Logo
Logo
×

জনদুর্ভোগ

শহরের যানজট গলার কাঁটা

Icon

এম মাহমুদ

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

শহরের যানজট গলার কাঁটা

শহরের যানজটের চিত্র

শহরে চলাচল করতে গিয়ে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। নারায়ণগঞ্জ শহরে লাখো মানুষ প্রতিদিন চলাফেরা করে । আর অধিক জনসংখ্যা হিসেবে উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে এ শহর। নগরীর চাষাঢ়া থেকে নিতাইগঞ্জ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার জুড়ে বঙ্গবন্ধু সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে। আর এতে করে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই ভোগান্তি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের ট্রাফিক বিভাগের প্রতি প্রতিনিয়ত ক্ষোভ ঝাড়েন নগরবাসী।



বর্তমানে শহরের ফুটপাত হকারদের দখলে। আওয়ামী লীগ শাসন আমলে এখানে বিশাল অংকের টাকা চাদাঁবাজি হয়। তখন শামীম ওসমানের লোকজন এই চাদাঁবাজিতে জড়িত ছিলেন। যদিও ৫ আগষ্টের পরে তারা এখন পলাতক। যানজটের কারণে চাকরিজীবী লোকেরা যথাযথ সময়ে তাদের অফিসে পৌঁছাতে পারে না, যারা শিক্ষার্থী আছে তারা সঠিক সময়ে তাদের ক্লাসে উপস্থিত হতে পারে না। এমনকি অনেক সময় তাদের পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও যানজটের কারণে পরীক্ষার হলে সঠিক সময়ে বসতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে যে সমস্যাগুলোর কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো। ১) শহরে অবৈধ হকার, অপরিকল্পিত নগরায়ণ। ৩) দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও যথাযথ আইনের অভাব। ৪) নিবন্ধনহীন যানবাহন। যত্রতত্র সিএনজি অটো স্ট্যান্ড। সড়কে অবৈধ পার্কিং ব্যবস্থা। শহরের যানজটের কারণ চিহ্নিত করা হলেও প্রশাসন এগুলো নিয়ে উদাসীন।  


 
অপরদিকে বৈধ, অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটে রিকশা মিশুকের রাজত্ব চলছে পুরো শহর জুড়ে। আরেকদিকে অবৈধ হকারদের বেপরোয়া দখলে মানুষ এখন আর ফুটপাত সড়কে হেঁটে চলাচল করতে পারেন না। চাষাঢ়া থেকে কালির বাজার ৫ মিনিটে হেঁটে চলার পথও এখন হকার আর মানুষের ভিড়ের জন্য ৩০ মিনিটে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় না। যারা গাড়িতে কিংবা ব্যাটারি চালিত পরিবহনে চলাচল করে তারা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটেও চাষাঢ়া থেকে নিতাইগঞ্জ যেতে পারে না। তাছ্ড়াা বঙ্গবন্ধু সড়ক দিয়ে এ্যম্বুলেন্স যাবে এখন সেই পরিবেশও নেই।  



৫ আগষ্টের আগ পর্যন্ত শহরে একদিকে ব্যাটারিচালিত অটো প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তখন নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে প্রশাসন ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ায় এতে করে হরহামেশাই ইজিবাইক, ব্যাটারি চালিত রিকশা শহরময় তাণ্ডব চালাচ্ছে। সবচেয়ে বড় ঝামেলা হকারতো আছেই। তারাও এখন বেপরোয়া হয়ে গেছে। আবার অনেকেই ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়ে ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু এসব নিয়ে প্রশাসনের কোন মাথা ব্যথা নেই। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ পথচারীরা। শহরকে যানজট মুক্ত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।



শরীফ নামের এক পথচারি বলেন, ৫ আগষ্টের পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরে পুলিশ প্রশাসনও অনেকটা ভঙ্গুর হয়ে গেছে। নামকাওয়াস্তে  অভিযান পরিচালনা করলেও তার ফল নগরবাসী কোন কিছুই ভোগ করতে পারে না।



নগরকবাসীর মতে, নগরীকে যানজট মুক্ত রাখতে হলে শহরে ইজিবাইক, মিশুক ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। তাদের সাথে আগের মতে হকারদের ফুটপাতে বসতে দেয়া বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় যানজটের কারণে এ শহর অচল হয়ে যাবে। যা এখন অচল হয়ে রয়েছে।



খোঁজ নিয়ে জানাযায়, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা সহ শহরে প্রায় ৬শ’র বেশি হকার রয়েছে। যারা অবৈধ ভাবে ফুটপাত, সড়ক দখল থাকায় মানুষ এখন নিরুপায় হয়ে গেছে। এর থেকে উত্তরনের পথ খুঁজছে তারা।



সচেতন মহলের মতে, অবৈধ এসব হকার এবং যান চলাচলের বিরুদ্ধে ট্রাফিক বিভাগ যদি এখনি কঠোর না হয়, তা হলে এ শহরে চলাচল করা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। এ ব্যাপারে ট্রাফিক বিভাগসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে নগরবাসী।



এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার  প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, যানজট নিরসনে অবৈধ যানবাহন বিশেষ করে ইজিবাইক ও ব্যাটারি চালিত রিকশার বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। অবৈধ পরিবহনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যানজট নিরসনে আমাদের পুলিশ তৎপর হয়ে কাজ করছে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন