Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

যুগের চিন্তা নিয়ে দোসরদের ষড়যন্ত্রে ফুঁসছে গোটা নারায়ণগঞ্জ

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

যুগের চিন্তা নিয়ে দোসরদের ষড়যন্ত্রে ফুঁসছে গোটা নারায়ণগঞ্জ

জাতীয় ব্যবসায়ী সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি পদে ওসমান দোসর ঝুট ব্যবসায়ী হাতেমকে সভাপতি বানাতে নিজের পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন সেলিম ওসমান

ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের তত্ত্বাবধানে নারায়ণগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে কুখ্যাত ওসমান পরিবার। ৫ আগস্টের পর ওসমানরা পালিয়ে গেলেও এখনো বিকেএমইএসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনগুলোর দায়িত্বে ওসমানদের দোসররা। জাতীয় ব্যবসায়ী সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি পদে ওসমান দোসর ঝুট ব্যবসায়ী হাতেমকে সভাপতি বানাতে নিজের পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন সেলিম ওসমান। যুগের চিন্তা ধারাবাহিকভাবে তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশ করায় এবার ওসমানদের আশীর্বাদপুষ্ট কিছু ব্যবসায়ী যুগের চিন্তা বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। ফ্যাসিস্টদের বিদায়ের পরও দূর থেকে তাদের দোসরদের দিয়ে কলকাঠি নাড়ছে ওসমানরা। নারায়ণগঞ্জের জনপ্রিয় দৈনিক যুগের চিন্তা বন্ধের এই পায়তারার সংবাদে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ বিশিষ্টজনেরা। তারা ওসমান দোসরদের যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সঙ্গে আছেন বলে জানিয়েছেন।



নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন যুগের চিন্তাকে বলেন, সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা হরণ করে নিয়েছিল স্বৈরাচারি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার। দীর্ঘ ১৬ বছর সংগ্রাম অনেক মানুষের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে ছাত্রন জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। এখন জনগণ সমর্থিত অন্তবর্তিকালিন সরকার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতাছে। জনগণের যে আকাঙ্খা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা আইনের শাসন, মানুষের মৌলিক অধিকার সংবাদপত্রের মত প্রকাশের স্বাধীনতা,মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সম্পুর্ণভাবে বিদ্যমান রাখার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। এবং সমগ্র জাতির প্রত্যাশা এটা। এসময় স্বৈরশাসকের পথ অনুসরণ করার কোন সুযোগ নেই প্রশাসনের। প্রশাসন যদি কারো প্ররচনায় অন্যায় কোন কিছু করে সেক্ষেত্রে আমরা সংবাদপত্রের সাথে থাকবো। এবং সংবাদপত্র বন্ধ করে গণতান্ত্রিক যে অধিকারকে ক্ষুন্ন করতে পারবে না।  ষরযন্ত্রকারীরা ষরযন্ত্র করবে এটাই স্বাভাবিক। যারা স্বৈরাচারের দোসর ছিল, স্বৈরাচারের সাথে কাজ করছে কিংবা নিজেরাও স্বৈরাচার ছিল তারাতো এখন বিভিন্নরকম সুযোগ খুঁজবে। যারা ন্যায় কথা বলছে, ন্যায়ের পক্ষে যারার লড়াই করছে, যারা ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য সংবাদ পরিবেশন করছে হয়ত তাদের বিরুদ্ধে যায়, সেজন্য তারা ক্ষুব্ধ হতে পারে। কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে সব সময় সংবাদপত্র স্বাধীনভাবে কাজ করবে এটাই জাতির প্রত্যাশা। এই ক্ষেত্রে যদি কোন পত্রিকার উপর কোনরকম আঘাত আসে, এই ক্ষেত্রে জনগণ সংবাদপত্রের পক্ষে থাকবে। সেই সাথে আমরা রাজনৈতিক দল বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করি, দেশে গণতন্ত্র চাই, তাই আমরা সংবাদপত্রের সাথে থাকবো।



বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মঈনউদ্দীন আহমাদ যুগের চিন্তাকে বলেন, তারা পারে না, দেশের সব কিছু বন্ধ করে দেয়। শুধু যুগের চিন্তা কেন তারা সবই বন্ধ করে দিতে চেয়ে ছিল। তারা নিজেরাই এখন বন্ধ হয়ে গেছে। যুগের চিন্তা লড়াই করে বেচেঁ আছে এবং বেচেঁ থাকবে। আমরা যুগের চিন্তা পত্রিকার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি। আমরা বিশ্বাস করি যুগের চিন্তা দেশের সমৃদ্ধির জন্য লড়াই করেই যাবে। সকল সময় সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে, সকল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাবে।



মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.সাখাওয়াত হোসেন খান যুগের চিন্তাকে বলেন, সেলিম ওসমানরা বিগত সময়ে সত্যের পক্ষে না থেকে অসত্যের পক্ষে থেকেছে। এবং সব সময় সত্যকে পদদলিত করেছে। সেলিম ওসমানরা এসব করার কারণে জনগণ কর্তৃক ঘৃনিত হয়ে তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। কেউ সংবাদ পত্রের উপর আঘাত করতে আসলে আমরা তাদের ছেড়ে দিব না। সংবাদপত্রের পাশে থাকবো।



নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী এড.মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, যুগের চিন্তা পত্রিকাকে বন্ধ করার জন্য বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ৫ আগষ্টের পরে যদি কেউ দুঃসাহস দেখাতে চায় সে বোকার স্বর্গে বাস করতাছে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের জন্য প্রতিবাদ দেয়া যায়, তারা প্রতিবাদ দিতে পারে। বিকেএমইএর সম্পুর্ণ পরিষদে সেলিম ওসমানের লোক রয়েছে। এখনো ওসমান পরিবারের লোকজনই এখানে কাজ করতেছে। যেই ব্যবসায়ীরা যুগের চিন্তাকে বন্ধ করার পায়তারা করছে তাদের পরিনীতি ভালো হবে না। এদের পরিনীতি খুবই ভয়াবহ হবে। সংবাদ পত্রে হাত দেয়া কোন ব্যবসায়ীর কাজ না। তারা অপকর্ম করবে আর আমরা লিখতে পারবো না  তা হতে পারে না। এটা এখন আর চলবে না। তিনি বলেন, আজকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পরেও তারা এই দুঃসাহস দেখাতে চিন্তা করতাছে কি করে। আমরা তাদের হাত গুটিয়ে ফেলতে বলি, আর না হলে তাদের হাতকে ভেঙ্গে দেয়ার মত ব্যবস্থা করা হবে। তারা যে ব্যবসা বানিজ্য করে খাবে তাও কঠিন হয়ে যাবে। আমি একজন নাগরিক হিসেবে বলতে চাই সেলিম ওসমান অতীতে যা করছে এবং বিকেএমই্এর নেতৃত্বে যা করছে তা আপনারা ভুলে যান। সেলিম ওসমান হচ্ছে হত্যা মামলার আসামি তাকেও ছাড় দেয়া হবে না।  সেলিম ওসমানের দোসর যারা আছের তাদের বিরুদ্ধে যেন প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেয় আমি সেই অনুরোধ করবো।



জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আব্দুল জাব্বার যুগের চিন্তাকে বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে যারা জড়িত, তারা সবাই সত্যকে ভয় পায়। কেননা সত্য প্রকাশ হলে তাদের অপকর্ম বেরিয়ে আসবে। তাছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য তারা প্ল্যান এ, প্ল্যান বি, প্ল্যান সি করে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। তারই ধারাবাহিকতায় সেলিম ওসমান তাদের সিংহাসনে টিকে থাকার জন্য গণমাধ্যম ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের কোন ষড়যন্ত্র সফল হবে না। আমরা মিথ্যাকে যত ভয় পাবো, স্বৈরাচারি দোসররা ততো আমাদের উপর চেপে বসবে। এজন্য এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।



মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড.আবু আল ইউসুফ খান টিপু যুগের চিন্তাকে বলেন, আওয়ামী লীগ হলো স্বৈরতন্ত্রে, এক নায়কতন্ত্রে, বাকশালে বিশ্বাসী আর তাদের দোসর হলো জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি হিসেবে সেলিম ওসমান ছিল আওয়ামী লীগের দোসর। তাই তারাতো সত্যকে প্রকাশ করতে ভয় পাবেই। তারা মিথ্যের পক্ষে থাকবে, কেননা তারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী না, বাকশালে বিশ্বাসি। তাদের অপরাধ অপকর্ম তুলে ধরলে তারা ক্ষুব্ধ হবেই,কোন সংবাদ পত্রের প্রতি যদি কোন অগনতান্ত্রিক আঘাত আসে আমরা ওই সংবাদ পত্রের  পক্ষে থাকবো।বাক স্বাধীনতার বিপক্ষে থাকবো। আর সেলিম ওসমান যদি যুগের চিন্তাকে বন্ধ করার কোন পায়তারা করে সেটার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি থাকবে । সেই সাথে যুগের চিন্তার পক্ষে থাকবে। আমরা সত্যের পক্ষে মিথ্যার বিরুদ্ধে।  আমি প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান রাখবো সেলিম ওসমান হত্যা মামলার আসামী হয়ে এখনো বিভিন্ন জায়গায় কিভাবে ফোন করে। তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। প্রশাসনের অনেক লোকজনে বলে সেলিম ওসমান বয়স্ক লোক, আমার কথা হলো তিনি যদি বয়স্ক লোক হয়ে থাকে দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার চেয়ে বেশি বয়স্ক ছিল, তাকে কেন জেলে পাঠানো হলো। যারা সেলিম ওসমানকে গ্রেপ্তার করতে চায় না তারাও সেলিম ওসমানের দোসর। তারা হয়ত সেলিম ওসমান থেকে কোন বেনিফিট পায়, এজন্য তাকে গ্রেপ্তার করে না।



সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘আমরা সংবাদপত্র বন্ধের বিপক্ষে। সংবাদপত্র বন্ধের এসব প্রক্রিয়াকে আমরা নিন্দা জানাই। সংবাদপত্র সত্যটা প্রকাশ করবে, এটাই আমরা চাই। সত্য সংবাদ তুলে ধরবে, এটাই আমরা চাই।



মহানগর জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি ও হেফাজতে ইসলামের সহ সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, সত্য প্রকাশে যদি কেউ কলকাঠি নাড়ে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখিন করা উচিত। সে যে কেউ হোক। কেননা এটা একটা জঘন্যতম অপরাধ। এই অপরাধের কারণে তাকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। সত্যের বিজয় সব সময় হবে। সংবাদ পত্রের বন্ধের জন্য কেউ কলকাঠি নাড়লে আমরাও তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলবো।



ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ যুগের চিন্তাকে বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর সংবাদ পত্রে আঘাত আনতে চাইলে আমরা তাদের কখনো ছাড় দিব না। আমরা যুগের চিন্তার পাশে আছি। সংবাদ পত্রের প্রকাশের জন্য যা যা সহযোগিতা দরকার আমরা সকল ধরনের সহযোগিতা করবো। প্রয়োজনে আমরা রাজপথে নামবো। জেলা প্রশাসন দোসরদের পক্ষে গেলে আমরা তাদের ছাড় দিব না।



গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন যুগের চিন্তাকে বলেন, গত ২২ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থিত মো.হাতেম জুলায়ের ছাত্র জনতার আন্দোলনকে তান্ডব বলেছেন, সেই সাথে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। তিনি গত সাড়ে ১৫ বছর শেখ হাসিনার আকাম কুকাম, দুর্ণাম বদনাম সহ নানা অনিয়মকে সমর্থন করে গেছেন। এই নারায়ণগঞ্জ শহরে ছাত্রজনতার উপর গোলাগুলির অন্যতম দোসর ছিলেন মো. হাতেম। আমরা পরিষ্কার ভাবে মনে করি শেখ হাসিনা তথা ওসমানদের দোসর ছিলেন তিনি। এই হাতেমকে সেলিম ওসমানের বিশেষ অনুরোধে তাকে বিকেএমইএর সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। যা ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের সাথে বেইমানি বলে মনে করি। দুই হাজার শহীদের  রক্তের বিনিময়ে আজকের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুতরাং শহীদের রক্তের উপর দিয়ে যদি জেলা প্রশাসন মো. হাতেমের পক্ষ নেন তাহলে শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করা হবে। গণমাধ্যমের উপর কোন ধরনের হস্তক্ষেপ আমরা অতীতেও সহ্য করি নাই এখনো করবো না। গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে চলতে দিতে হবে। সংবাদ নিয়ে তাদের কোন দ্বিমত থাকে তা গণমাধ্য এবং আইন আদালত দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে। কারো কথায় যদি জেলা প্রশাসক সংবাদ পত্রকে বন্ধ করার পায়তারা করেন তার পরিনাম অত্যন্ত খারাপ হবে। সেলিম ওসমান কিংবা স্বৈরাচারের দোসরকে রক্ষা করার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের না। জেলা প্রশাসক জনগণের পক্ষে এবং সত্যের পক্ষে থাকবেন। ডিসি ওসমানদের দোসরদের পক্ষে কোনরকম পক্ষ অবলম্বন করতে পারবেন না।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন