রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৮ ১৪৩১   ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সর্বোচ্চটা দিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করছে নাসিক: সিইও

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

যুগের চিন্তা

প্রকাশিত : ০৯:৩৯ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে “ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা প্রেক্ষিত : পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সচেতনতার ভূমিকা শীর্ষক” সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকারি তোলারাম কলেজের সার্বিক সহযোগিতায় কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে গতকাল বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে কলেজের পদ্মা মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

 


সেমিনাওে জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রী ভাই-বোনসহ সকলের হাতেই স্মার্ট মোবাইল ফোন রয়েছে। লেখাপড়া বা যে যেই কাজ করে তার চেয়ে বেশী মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকে। মোবাইলে চ্যাটিং করতে করতে একসময় ঘুম এসে যায়, কিন্তু মশারি টানানোর কথা কারও মনে থাকে না। এতে করে এডিস মশার কামড়ে কিন্তু আপনি ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারেন। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই মশারি টানাতে হবে। আমার পরিবারের আশেপাশের আঙ্গিনা যদি আমি পরিস্কার রাখি, তাহলে আমি নিজে অন্তত সেইফ থাকলাম। আমাদের সকলকে সকল স্থান থেকে সচেতন হতে হবে, দায়িত্ব পালন করতে হবে, তাহলেই আমরা ডেঙ্গু মোকাবিলা করতে পারবো।

 


নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ক্যাপাসিটির সর্বোচ্চটা দিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা কাজ করছি। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমাদের মাঝে সচেতনতার মারাত্মক অভাব। এডিস মশা মূলত পরিস্কার পানিতে ডিম পারলেও অনেক সময় দেখা যায়, মশার স্প্রে দিতে গেলে স্থানীয়রা নিজ বাড়ির কোণায়, আঙ্গিনায় ও জানালায় এই স্প্রে প্রয়োগের জন্য চাপ প্রয়োগ করে, এমনকি মারতেও উদ্যত হয়। প্রতিটি ওয়ার্ডে মশক নিধন কর্মীরা এই সমস্যার সম্মুখীন হয়। 

 

তাই আমি সকলকে অনুরোধ করবো, দয়া করে আপনারা সকলেই সচেতন হোন। নিজ বাড়ি ও বাড়ির আঙ্গিনা যদি পরিস্কার রাখতে পারি এবং ডেঙ্গু সচেতনতাটা যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে দেখা যাবে যে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ৫০ থেকে ৬০ পারসেন্ট কাজ হয়ে যাবে। ওষুধ স্প্রে করা, ফগিং করা, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখাসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধে যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে শতভাগ ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি। তবে, জনগন সচেতন না হলে সিটি কর্পোরেশন বা কোনো সংস্থার একক প্রচেষ্টায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না।


সভাপতির বক্তব্যে সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ডেঙ্গু মশা তিন মাইল পর্যন্ত ভ্রমন করতে পারে। আমরা আমাদের নি:শ^াসের মাধ্যমে যে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসৃত করি, ৫০ মিটার দুর থেকে তার গন্ধ পায় এডিস মশা। ডেঙ্গু মশা ডোরাকাটা থাকে, তাকে টাইগার মশাও বলে। ডেঙ্গু মশা সমান্তরালভাবে বসে এবং সাধারণ মশা ৪৫ ডিগ্রি এংগেলে বসে। তাই বসা থেকেই আমরা অনেক সময় বুঝতে পারবো কোনটা ডেঙ্গু মশা ও সাধারণ মশা। সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি কমিটি করে সারা নারায়ণগঞ্জে যদি মনিটরিং করা যায় তাহলে সেটা খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে, সর্বোপরি আমরা সকলে যদি সচেতন হই, তাহলেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব।


সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিমল চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে আর উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শহীদুল ইসলাম, আর.পি. সাহা বিশ^বিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সেলিনা আক্তার, সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষা ক্যাডার অফিসার্স কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মইনুল আশরাফ।