বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১   ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পলাতক থাকা আ.লীগের নেতাদের রাজধানীতে ডাক

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ১২:৩০ এএম, ১০ নভেম্বর ২০২৪ রোববার


বিগত ১৫ বছর নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় প্রতিনিয়ত নেতাকর্মূদের চলাচলে মুখরিত ছিল। এমনকি আওয়ামী লীগের ঢাকার সমাবেশ গুলোতে বাস বরে লোক নিয়ে যেতেন। এমন বর্তমানে পালিয়ে যাওয়া গডফাদার খ্যাত সাবেক এমপি শামীম ওসমান কয়েক হাজার নেতা কর্মী নিয়ে রাজধানীর রাজপথে কম্পন তৈরী করেছে।

 

 

সেই সাথে কড়া হুঙ্কার দিয়েছে। কিন্তু গত ৫আগষ্টে ছাত্রজনতার তোপের মুখে পড়ে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের পতনের পর নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মীদের কারোরই দেখা মিলে নাই।  

 


এদিকে আজ রোববার ১০ নভেম্বর ২০২৪, বিকাল ৩টায় শহিদ নূর হোসেন চত্বরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। ১০ নভেম্বর শহিদ নূর হোসেন দিবস। অবরুদ্ধ গণতন্ত্র মুক্তি ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় শহিদ নূর হোসেনের আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয়।

 

 

উক্ত মিছিলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ আহ্বান জানান। একই সাথে দেশব্যাপী সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।

 


অপরদিকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দিনও নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পার্টি অফিসের কার্যালয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকে প্রতিরোধ করতে অবস্থান নেন। এই অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব প্রদান করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই অন্য দিকে আরেক মিছিলে নেতৃত্ব দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।

 

 

কিন্তু ৫ আগষ্ট দুপরের পর যখন জানাজানি হয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তখন সারাদেশের তুলনায় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও পালিয়েছে। সেই থেকে এখনো পর্যন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ এমপি থেকে শুরু করে তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের দেখা নেই।

 

 

অথচ এর মাঝে ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী চলে গেলে নারায়ণগঞ্জে সাবেক সিটি মেয়র আইভী ছাড়া অন্য কাউকে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায় নাই। তাছাড়া ক্ষমতায় থাকা কালিন সময়ে সাবেক এমপি শামীম ওসমান সহ তার গুন্ডা পান্ডারা বড় বড় কথা বলে বেরাতেন। কিন্তু বিপদের সময় ত্রাাই আগে পালিয়েছে।

 

 

আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে এই প্রথম দলীয় ভাবে কর্মসুচির ডাক দিয়েছে। কিন্তু এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের যে সকল নেতাকর্মী বিগত সময়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তারা এখন পালিয়ে রয়েছে।

 

 

আবার কেউ কেউ দেশ ছেড়ে বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমিয়েছেন। তবে তারা ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছেন। কিন্তু তদৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ফেলে পালিয়ে চলে গেছে গডফাদার খ্যাত সাবেক এমপি শামীম ওসমান।

 


তাছাড়া মাস দুয়েক আগেও যেখানে জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় নেতাকর্মীদের পদচারনায় উজ্জীবিত ছিল আজ সেই অফিসের দরজা টিন দিয়ে আটকানো রয়েছে। ৫ আগষ্টের পর থেকে নেতাকর্মীদেরও কোন পদচারনা নেই। এক সময়ের দাপটে থাকা আওয়ামী লীগের অফিস এখন বন্ধ হয়ে অন্ধকারে ভুতুরে ঘর পরিনত হয়েছে।

 

 

আওয়ামী লীগের অফিসকে রক্ষা করার জন্য তাদের দলীয় কোন নেতাকর্মী এগিয়ে আসে নাই। এতে করে আওয়ামী লীগের করুন দৈন্য দশা পাওয়া যায়। দলের এই ক্রান্তিকালিন সময়ে কে হাল ধরবে আর কার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা রাজধানী ঢাকা কিংবা স্থানীয় ভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করবে তা নিয়েও ধোয়াশা তৈরী হয়ে রয়েছে। কেননা নেতাকর্মীরা এখন মামলা নাজেহাল অবস্থা।  

 


খোঁজ নিয়ে জানাযায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে সহিংসতার রূপ নিলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং রেল গেইট এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর কার্যালয়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় নাশকতাকারীরা। এছাড়া গত ৫ আগষ্টের দিন এক মুহুর্তে আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস তছনছ করে ফেলে।

 

 

অফিসের ভিতরে আগুন জালিয়ে সবকিছু পুরে ফেলার পাশা পাশি এসি, ফ্যান সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায় দুর্বত্তকারীরা। এমনকি আওয়ামী লীগের সাবেক প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের বাড়ি পুড়িয়ে সবকিছু লুটপাটে করে ফেলে। অথচ এক সময় তার বাড়িতে প্রবেশ করার জন্য পাশ লাগত। কিন্তু এখন তা ভুতুরে বাড়ি।

 

 

এছাড়া শামীম ওসমানের ছেলে ওয়ন ওসমানের নিয়ন্ত্রন করা গুন্ডাবাহিনী জেলা মহানগর ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে। তাছাড়া জেলা মহানগর আওয়ামী লীগ ছাড়াও দলের সহযোগি সংগঠনে শামীম ওসমান অনুসারীরা ছিলেন দাপুটে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, কায়সার হাসনাত, গ্রেপ্তার হওয়া গোলাম দস্তগীর গাজী হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে রাজধানী ঢাকার বুকে কম্পন তৈরী নেতারা এখন পালিয়ে রয়েছে।

 

 

কিন্তু দলের পদ পদবী নিয়ে নানা কুকর্ম করে তারা বিত্তশালী বনে গেছেন। অথচ তারাই এখন সেই পদ পদবী নেতারা তাদের অনগত কর্মীদের রেখে পালিয়েছে। এমনকি নেতাকর্মীদের কোন খোঁজ খবর পর্যন্ত রাখেন না তিনি। বিগত ১৫ বছরে তারা এখন পালিয়ে রয়েছে। দলের কর্মসূচি বাস্তবায়নেও তাদের দেখা মিলছে না। কবে নাগাত মিলবে তা জানেন না কর্মীরা।      এন. হুসেইন রনী  /জেসি