বৃহস্পতিবার   ১৪ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ৩০ ১৪৩১   ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নিটিং ওনার্স এসোসিয়েশনে ওসমান দোসররা দাপুটে

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৮:৪০ পিএম, ৭ নভেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

# সেলিম ওসমানের কথা মত সভাপতি সিলেকশন

বিগত সময়ে নারায়ণগঞ্জে ত্রাস কায়েম করে সর্বমহলে নিয়ন্ত্রণ চালিয়েছে ওসমান পরিবার। ওসমান পরিবারের অন্যতম সদস্য শামীম ওসমান গডফাদার পরিচিতি পাওয়া তার কাছে সকল ব্যবসায়ী মহল জিম্মি ছিল। অভিযোগ রয়েছে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী  সংগঠনের লোকদের মাধ্যমে সাবেক এমপি শামীম ওসমান সহ পুরো ওসমান পরিবার মিলে দেশের বাইরে চার হাজার টাকা পাচার করেছে। এছাড়া শামীম ওসমানের কানসাডায় এবং দুবাইয়ে বাড়ি রয়েছে। ব্যবসায়ী সেক্টরে তাদের আধিপত্য থাকায় তারা তাদের অনুগত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় সহজে টাকা পাচার করেছে। তার বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স এসোসিয়শনে ওসমান অনুগত ব্যক্তিকে সভাপতি বানিয়ে তাদের মনমত পরিচালনা করেছে। এছাড়া ওসমানারা ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের মাধ্যমে নিজেদের চাদাঁবাজির রামরাজত্ব চালিয়েছে।  

 

এদিকে বাংলাদেশের অর্থকারী ফসল সোনালী আঁশ পাটকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে ‘প্রাচ্যের ড্যান্ডি’ হিসেবে পরিচিত ছিল নারায়ণগঞ্জ। ইতিহাস-ঐতিহ্য ও শিল্প- বাণিজ্যে সমৃদ্ধ জেলাটি। দেশের ২য় বৃহত্তম বাণিজ্যিক নগরী। নারায়ণগঞ্জ জেলা এককভাবে বাংলাদেশের বাজেটের মোট ২০% অর্থ সরবরাহ করে থাকে। বর্তমানে গার্মেন্টস, নিটিং, হোসিয়ারি সেক্টর ব্যবসায় আধিপত্য রয়েছে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের। দেশের ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসির পরেই বিকেএমইএ, নিটিং ওনার্স এসোসিয়শনের অবস্থান রয়েছে। তার মাঝে বিকেএম তে নেতৃত্বে ছিলেন সেলিম ওসমান এবং বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স এসোসিয়েশনে নেতৃত্বে ছিলেন তাদের অনুগত ব্যক্তিরা।

 

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স থেকে ওসমান দোসরদের বিতারিত করে নতুন ভাবে সাজানোর আহ্বান জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন। কেননা এখনো ওসমানদের দোসরার এই সংগঠনে দাপট দেখিয়ে যাচ্ছে। তাদের ভয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরা এখনো মুখ খুলতে সাহস পান না। ওসমান সম্রাজ্যের দোসরদের চাদাঁর টাকা ঠিকই দিতে হয়েছে। তাছাড়া বিকেএমইএ’র সভাপতি হাতেমকে ওসমানদের প্রধান দোসর বলে ক্ষোভ ঝারেন সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন। এছাড়া অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠনে ওসমানদের  দোসর যারা নেতৃত্বে রয়েছেন  তাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন ভাবে ভালো লোকদের নিয়ে সাজানোর আহ্বান জানান তিনি।

 

সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে বিকেএমই এর সাবেক সভাপতি মামলার কারণে পালিয়ে গেছে। চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি পরিবর্তন হয়েছে। যারা ওসমান পরিবারের দোসর তাদেরকে বাদ দিয়ে অবিলম্বে ভালো লোকদের নিয়ে নতুন করে কমিটি করতে হবে। যত তারাতাড়ি সম্ভব আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা তথা ওসমান পরিবারের দোসরদের বিধায় করতে হবে। অবিলম্বে কমিটি ভেঙে দিয়ে যারা ভালো নিরীহ তাদের দ্বারা কমিটি গঠন করতে হবে। আমার আহ্বান থাকবে এই সমস্ত দালালদের বিতাড়িত করে আপনারা নতুন কমিটি গঠন করেন।

 

বিপরীতে বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স এসোসিয়েশনে নেতৃত্ব দিয়েছে ওসমানদের দোসররা। বিগত সময়ে এই ব্যবসায়ী সংগঠনে সেলিম ওসমানের আস্থাভাজন তথা ওসমানদের দোসর মাহবুবর রহমান স্বপন, সেলিম সারোয়ারের নেতৃত্বে ওসমান অনুগত ব্যবসায়ীরা এই সংগঠনে নেতৃত্ব দিয়েছে। তাছাড়া স্বপন এবং সেলিম সারোয়ারের বাড়ি মুন্সিগঞ্জে হওয়ায় ওসমানদের কাছে চলে যান। কেননা ওসমানরা নারায়ণগঞ্জের চেয়ে বাহিরের জেলার লোকদের কাছে নিয়ে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন। আর সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে তারা দুজন। এছাড়া তাদের সাথে থাকা ওসমান ঘনিষ্ঠরা হলেন নিটিং ওনার্স এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি মো. আবুল বাসার মো. কামাল হোসেন, রকিবুল হাসান রাকিব,এছাড়া আরও রয়েছে মো. মিজানুর রহমান (মিজান), আবু বকর সিদ্দিক আবুল মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মো. আবু জাফর হাওলাদার, মো. বশির আহম্মেদ আক্তার মো. শফিকুর রহমান। তারা ওসমানদের দোসর হয়েও এখনো পর্যন্ত দাপটের সাথে ব্যবসায়ী সংগঠনের নিটিং ওনার্স এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে রয়েছেন। 

 

তাছাড়া তারা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ওসমান পরিবারের চামচা খ্যাত হিসেবে পরিচিত খালেদ হায়দার খান কাজলকে খুশি রাখতে তারা ব্যস্ত ছিলেন। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে সেলিম ওসমান যাকে সভাপতি নির্ধারণ করে দিতেন তাকে এখানে সভাপতি বানানো হত। ব্যবসায়ীদের বলে দেয়া হত সেলিম ওসমানের প্রার্থীকে যেন ভোট দিয়ে জয়ী করা হয়। ওসমানরা একচ্ছত্র ভাবে ব্যবসায়ী সংগঠনে আধিপত্য চালিয়েছে। নিজেদের পছন্দমত ব্যক্তিদের নেতৃত্বে বসিয়ে চাদাঁবাজির রামরাজত্ব চালিয়েছে। এছাড়া ওসমানদের টাকা পাচারে সহযোগি হিসেবে কাজ করেছে।