Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

দুই মহাসড়কে ছিনতাই ডাকাত আতঙ্ক

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

দুই মহাসড়কে ছিনতাই ডাকাত আতঙ্ক

 দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ও পণ্য পরিবহনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুট ঢাকা-চট্টগ্রাম,  ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। সম্প্রতি এ মহাসড়কে ডাকাত-ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত রাতে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। এতে করে অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়ে ফিরতে হয়ে। তাদের ভাষ্য, অনেক সময় গাড়ির চালক জড়িত থাকেন ডাকাতির সঙ্গে। যদিও ভুক্তভোগীদের দাবি, মহাসড়কে হাইওয়ে কিংবা থানা-পুলিশের কোনো নজরদারি নেই। বিশেষ করে রাত গভীর হলেই মহাসড়ক অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। সম্প্রতি ডাকাতি ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যের কারনে মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।



ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, র‌্যাব পরিচয়ে কুমিল্লার দুই দুবাই প্রবাসীকে মামলার ভয় দেখিয়ে অস্ত্রের মুখে বাস থেকে নামিয়ে নগদ ২১ লাখ টাকা, পাসপোর্ট ও মোবাইলসহ মালামাল লুটে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ১৪ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানাধীন কেওঢালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ (২১ জানুয়ারি) পর্যন্ত জড়িত কেউ গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।



 এদিকে মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার আরাগ আনন্দপুর গ্রামের আবু হানিফ ও তার বন্ধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজিব ভূঁইয়া দুবাই থেকে ১৪ জানুয়ারী ভোরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছানোর পর তারা দুপুর দেড়টার দিকে এশিয়া লাইন পরিবহনের একটি বাসে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।



মামলার বাদী প্রবাসী আবু হানিফ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘বাসটি যখন বন্দর থানার কেওঢালা এলাকায় পৌঁছলে সাদা রঙের একটি হাইয়েস গাড়ি (মাইক্রোবাস) এসে বাসের সামনে দাড়িয়ে গতিরোধ করে। তখন র‌্যাবের পোশাক পরিহিত ৩/৪ জন ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাফ ও পিস্তল হাতে গাড়ীতে উঠে আমাদের (আবু হানিফ ও রাজিব) বিরুদ্ধে মামলা আছে বলে টানাহেচড়া করতে করতে সাথে থাকা দুইটি ব্যাগসহ জোর করে বাস থেকে নামায়। এসময় আমরা চিৎকার করতে থাকি, যাত্রীরাও তাদের বাধা দেয়। ওই সময় গাড়ির স্টাফরা ঘটনার ভিডিও করে। ( যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে) কিন্তু তারা কারো বাধা কর্ণপাত না করে আমাদের নামিয়ে তাদের মাইক্রোতে তুলে হাত-পা ও চোখ বেঁধে মারধর করতে থাকে। এরপর  আমাদের থেকে কিছু ডলারসহ ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, ৩টি পাসপোর্ট, ২টি মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান মালামাল ছিনিয়ে নেয় । ওই মাইক্রেবাসে করেই বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে বিকাল ৫টার দিকে ঢাকার ডেমরা এলাকায় নির্জন রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়। তখন এই বিষয়টি র‌্যাব ও থানা পুলিশকে জানানো হয়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ১৬ জানুয়ারী বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন ।



এ ঘটনায় র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক বলেন, র‌্যাবের পোশাক পরিহিত যেসব দুর্বৃত্ত বাস থামিয়ে দুই প্রবাসীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তুলে নিয়ে টাকাসহ মালামাল লুটে নিয়েছে তারা র‌্যাবের কেউ নন। ওই  সময় ধারণ করা ভিডিও থেকে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
এই ঘটনার রেশ না কাটতেই  ২০ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। একই দিনে সিদ্ধিরগঞ্জে মটর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে। বিকাশ এজেন্টের ব্যাগ ভর্তি ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ৪ টি মোবাইল ফোন ছিনতাই ও একটি বাড়ির সিড়ির নিচ থেকে তালা কেটে একটি মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে।



জানাগেছে, ২০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় বিসমিল্লাহ টেলিকম নামে এক বিকাশ এজেন্টর মালিক মো. জামান দোকান বন্ধ করে একটি ব্যাগে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ৪ টি মোবাইল ফোন বহন করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনার সময় অজ্ঞাত ছিনতাইকারীরা তার মাথায় আঘাত করে টাকাসহ ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরআগে সোমবার একই এলাকায় বিকেলে মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে।

পৃথক দুটি ঘটনার অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার পরই আমি টিম পাঠিয়েছি।
এর আগে গত বছরের ১৮ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগরের ইপিজেড এলাকায় একটি গাড়ি থেকে প্লাস্টিক দানা নিয়ে যায় চোরেরা। ২ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ১৫ টন ঢেউটিন নিয়ে মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয় বিসমিল্লাহ ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মালিকানাধীন একটি ট্রাক। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে দাউদকান্দি ব্রিজ পার হওয়ার পর ডাকাতেরা ট্রাকটি আটকে ট্রাকচালক শিমুলকে বেঁধে ফেলে। পরে পণ্যসহ ট্রাকটি নিয়ে যায়। পরদিন গাড়িটি  নারায়ণগঞ্জের গাজী গ্রুপের টায়ার ফ্যাক্টরির (রূপগঞ্জ) সামনে খালি অবস্থায় পাওয়া যায়।



এবিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনকল রিসিভ করেন নাই।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন