বেপরোয়া হকারদের লাগাম টানবে কে ?
যুগের চিন্তা রিপোর্ট :
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৮:৫৭ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ রোববার
নারায়ণগঞ্জ শহরের হকার সমস্যা ও যানজট নিরসনের জন্য বিগত সময়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠক করে ফুটপাত থেকে হকার মুক্ত করা হয়। হকার মুক্ত থাকায় নগরবাসিও স্বস্তিতে চলাচল করে। কিন্তু সম্প্রতি ৫ আগষ্টের পরে নারায়ণগঞ্জ শহরের হকারর বেপরোয়া রুপ নিয়ে ফিরেছে। তারা এখন ফুটপাত ছেড়ে রাস্তার অর্ধেক দখল করে নিয়েছে। আর এতে করে নগরবাসিকে গাড়িতে চলাচল সহ বিভিন্ন পরবিহনে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তার মাঝে আবার আবার সেই পুরনো জামেলা হকার সমস্যা এখন বড় আকার হয়ে মানুষের ঘারে বোঝা হয়ে রয়েছে। কিন্তু শহরে এখন কোন জনপ্রতিনিধি না থাকায় প্রশাসনও এখন নিরব ভুমিকায় রয়েছেন। হকারদের লাগাম টেনের ধরার জন্য কেই নেই। এতে করে হকররা আগের থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে রাস্তা দখল করে রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে শহরে যানজট ও হকার সমস্যা সমাধানের জন্য এই বছরের শুরুতে নারায়ণগঞ্জের দুই মেরুর প্রভাবশালী রাজনীতিবিদও এক হয়েছেন। সাবেক নাসিক মেয়র ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং ওসমান পরিবারের সদস্য সাবেক এমপি শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠকে একমত পোষন করেন। তখন এই গোলটেবিল বৈঠকের পরে নারায়ণগঞ্জ শহর দীর্ঘ দিন ফুটপাতে সহ রাস্তায় হকার মুক্ত থাকে। যেখা আইভী শামীম ওসমান এক দলের থেকে মনোনীত হয়ে বিগত ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে চিরপ্রতিদ্বন্দি হিসেবে জনপ্রতিনিধি ছিলেন। কিন্তু তারা দুজনে দুই মেরুতে অবস্থান করলেও শহরের যানজট এবং হকার সমস্যা বিষয়ে এক জায়গায় বসে তা নিরসনে কাজ করে মানুষের প্রশংসা অর্জন করেছে । কিন্তু ৫ আগষ্টের পরে শহরের হকার যানজট এখন প্রতিদিন মানুষের অভিশাপে পরিনত হয়েছে। হকারদের কে নিয়ন্ত্রণ করবে তা নিয়েও কেউ কোন কথা বলছে না।
জানাযায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাত হকারের দখলে চলে গেছে। তিনটি থানা, দুটি সংসদীয় আসন ও সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে গঠিত মূল শহর। নাগরিক ও সামাজিক সমস্যা সমাধান করতে আলোচনায় বসেছিলেন ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সদর-বন্দর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তাদের একত্রিত হওয়ায় অনেকেই প্রথম বার দেখেছে কয়েক যুগ পর ফুটপাতের নতুন চেহারা। কিন্তু এখন আর তা নেই।
এর আগে সরকার থাকাকালিন সময়ে সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান হকাদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, হকারদের কারনে মানুষ শহরে চলাচল করতে পারবে না তা হতে পারে না। শহরের মুল সড়কে কোন ধরনের হকার থাকবে না। তখন সকলের সম্মতি ক্রমে শহরের ফুটপাত থেকে হকার বন্ধ করে দেয়া হয়। তাছাড়া প্রশাসনকে প্রশাসনের মতো করেই চলতে হবে। হকারদের উঠিয়ে দিলে এরা কোথায় যাবে, কোথায় ঘুমাবে এই চিন্তা প্রশাসনের করলে হবে না। কোনো না কোনোভাবে তাদের রিজিকের ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তখন হকাররা সড়কের ফুটপাতে বসার জন্য আন্দোলন করলে তাদেরকে নগরীর চাষাড়া থেকে খানপুর রোডে সপ্তাহে দুই দিন বসার সুযোগ করে দেয়া হয়। এছাড়া হকারদের পুর্নবাসনের জন্য তাদের কাছ থেকে ভোটার আইডি সহ নামের তালিকা চাইেল তা দিতে পারে ন্ইা। তাই হকাররা এখন লাগামহীন হয়ে ফুটপাট ছেড়ে সড়ক দখল করে আছে।
অপরদিকে ৫ আগষ্টের পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে হকার উচ্ছেদে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও হকাররা ফুটপাত দখল করেই আছেন। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন পথচারীরা। অস্থায়ী এসব দোকান বসিয়ে ফুটপাতে একেবারেই পথচারী চলাচলের পথ বন্ধ করে রেখেছেন তারা। তারা ফুটপাতে ক্ষান্ত থাকেন নাই সড়কের অর্ধেক রাস্তাও এই বেপরোয়া হকারা দখল করে নিয়েছে। সড়কে যানবাহন চলাচল করলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের। এ অবস্থা এখন পথচারীদের দিনের অভিশাপ হয়ে গেছে।
বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের সন্ত্রাসী বাহিনী হকার থেকে চাদাঁ নিয়ে তাদেরকে ফুটপাতে বসার ব্যবস্থা করে দেন। এতে করে তারা চাদাঁবাজি করে অর্থ নিয়ে লাভবান হন। কিন্তু ৫ আগষ্টের পরে শামীম ওসমানের সন্ত্রাসী বাহিনী পলাতক রয়েছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে হকারদের এখন মদদত দেন কে।
এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন সাগরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনকল রিসিভ করেন নাই।