Logo
Logo
×

জনদুর্ভোগ

কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে নিষ্ক্রিয় ফতুল্লা পুলিশ

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে নিষ্ক্রিয় ফতুল্লা পুলিশ

ফতুল্লা মডেল থানা

গত ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যূত্থান মাধ্যমে টানা ১৬ বছর ক্ষমতা থাকা ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর দেশে অনেকটাই পরিবর্তন লক্ষে করা গেছে। প্রশাসনের প্রতিও সাধারণ মানুষের যে একটা ক্ষোভ আছে এবং সেটিও খুব ভালো ভাবেই প্রকাশ পেয়েছে। সাধারণ মানুষ পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনেকটাই আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। ৫ তারিখের পর পরই পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। শুধু তাই নয় ৫ তারিখের পর পুলিশসহ অন্যন্য যে সকল বাহিনী রয়েছে তারাও তেমনিভাবে মাঠে নামেনি সেনাবাহীনি ব্যতিত। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন পাড়া মহল্লাতে চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় পাড়া মহল্লায় ব্যপক হারে বেড়েছে মাদক আর এই মাদকের কারণে যুব সমাজ আরও নষ্ট হচ্ছে।


জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা সারা দেশের মধ্যে ধনী জেলা হিসেবে পরিচিত। এ জেলা রাজনৈতিক ,শিল্প ,ইতিহাস, ঐতিহ্য হিসেবে বেশ সুনামও রয়েছে। তবে মাদক, খুন, সন্ত্রাসী কার্যক্রম সহ নানান কারনে এই জেলার ধীরে ধীরে সুনাম, নষ্ট হওয়ার পথে। তবে  এই সমস্যা সমাধানে এর আগেও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বরাবরই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রতিনিয়নতই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত হচ্ছে এক একটি এলাকা। এদিকে নারায়ণগঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে বড় মাদকের স্পট ছিলো শহরের চাঁনমারি এলাকাটি তবে জেলা পুলিশ সুপারের প্রচেষ্টায় সেই স্পটটি বন্ধ হলেও মাদকের বিস্তার এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়।


আর এই মাদক নিয়ন্ত্রণে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক  এমপি শামীম ওসমান তার নির্বাচনী প্রচারনায় ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জে তার সাংসদীয় আসনের এরিয়াতে কোন রকম মাদক তিনি আর দেখতে চান যেকরেই হোক না কেন তিনি তার এলাকার মাদক ,সন্ত্রাস,চাঁদাবাজ ভূমিদস্যু নির্মূল করার। আর এই সকল কিছু নির্মূল করার জন্য প্রত্যাশা নামে এক সংগঠন খোলার ঘোষনা দেন আর যে সংগঠনে তার এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে মোট ৫০০ জন করে সদস্য থাকবে আর সেই সকল সদস্য হবেন সকল শ্রেনী পেশার মানুষ যার মধ্যে থাকবে, মসজিদের ইমাম, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ,সরকারি চাকরীজীবি সহ নানান পেশার সুশিল সমাজের মানুষ। শুধু তাই নয় প্রত্যাশা সংগঠন নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রেগ্রাম করা হলেও মাদক ,সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রনে কাজে আসেনি শামীম ওসমানের প্রত্যাশা। তবে তার আমলেই সবচেয়ে বেশি মাদক কারকারি হয়েছে আর এই মাদক কারবারিরা তার দলেরই লোক ছিলো। তারই ধারাবাহিকতা অবলম্বল করছে বেশ কিছু বেশ কিছু রাজনৈতিক দল।


জানা যায়, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন বা অন্যান্য দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে না থাকলেও দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এলাকার বেশ কিছু কতিপয় সন্ত্রাসী। যাদের নেতৃত্বে ফতুল্লায় বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসী কার্যক্রম। আর এই সকল কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসীদের মাধ্যমেই মাদকের আখড়া এবং বেচাকেনার চলে ধুম বাণিজ্য। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লাতেই প্রায় ১০ লক্ষ লোকের বসবাস জনসংখ্যা প্রায়  লাখেরও বেশি এই সকল এলাকাতে আওয়ামী লীগের আমলেও  কিছুদিন পরপরই বিভিন্ন আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময়ই দেখা যায় মারামারি হানাহানিসহ নানান রকম গণ্ডগোল। আর এই গণ্ডগোল কোন বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সাথে নয়, প্রতিটা ঘটনাই স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়াতে কিশোর গ্যাং এর সন্ত্রাসীরা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।


জানা যায়, মাদক সন্ত্রাসদের বিরুদ্ধে এলাকার সাধারন মানুষ  কথা বললেও কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছেনা, বরং দিন দিন বেড়েই চলছে মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসীদের দৌড়াত্ব। ফতুল্লার প্রতিটি অলিতে গলিতে এখন মাদকের ছড়াছড়ি আর এই সকল মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী বেশিরভাগই কিশোর গ্যাং এর সদস্য।


খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, রাজনৈতিক অনেক নেতার আছে শিশু-কিশোর গ্যাং বাহিনী। এরা এদের দিয়ে মিটিং মিছিল, নানা অপকর্মসহ অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করেন। বেশ করে ইট-বালি, সিমেন্টসহ বাড়িঘর তৈরি করার উপকরণ নিয়ে এই কিশোর গ্যাং দিয়ে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করায়। ফতুল্লার প্রত্যেকটি পাড়া মহল্লায় এখন এই কিশোর অপরাধীদের আতংক, চুরি, ছিনতাই, মারামারি, মাদক চাঁদাবাজি, গুম খুনের মত ঘটনাও ঘটেছে এই কিশোর অপরাধীদের নিয়ে । অনেক আবার নেতার নাম ব্যবহার করে অবাধে চলছে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজার মত মাদক ব্যবসা, চলছে বিভিন্ন মাদক স্পট।


যেখানে এর আগে প্রতিটি এলাকাতে মাদক কারবারিদের সংখ্যা এতোটাই বেড়েছে যা সামলাতে ফতুল্লা থানা পুলিশকে অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন