নয়া মুসিবত রেজা রিপনের অনুমোদন বিহীন আসিয়ান
যুগের চিন্তা রিপোর্ট :
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ০৭:৫৩ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার
ক্ষমতার পালা বদলে কোনো রকম অনুমোদন ছাড়াই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল শুরু করেন নিউ আসিয়ান পরিবহনের শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত প্রায় ১০টি বাস। এদিকে বাস চলাচলে লিংক রোডে স্থাপন করেছেন টিকেট কাউন্টার। যাকে ঘিরে দিন রাত ভরে যানজটের শিকার হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জবাসী। এদিকে ট্রাফিক কর্মকর্তাদের নিয়মিত কিছু মাসোয়ারা ও উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের মোটা অংকের সপ্তাহিক মাসোয়ারা দিয়েই গত ৩ মাস যাবৎ চলছে এই অনুমোদনহীন আসিয়ান পরিবহন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই অনুমোদনহীন বাসটির পরিচালনায় রয়েছেন একজন প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজা রিপন।
এদিকে জেলা প্রশাসন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার কথা বললেও বাস্তবে আসিয়ান পরিবহনের দৌরাত্ম্য কমতে দেখা যায়নি। ফলে শহরে বাড়তে দেখা যেত ব্যাপক যানজট। এদিকে গত (১৫ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ শহরের যানজট নিরসনে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড-কাউন্টার অপসারণ এবং অবৈধ যান চলাচল বন্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসক, সেনাবাহিনী ও জেলা পুলিশ প্রশাসন। এই যৌথ বাহিনীর অভিযানে নিউ আসিয়ান পরিবহনের অবৈধ টিকেট কাউন্টার বন্ধ ও দুইটি বাস সামনে পেয়ে আটক করে ডাম্পিংয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু বন্ধ হয়নি এই নিউ আসিয়ান পরিবহনটি। এদিকে সেই অভিযানে আকেরটি অনুমোদনহীন গ্রীন ঢাকা নামের ১২টি শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত বাস জব্দ করা হয়। যা বর্তমানে পুলিশ লাইনসে রাখা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
কিন্তু এই বাস কোন প্রকারের অনুমোদন ছাড়াই আবারো রুটে চলাচল করাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শুরু করে পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বিআরটিএ অফিসারদের ধারে ধারে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শাখাওয়াত হোসেন রানা। এর পাশাপাশি আসিয়ানের দুইটি বাস প্রশাসন থেকে ছাড়াতে চলছে নানা লেনদরবার। ইতিমধ্যে নানা জায়গায় মোটা অংকের লেনদেনের কথা ও আলোচনায় আসছে। এদিকে যানজটে নাকাল নগরবাসীদের দাবী বর্তমানে নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে সকল প্রকারের বৈধতা নিয়েই সকল কাজ করা উচিত। সেই প্রেক্ষিতে অনুমোদন নিয়েই গ্রীন ঢাকা ও আসিয়ানের মতো বাস ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলের সুযোগ পেলে প্রশাসনিক কর্মকর্তারাই একটি নির্দিষ্টস্থানে এদের বাস কাউন্টারের অনুমোদন দিবেন যেখানে কোন যানজটের শিকার হবে না নগরবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন পরিবহন নিয়ন্ত্রণে রাখা নেতারাও আত্মগোপনে চলে যান। এই সুযোগে বিভিন্ন পরিবহনের নতুন পরিচালনায় আসেন বিএনপির নেতারা। গত ২৪ আগস্ট থেকে হিমাচল পরিবহনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল শুরু করে। পরবর্তী সময়ে হিমাচলের পরিবর্তে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গ্রীন ঢাকা ও আসিয়ান পরিবহনের বাস চালু করা হয়। গ্রীন ঢাকা পরিবহনের পেছনে রয়েছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা ও আসিয়ানের পিছনে রয়েছে, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজা রিপন।
জানা যায়, আসিয়ান পরিবহনের বহরে ১০টি কোনোটিরই এই রুটে চলাচলের অনুমোদন নেই। অবৈধভাবে অনুমোদনহীন আসিয়ান বাসের মালিক পক্ষের ও কাউন্টারের লোকদের দাবী, এটা বাস কেউ বন্ধ করতে পারবে না এটা একটি কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতার বাস আর বর্তমানে মহানগরের রেজা রিপন ভাই এটার দায়িত্বে আছেন সেই প্রেক্ষিতে এটা চলবেই বর্তমানে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আমরা চালাচ্ছি এই বাস।
এর আগে গত ১৬ বছর নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এক পরিবারের ছত্রচ্ছায়ায় শীতল পরিবহন নামের শুধু এক কোম্পানির শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত বাস ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল করতে দিত। তাদেরও রুট পারমিট ছিল না। বর্তমানে তারা পালালে তাদের মতোই ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অনুমোদন ছাড়াই এই শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত বাসগুলো চলাচলের পায়তারা করছেন। এদিকে নিউ আসিয়ান পরিবহনের শহরে দুইটি টিকেট কাউন্টার রয়েছে, লিংক রোড ও খানপুর। এ ছাড়া ও ডন চেম্বারে অবৈধভাবে রাস্তা দখল করে রাস্তায় ফেলে রাখা হয় এই আসিয়ান বাসগুলো। বর্তমানে নগরীতে যানজটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি আরেক নাম নিউ আসিয়ান পরিবহন।