Logo
Logo
×

জনদুর্ভোগ

শুধু চাষাঢ়া মোড়েই ছয় অবৈধ স্ট্যান্ড!

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

শুধু চাষাঢ়া মোড়েই ছয় অবৈধ স্ট্যান্ড!

শুধু চাষাঢ়া মোড়েই ছয় অবৈধ স্ট্যান্ড!

নারায়ণগঞ্জ শহর এখন যাজটের কারনে মানুষের চলাচলের ভোগান্তি নিত্যদিনের সঙ্গি হয়ে গেছে। এই যানজটের মুলে রয়েছে শহরের চাষাঢ়া মোড়ের ৬টি অবৈধ স্ট্যান্ড। এছাড়া ফুটপাতে হকারদের দোকানের অবৈধ গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য যাজটে নাভিশ্বাস নগরবাসির। যদিও যানজট নিরসনে অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদে ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসক। তাছাড়া বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রায় সভা সমাবেশে বলে বেড়াতেন এই শহরে একটি চক্র দিনের বেলায় চাদাঁবাজি করে তা ভাগাভাগি করে রাতের বেলায় ঢাকায় ফিরে যেতেন। শামীম ওসমানের এই চক্রটি এখন পালিয়ে গেলেও চাদাঁবাজি বন্ধ হয় নাই বলে অভিযোগ নগরবাসির।  



এদিকে পরিবহন, ফুটপাত, মার্কেট, ক্ষুদ্র কিংবা ভাসমান ব্যবসায়ী কারোরই যেন রেহাই নেই চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য থেকে। অসহায় ভুক্তভোগীরা নীরবে পূরণ করেছে চাঁদাবাজদের চাহিদা। আগে অবৈধ স্ট্যান্ড গুলোতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল শহরের চাদাঁবাজদের নিয়ন্ত্রণ করতেন। কিন্তু এখন অন্য আরেকটি দলের কতিপয় নেতাদের হাতে চলে গেছে বলে অভিযোগ নগরবাসির।



অপরদিকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজির পুরো বিষয় সম্পর্কে অবগত থাকলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের বক্তব্য, অভিযোগ ছাড়া ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তবে ভুক্তভোগীরা বলছেন, পরিচয় প্রকাশ হয়ে যাওয়াই তাঁদের বড় শঙ্কার কারণ। অভিযোগ উঠেছে, ঈদ মৌসুমে আসলেই বেড়ে যেত চাঁদার হার।



একাধিক সূত্র বলছেন, শহরে কয়েক হাজার ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের সংখ্যা। প্রতিটি ট্রাকের ট্রিপ প্রতি ১ হাজার টাকা করেও চাঁদা দেয় তাহলে মাসে কয়েক কোটি চাঁদা আদায় হয়। আর এসব কারণেই অস্বাভাবিক হারে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে। প্রভাবশালী পরিবারের লোকজন চাঁদা দাবী করলে তা কেউ না দিতে অস্বীকৃতি করতে পারে না। বেশির ভাগ সময়ই ভয়ে তাঁরা দাবিকৃত চাঁদা দিয়ে থাকেন।



অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চাইলে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন নয়। তবে তাদের আন্তরিকভাবে চাইতে হবে। অবশ্য যারা বাস্তবায়নে থাকবেন তাদের ওপরও বিশেষ নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে।
অপরদিকে অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের ১২টি স্পটে দৈনিক প্রায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। যা মাসে দাঁড়ায় ৩ কোটি টাকা। প্রশাসেনর পুলিশ, দলের নেতা কর্মীসহ পেশাদার চাঁদাবাজদের আশকারায় এই অর্থ তোলা হয়। শহরের সবচেয়ে বেশি চাঁদা তোলা হয় চাষাঢ়া গোল চত্বর থেকে। এই মোড়েই রয়েছে ৬ টি অবৈধ স্ট্যান্ড। চাষাঢ়া মোড় সোনালী ব্যাংক শাখার সামনে সিএনজি স্ট্যান্ড, সুগন্ধ্যা বেকারির সামনে লেগুনা স্ট্যান্ড, শান্তনা মাকের্টের সামনে সিএনজি স্ট্যান্ড, রাইফেল ক্লাবের মোড়, সরকারি মহিলা কলেজ সংলগ্ন এবং কলেজ রোডের সামনে অবৈধ স্ট্যান্ড থেকে চাঁদা  তোলে একটি গোষ্ঠি ফায়দা নিয়ে শহরের যানজট সৃষ্টি করে থাকেন।  



 খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাষাঢ়া মোড়ের প্রায় হাজার খানেক যানবাহন থেকে দৈনিক কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা চাদাঁ উত্তোলন করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এই একটি স্পট থেকেই মাসে ৯০ লাখ টাকা চাঁদা আসে। জেলার শহরে প্রবেশ করতে হলে চাষাঢ়ার এই কয়েকটি স্ট্যান্ড হয়ে চলাচল করতে হয়। শহরের ব্যস্ততম খানপুর মোড়ে চাঁদা তুলে অটো ইজিবাইক চালকদের শহরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। যদিও ৫ আগষ্টের পরে এই চাঁদা তোলা বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নিতাইগঞ্জের ট্রাক স্ট্যান্ডে আনোয়ার-আনু আজমেরী ওসমানের চামচা হিসেবে চাদাঁবাজি চালাতেন।



নগরীর জিমখানা সিএনজি স্ট্যান্ড বিএনপির এক নেতা নাসিক থেকে টেন্ডার নিলেও এখানে ৫ জনের একটি চক্র অবৈধভাবে অটো রিকশা, অটো ইজিবাইক চালকদের থেকে টাকা তোলেন। এখানে প্রায় ৫শ অবৈধ ইজিবাইক চলাচল করে। তাদের থেকে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা নেয় একটি সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ গোষ্ঠি। শহরের নগর ভবনের পাশেই নিতাইগঞ্জ স্ট্যান্ড প্রায় ২০০ অটো চালকদের থেকে প্রতিদিন ৫০ টাকা করে ১০ হাজার টাকা আদায় করা হয়।
সচেতন মহলের মতে এই অবৈধ স্ট্যান্ডগুলোর কারণে শহরের যানজটের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি মীর জুমলা সড়কে অভিযান চালিয়ে অবৈধ দোকানদারদের উচ্ছেদ করা হলেও স্ট্যান্ডগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় নাই। তবে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়া জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে অবৈধ স্ট্যান্ডগুলোও উচ্ছেদ করা হবে। তাছাড়া নাগরিক সমাজ থেকেও দাবী উঠেছে শহরের অবৈধ স্ট্যান্ড যেন উচ্ছেদ করা হয়।




Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন