সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কাশিপুরের লালন মেলা বন্ধে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নিন্দা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:০৬ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ রোববার

হেফাজতে ইসলামসহ মৌলবাদী গোষ্ঠীর হুমকির মুখে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামে আয়োজিত লালন মেলার অনুমতি বাতিল এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের অপারগতা প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। শুক্রবার দেওয়া এক বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, এ ঘটনার মাধ্যমে দেশে সংস্কৃতি চর্চার পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে।

 

 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে তারা বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ২২ ও ২৩ নভেম্বর নরসিংহপুর গ্রামের মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমি প্রাঙ্গণে সাধুসঙ্গ ও লালন মেলার আয়োজন করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লালনভক্তরা এই আয়োজনে যোগ দেন। কিন্তু এবার মেলার কয়েকদিন আগে তৌহিদি জনতার ব্যানারে মেলার কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দেন হেফাজত নেতা মাওলানা আব্দুল আউয়াল। 

 

 

হেফাজত নেতার হুমকির পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও লালন মেলার কার্যক্রম পরিচালনা করতে অনুমতি দিতে অপারগতা জানানো হয়। পুলিশকে জানিয়েও নিরাপত্তা বিষয়ে কোনো আশ্বাস পাননি বলে জানিয়েছেন মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ফকির শাহ জালাল।

 

 

উদীচী মনে করে, আবহমান বাংলার অসাম্প্রদায়িক চেতনার আধার লালন সাঁইয়ের নামে মেলার কার্যক্রম বন্ধের ঘটনা প্রগতিশীল সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে কোনোভাবেই সহায়ক নয়। যারা লালন মেলা বন্ধের হুমকি দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে মেলার অনুমতি বাতিলের নিন্দা জানায় উদীচী। বিভিন্ন সময় ধর্মীয় ইস্যু তুলে লালন মেলায় বাধা দেয়া ছাড়া সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার ঘটনা দেখা গেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কোনো ঘটনাতেই দৃষ্টান্তমূলক কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি পুলিশ প্রশাসনকে।

 

 

লালন মেলা বন্ধের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শান্তির আওতায় আনার দাবি জানায় উদীচী। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা করছে মানুষ। যারা আন্দোলনে আহত হয়েছেন, তাদেরও অন্যতম লক্ষ্য বাকস্বাধীনতা , মুক্তমত চর্চা ও সংস্কৃতি চর্চার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার রক্তে অর্জিত বিজয়ের পর থেকেই কোন কোন গোষ্ঠী অনৈতিক সুবিধা নেয়ার অপচেষ্টা করছে। তাই তাদের প্রতিহত করে দেশে অবিলম্বে সংস্কৃতি চর্চার অবাধ পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিও জানান উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।