বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হওয়া হত্যা মামলায় ক্ষতবিক্ষত নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এমনকি আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শামীম ওসমান সবচেয়ে বেশি মামলার আসামী হয়েছেন। ছাত্র জনতার আন্দোলন কে দমাতে সরাসরি মাঠে নেমে তারা গুলিবর্ষন করেন। শামীম ওসমানের সাথে তার বিয়াই ফয়েজ উদ্দিন  আহম্মেদ লাভলুও তার সাথে গুলিবর্ষণ করেন। এছাড়া ওয়ন ওসমানের শ্যালক মিনহাজুল ইসলাম ভিকি বাবা তালুর সাথে মিলে গত বছরের ১৯ জুলাই ছাত্রজনতার উপর গুলি চালায়। আর এজন্য ৫  আগষ্টের পরে হত্যা মামলায় তারা সবচেয়ে বেশি মামলার আসামী হন। যদিও তারা শেখ হাসিনার পালানোর পর নিজেরাও পালিয়ে রয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি দেখা যায় গডফাদারখ্যাত সাবেক এমপি শামীম ওসমানের বিয়াই ফয়েজ উদ্দিন আহম্মেদ লাভলুর গুলশান হল নামে ডিআইটিতে সিনেমা হল রয়েছে। এখানকার ২য় তলা অফিস রুমে বসে নানা অপকর্ম চালিয়েছে লাভলু। যদিও তারা পালিয়ে যাওয়ার পর সিনেমা হলটি এখন বন্ধ রয়েছে। লাভলুর সাথে শহরের এক বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষিকার সাথে দহরম মহরম সম্পর্ক ছিলে বলে জানান একাধিক ব্যক্তি। দিনের বেলায় তারা এই সিনেমা হলে দেখা করতেন আর রাতের বেলায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের রুমে বসে গোপন মিটিং সারতেন। ভুদিস্যুতা চাদাঁবাজি, টেন্ডারবাজি, ঝুটসন্ত্রাস সকল কিছুর অপকর্ম করে এখন পালিয়ে রয়েছে ফয়েজ উদ্দিন আহম্মেদ লাভলু।

অপরদিকে সম্প্রতি সময়ে লাভলুর মালিকানাধীন গুলশান সিনেমা হলে বড় করে একটি ব্যানার টানিয়ে রাখা হয়েছে। আর সেই ব্যানারে লেখা রয়েছে তাদেরকে ধরিয়ে দিন। আর ব্যনারো উপরের সারিতে শামীম ওসমানের ছবি, আরেক সাইডে লাভলুর মেয়ের জামাই ওয়ন ওসমান ও আজমেরী ওসমানের ছবি রয়েছে। নিচের সারিতে বড় করে ফয়েজ উদ্দিন লাভলু ও তার ছেলে ভিকির ছবি রয়েছে। এছাড়া ব্যানারে ২০২৪ সনের ১৯ জুলাই তারা যে ছাত্র জনতার উপর যে ভাবে হামলা চালিয়েছে তার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া ব্যানারে লেখা রয়েছে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র জনতার উপর প্রকাশ্যে গুলি করা শামীম ওসমান  ও তার দোসরদের গ্রেপ্তার করতে হবে। প্রচারে নারায়ণগঞ্জের সচেতন জনগণ। ’

এছাড়া গডফাদারখ্যাত সাবেক এমপি শামীম ওসমানসহ তার ওসমানীয় সম্রাজ্যের নেতাকর্মীরাও হত্যা মামলায় জর্জরিত হয়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের মধ্যে কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে জেলখানায় গিয়েছে। তাছাড়া সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীও গ্রেপ্তার হয়ে জেলে রয়েছেন। ১৩ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার যুবলীগের আহ্বায়ক  সাবেক নাসিক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতিকে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনিও সন্ত্রাসী শামীম ওসমানের ওসমানীয় সম্রাজ্যের অন্যতম অপরাদী হয়ে ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

এদিকে ওসমান সম্রাজ্যের অন্যান্য অপরাধীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন। যদিও ইতোমধ্যে ওসমান সম্রাজ্যের অপরাধীদের মাঝে অনেকে পালিয়ে দেশের বাইরে চলে গেছে। যারা দেশের বাইরে যেতে পারে নাই তারা আত্মগোপনে গিয়ে পালিয়ে রয়েছেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের মানুষ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়েছেন। এছাড়া ওসমানীয় সম্রাজ্যের অপরাধীরা কিভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে এনে বিচার করার দাবী জানান।

 উল্লেখ্য গত বছরের গত ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার তোপের মুখে পরে দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে শাসন করা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। আর এতে আরেকটি দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে একচেটিয়া শাসন এবং শোষন করা শামীম ওসমান সহ পুরো ওসমান পরিবারের পতন ঘটে। যাদেরকে গডফাদার, ভন্ডামী, বিশ্ববেহায়া সহ বিভিন্ন উপাদিতে আখ্যায়িত করেছে নগরের রাজনৈতিক বোদ্ধমহল। তাদের অপকর্মের প্রধান সহযোগি ছিলেন ওয়ন ওসমানের শশুর লাভলু ও শ্যালক  মিনহাজুল ইসলাম ভিকি। তাই তাদের ধরিয়ে দিতে তাদেরই প্রতিষ্ঠানে মানুষ ব্যনার টানিয়ে দিছে।