Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

ঝুট ব্যবসায়ী হাতেমকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ উল্লেখ করে পদত্যাগ করেন মনসুর

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

ঝুট ব্যবসায়ী হাতেমকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ উল্লেখ করে পদত্যাগ করেন মনসুর

হাতেম,মনসুর আহমেদ,খুরশীদ আহমেদ তানিম

ছাত্রজনতার গণঅভ্যূত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হঠাৎ শেখ হাসিনা পালানোর পর তার দোসররা পালানোর সুযোগ পাননি। অবস্থা বেগতিক দেখে তখন অনেকেই কৌশল নেন রঙ বদলানোর। নারায়ণগঞ্জে ওসমানদের আয়ের বড় উৎস বিকেএমইএ আগস্ট থেকেই নানা ঘটনা-অঘটন দৃশ্যের অবতারণা করেই যাচ্ছে। শুরুটা করে ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ ক্ষমতার প্রভাবে ১৪ বছর সভাপতির পদ আকড়ে থাকা সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। অসুস্থতার কথা বলে ২৪ আগস্ট লেখা পদত্যাগপত্র বিকেএমইএতে পাঠান। সেই পদত্যাগপত্রে তিনি তার গত ১৪ বছরের অন্যতম দোসর ঝুট ব্যবসায়ী হাতেমকে সভাপতি করার নির্দেশ দেন। ব্যাপারটা এমন যেন পালিয়ে যাওয়া হাসিনা যাওয়ার সময় কাউকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার দিতে হবে সেটি হুকুম দিয়ে যাচ্ছেন। এ যেন মামা বাড়ি আবদার। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ’র সভাপতি পদের ক্ষেত্রে এমনটিই ঘটেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সেলিম ওসমান তার পদত্যাগপত্রেই ওসমান পরিবারের অন্যতম দোসর হাতেমকে সভাপতি করার নির্দেশ দিয়ে গেলেন। এই চিঠি ফাঁস হওয়ার পরেই আসলে বিকেএমইএ’র ব্যবসায়ীদের টনক নড়ে। ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মনসুর আহমেদ ও পরিচালক খুরশীদ আহমেদ তানিম পদত্যাগ করেন।


পদত্যাগপত্রে তারা দুইজনই বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ উল্লেখ করে বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদী আচরণ এবং অনৈতিক কার্যক্রমের অভিযোগ তুলেছেন। ২৮ নভেম্বর) সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি বরাবর পদত্যাগ দেন এ দুই নেতা।  তাদের অভিযোগ, ‘বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের নেতৃত্বে সংগঠনের মূল্যবোধ ও নৈতিক মানদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে বর্তমান নেতৃত্বের অধীনে এমন কিছু কর্মকাণ্ড ঘটছে যা আমাদের আমাদের সংগঠনের মূলনীতি- ন্যায়পরায়ণতা, সততা এবং গণতান্ত্রিক চর্চাকে লঙ্ঘন করছে।” গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের বরাতে সংগঠনের এ দুই পরিচালক বলেন, “বর্তমান সভাপতি (মো. হাতেম) এবং কিছু সিনিয়র বোর্ড সদস্যরা ফ্যাসিজমকে সহযোগিতা করেছে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও সাধারণ ছাত্র-জনগণের ওপর নির্যাতনকারী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন।” তারা আগামী ৫ ডিসেম্বরে ডাকা সংগঠনের বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) ও বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) বাতিলের আহ্বান জানান।  তারা আরও বলেন, “মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এবং আমাদের বিবেকের তাড়নায়, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, যারা এই ফ্যাসিবাদকে সমর্থন করে, তাদের সঙ্গে আর কাজ করব না।


আশ্চর্যের বিষয় এরদুই দিন পরে অদৃশ্য এক চাপে নিজের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেন মনসুর। তবে নিজের পদত্যাগপত্রে গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে যে তথ্য দিয়েছেন তা ডকুমেন্ট হিসেবেই রয়ে যায়। গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে মনসুর বলেন, “বর্তমান সভাপতি (মো. হাতেম) এবং কিছু সিনিয়র বোর্ড সদস্যরা ফ্যাসিজমকে সহযোগিতা করেছে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও সাধারণ ছাত্র-জনগণের ওপর নির্যাতনকারী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন।”


অবশ্য ঝুট ব্যবসায়ী হাতেম সর্বশেষ তার প্রমাণ দিয়েছেন গত ২২ জুলাই। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেশের ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বৈঠক করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বৈঠকে বিকেএমইর তৎকালীন নির্বাহী সভাপতি (বর্তমান সভাপতি) মো. হাতেম বলেন, 'এরকম একটি সঙ্কটকালে আমরা এমন সিচ্যুয়েশন দেখবো সেটা আশা করিনি। যে তাণ্ডব আমরা গত কয়েক দিনে দেখেছি, আমরা আশা করব, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্য যারা আছেন, তারা তা উদ্ঘাটন করবেন এবং আইনের আওতায় আনবেন। আমরা সরকারের পাশে সবসময়ই ছিলাম, এখনো আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো।’

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন