ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিভিল সার্জন কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
যুগের চিন্তা
প্রকাশিত : ১১:৪৯ এএম, ২ ডিসেম্বর ২০২৪ সোমবার
ডেঙ্গু চিকিৎসায় সিভিল সার্জনের ব্যর্থতার প্রতিবাদে গতকাল গণসংহতি আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ কমিটি সিভিল সার্জনের কার্যালয় ঘেরাও এবং কার্যালয়ে সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১ টায় শহীদ মিনার থেকে সিভিল সার্জন কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করে এবং মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা সিভিল সার্জনের কার্যালয় ঘেরাও করে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সাম্য,মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের আকাঙ্খায় ১৯৭১ সালে ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম। সেই আকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতার ৫৩ বছরের বাস্তবায়িত হয় নি। বরঞ্চ উল্টোপথে হেঁটেছে দেশ, দেশের জনগণ বারবার প্রতারিত হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের সাথে উচ্চারিত হয়েছে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের দাবি। এই ৪ মৌলিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই এগিয়ে যাবে আগামীর বাংলাদেশ। আগামীর বাংলাদেশে চিকিৎসা নয়, স্বাস্থ্য'ই হবে মানুষের মৌলিক অধিকার।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আমরা অনেক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীন আচরণ লক্ষ্য করছি। যার উদাহরন ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতা। যার খেসারত আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী দিচ্ছি। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। ডেঙ্গু চিকিৎসায় আমরা নারায়ণগঞ্জের সরকারী ২ টি হাসপাতালে সক্ষমতার ঘাটতি লক্ষ্য করেছি।
কেবলমাত্র ডেঙ্গু নয়, যেকোন সাধারণ চিকিৎসায় নারায়ণগঞ্জবাসীর আশ্রয়স্থল হয়ে উঠার কথা ৩০০ শয্যা খানপুর হাসপাতাল এবং ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করেছি, বেসরকারি চিকিৎসা খাতকে সুবিধা দিতে সরকারী হাসপাতালগুলোকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই পেছন থেকে টেনে ধরা হচ্ছে। নিতান্ত বিপদে পড়ে এবং যারা একেবারেই অসহায় তারাই সরকারী হাসপাতাল ২ টিতে চিকিৎসা গ্রহণ করতে যান।
আমরা প্রত্যাশা করি, ৩০০ শয্যা খানপুর হাসপাতাল এবং ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল এই দশা থেকে বেরিয়ে আসবে। এবং সিভিল সার্জন তার জন্য উদ্যোগী এবং অগ্রণী ভূমিকা গ্রহন করবেন। এবং এই নাজুক, করুণদশা থেকে উত্তরণে আমরা ৯ টি দাবি উত্থাপন করেছি। আমরা আশা করি, সিভিল সার্জন দাবিগুলোর প্রতি যথাযথ গুরুত্ব এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিবেন।
আমাদের দাবিগুলো হচ্ছে : ১. সেবা পেতে অব্যবস্থাপনা ও হয়রানিমুক্ত শতভাগ সেবা নিশ্চিত করতে হবে। ২. প্রয়োজনীয় ঔষধের পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ৩. রোগ নির্ণয়ের সকল প্রকার টেস্ট হাসপাতালগুলোতে করার ব্যবস্থা করতে হবে। ৪. ডাক্তার (বেসরকারি খাতের) ফি এবং টেস্ট ফি কমাতে হবে। ৫. হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত বিশেজ্ঞ মেডিকেল অফিসার নিয়োগ করতে হবে।
৬. অবকাঠামো ও মেডিক্যাল যন্ত্রাংশের ঘাটতি পূরণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে ৭. মুমূর্ষু রোগীদের জরুরি চিকিৎসার ক্ষেত্রে এম্বুলেন্স সার্ভিস সহজ করতে হবে। ৮. উপজেলা সদর হাসপাতালগুলোসহ জেলা সরকারি হাসপাতালে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি, ডায়াগনস্টিক, প্যাথলজি ও ক্লিনিকগুলোর দৌরাত্ম মুক্ত করা। ৯. নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও জরুরি অগ্নি নিরাপত্তাসহ পুরো হাসপাতাল কম্পাউন্ডে শতভাগ কমপ্লায়ান্স নিশ্চিত করতে হবে।
ঘেরাও কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব, জেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, জেলা কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন আলম, নারী সংহতির আহ্বায়ক নাজমা বেগম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, ৭ নং ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান, ১৮ নং ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক শুক্কুর মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ। এন. হুসেইন রনী /জেসি