলোচনায় তুলছেন কাশেমীর নাম। কিন্তু সব কিছুর উর্ধ্বে হাই ভোল্ডেজ নেতা হিসেবে গিয়াসই যোগ্য।
 


জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এবং অন্তর্র্বতীকালীন সরকার দায়িত্ব¡ গ্রহণের পর বিএনপির জেলা সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের বেশ কয়েকটি প্রস্তাব জনসমর্থন অর্জন করেছে। বিশেষ করে ফতুল্লা এলাকার ৫টি ইউনিয়নকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভূক্তি করার যে দাবি তিনি তুলেছেন সেটি বিশেষ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এছাড়া ফতুল্লার বিস্তীর্ণ এলাকা বছরের পর বছর জলাবদ্ধতায় যে দুর্ভোগ জনসাধারণকে দিচ্ছে তা থেকে পরিত্রাণের উদ্যোগও তিনি নিয়েছেন। জনগণের দুর্ভোগ সংশ্লিষ্ট এই দুটি সমস্যা সমাধানে তিনি বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন, এছাড়া জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনকে উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন।

 

 এই প্রস্তাবনা তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রমাণ মিলেছে। এই দুটি বিষয় সমাধান হলে ফতুল্লার বিস্তর সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। যার ফলে পিছিয়ে থাকা ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নীত হওয়ার সুযোগ পাবে। ফতুল্লাবাসীর জন্য গিয়াসউদ্দিনের এই উদ্যোগ ব্যাপক উন্নয়নের রাস্তা প্রসারিত করবে। ফতুল্লার বিশাল ভোটারদের মন জয় করার এই উদ্যোগ ভোটারদের মনে মানসিকভাবে তাকে অনেক দূর এগিয়ে দিয়েছে। নির্বাচনী প্রস্তুতির দিকে গিয়াসউদ্দিনের আরেকটি কৌশলও ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। সেটি হচ্ছে রাজনীতিতে কর্মীবান্ধব ও জনসংশ্লিষ্ট হওয়ার বিকল্প নেই। আর এই কাজটি গত তিনমাসে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন দারুণভাবে সেরে ফেলেছেন। গত ১৫ বছর মামলা-হামলার দরুণ এলাকা থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন ছিল বলা যেতে পারে বিএনপি কর্মীরা। 

 

৫ আগস্টের পর বিভিন্ন মামলায় জামিন প্রক্রিয়া শেষ করে ঘরে ফিরেছে বিএনপি কর্মীরা। গিয়াসউদ্দিনের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ভিত্তিক লাগাতার কর্মসূচির কারণে বিএনপি কর্মীরা সংগঠিত হয়েছে। এছাড়া এলাকার মানুষের সমস্যাগুলোও অনুধাবন করা সহজ হয়েছে। যার দরুণ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি কর্মীদের একটি শক্ত ভীত তৈরি হয়েছে। যার ফলে প্রতিদ্বন্দ্বি অনেকেই হিংসায় উঠে পরে লেগেছে। এদিকে ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির দায়িত্ব পান আলহাজ¦ গিয়াস উদ্দিন। যার পরিপ্রেক্ষিতে টানা ১৪ বছর পর সম্মেলন এর আগে ইউনিট কমিটি গঠন ও ইউনিট ভিত্তিক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়। তা ছাড়া এর আগের ২০০৩ সালে রেজাউল করিম, তৈমূর আলম খন্দকার কমিটির নামে ব্যর্থতা, ২০০৯ সালে তৈমূর আলম খন্দকার, কাজী মুনিরুজাম্মান, পরবর্তীতে রবি-মামুন কমিটি সকলে ব্যর্থ হলে ও বুদ্ধিমতায় এগিয়ে থাকায় কোন অপপ্রচার বিগত দিনে ও কাজে আসেনি আগামীতে ও আসবে না বলে ধারনা করছেন নেতাকর্মীরা।

 

এদিকে গত শনিবার (২ নভেম্বর) ফতুল্লা এনায়েত নগর ইউনিয়নে ধর্মগঞ্জ চৎলারমাঠ এলাকায়, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, মাদক-চাদাবাজী-সন্ত্রাস রোধে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যবসায়ী সংগঠন ওসমানদের দোসর, ওসমানীয় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হুঙ্কার করলে একটি চক্র তা নিয়ে বিভিন্ন কায়দায় অপপ্রচারে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। যা নিয়ে বিএনপিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।