Logo
Logo
×

বিশেষ সংবাদ

ওসমান দোসররা নির্বাচনে থাকায় ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

ওসমান দোসররা নির্বাচনে থাকায় ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ

 দীর্ঘ ১৬ বছর হোসিয়ারী ব্যবসায়ীদের আস্থার সংগঠন বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন ছিলো সন্ত্রাসী ওসমানদের নিয়ন্ত্রণে। যাকে ঘিরে বছরের পর বছর ওসমানদের যারা পদলেহনকারী ছিলেন তারাই প্যানেল সাজিয়ে জিম্মি করে রেখেছিলেন হোসিয়ারী এসোসিয়েশন। কোন যোগ্য প্রার্থী বা সকল ব্যবসায়ীদের পছন্দের কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে ও অত্যাচার, নির্যাতনের ভয়ে কেউ অংশ ও নিতে চাইতেন না। যাকে ঘিরে নির্বাচনবিহীনভাবে সিলেকশনেই হয়ে যেত হোসিয়ারী সমিতির কমিটি।

এদিকে গত ৫ আগষ্টের পট পরিবর্তনের পর ওসমান ও তাদের মূল দোসররা পালিয়ে গেলে সংস্কারের মাধ্যমে হোসিয়ারী সমিতির নির্বাচন কেন্দ্রিক তফসিলসহ নির্বাচনের আগ মুহুত্বের সকল প্রকারের কার্যক্রম শেষ হয়। কিন্তু বর্তমানে বছরের পর বছর জিম্মি থাকা হোসিয়ারী সমিতির নির্বাচন না হওয়ায় হতাশা দেখা মিলছিলো ব্যবসায়ীদের কিন্তু সকল আশা আকাঙ্খার উর্ধ্বে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে (২০২৫-২০২৭) সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে হোসিয়ারী সমিতির দুই প্যানেলের ৩৩ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। যার মধ্যে বর্তমানে বদু প্যানেলে থাকা ৯ জনই বিগত দিনের ওসমানদের হাতে বানানো শাহজালাল আবার নাজমুল আলম সজলের প্যানেলেই ছিলো। এর বাহিরে আরো ৩ জন রয়েছে। দুই প্যানেলের প্রায় ১২ জন যারা বিগত দিনে ওসমানদের পদলেহনকারী ছিলেন।



এদিকে জানা গেছে, গত ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসা পর থেকে বাংলাদেশ হোসিয়ারি সমিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন ওসমান পরিবার। ওই সময় প্রয়াত নাসিম ওসমানের পর সেলিম ওসমান আঙ্গুলের ইশারায় করা হয় হোসিয়ারি সমিতি কার্যনির্বাহী কমিটি। ২০১৪ সালে সেলিম ওসমানের ইশারায় হোসিয়ারী সমিতির সভাপতি হন নাজমুল আলম সজল। শহর স্বেচ্ছাসেবকলীগের তৎকালীন সভাপতি ছিলেন তিনি। যিনি বিগত দিনে একগুচ্ছ করে রেখেছিলেন হোসিয়ারী এসোসিয়েশন। হতে দেয়নি কোন নির্বাচন সিলেকশনের মাধ্যমেই সজল-কবির বারবারই সভাপতি ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এরা ব্যবসায়ীদের উপর বহু মাত্রায় নির্যাতনের খড়গ চাপিয়ে দিতেন। এ ছাড়া সেলিম ওসমানের নামে বিভিন্ন কৌশলে চাঁদাবাজি, পিকনিকের নামে চাঁদাবাজি, অনুষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজি করে সবই শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান ও সজল-কবিরের পকেটে যেত। বিভিন্ন অপকর্মের ভয়ে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর সজল দুবাই পালায়। সজল ও কবির হোসেনের অনুপস্থিতিতে তাদের অন্যতম দোসর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন সাঈদ আহম্মেদ স্বপন। যিনি বিগত দিনে সজল ও কবিরের ঘনিষ্ঠ লোক ও এসোসিয়েট গ্রুপের পদে ছিলেন।
 
এদিকে বিগত দিনে ওসমানদের দোসরদের তালিকায় নাম রয়েছে বর্তমানে ও নানা তদবিরে বহাল তবিয়তে ও নির্বাচনের দুইটি প্যনেলেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছেন। যার মধ্যে বদু প্যানেলে ৯ জন ও স্বতন্ত্র ঐক্য মালিক ফোরামের প্যানেল ৩ জন রয়েছে।



বদু প্যানেলে ওসমানদের বিগত প্যানেলের মধ্যে রয়েছেন, সাঈদ আহমেদ স্বপন, আলহাজ্ব মোঃ মনির হোসেন, বৈদ্যনাথ পোদ্দার, আলহাজ্ব মোঃ আবদুল হাই, হাজ্বী মোঃ শাহীন হোসেন, আলহাজ্ব নাছিম আহমেদ, আলহাজ্ব মোঃ নাছির শেখ, আলহাজ্ব মোঃ মিজানুর রহমান, মোঃ আতাউর রহমান। এরা ওসমানদের হাতে বানানো প্যানেলে ছিলেন বর্তমানে আবারো বদিউজ্জাম্মান বদুর প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়ে হোসিয়ারী সমিতি জিম্মির পায়তারায় রয়েছেন। একই সাথে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজা রিপনের নেতৃত্বধীন স্বতন্ত্র মালিক ঐক্য ফেরামে সেই ওসমাদের বিগত দিনের প্যানেলের কমিটিতে স্থান পাওয়াদের মধ্যে রয়েছে ৩ জন রয়েছে। মোঃ আবুল বাশার (বাসেত), সুশান্ত পাল চৌধুরী, বাবুল চন্দ্র দাস। যাকে ঘিরে বর্তমানে হোসিয়ারী সমিতির দুই প্যানেলেই ফ্যাসিবাদীদের দোসরদের লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা নিয়ে ব্যবসায়ী ভোটারদের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে।



এদিকে ওসমান ভোট নিয়ে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতাকালে শাহজালালের পর নাজমুল আলম সজল হোসিয়ারি সমিতির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ওই সময় থেকে হোসিয়ারি একাধিক প্রভাবশালী মালিকরা ওসমানদের আশ্রয় প্রশয়ে চলে যান। এতে করে বিগত ১০ বছরে হোসিয়ারি সমিতির কমিটিতে ওসমানের সমর্থন নিয়ে সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি সহ-সভাপতি সহ পরিচালক পদে আসীন ছিলেন। তা ছাড়া বিগত দিনে গুটি কয়েকজনের সিন্ডিকেটে জিম্মি হয়ে পড়েছিলো পুরো হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের আওতাধীন সাধারণ যোগ্যতা যাচাই সম্পূর্ন সদস্যরা। সুবিধা নিয়েছেন উড়ে এসে জুড়ে বসারা। প্রথম প্রথম প্রতিবাদ যারাই করতো তাদের উপর নির্যাতনের খড়গ এতো বেশি ছিল যে পুলিশ পর্যন্ত অভিযোগ করার দুঃসাহস করতে পারেনি কেউ। তাই বছর ঘুরে বছর আসে, হোসিয়ারি এসোসিয়েশনের নির্বাচনে নীরবে নিভৃতে সিন্ডিকেট মেম্বাররাই বারবার দায়িত্বে এসছে। নারায়ণগঞ্জের সাবেক সাংসদ নাসিম ওসমান মারা যাওয়ার পর ব্যবসায়িক নেতা সেলিম ওসমান সাংসদ হওয়ার পর থেকেই তিনি তার পছন্দের মানুষদের কাছেই হোসিয়ারি সমিতি জিম্মি রেখেছিলেন। পেশীশক্তিতে কুক্ষিগত হয়ে ছিলো পুরো সংগঠন। বিগত আওয়ামীগের ট্রাম্পে সেলিম ওসমানের দয়ায় যারা কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন এই হোসিয়ারী সমিতি তারা হলেন, সভাপতি শেখ মোঃ নাজমুল আলম সজল, সহ-সভাপতি (জেনারেল) মোঃ কবির হোসেন, সহ- সভাপতি (এসোসিয়েট) সাঈদ আহমেদ স্বপন, পরিচালক (জেনারেল) মোঃ আতাউর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আলী আহমেদ শেখ, আলহাজ্ব মোঃ আবদুল হাই, আলহাজ্ব মোঃ মনির হোসেন, বাবু বৈদ্যনাথ পোদ্দার, মোঃ আবুল বাশার (বাসেত), পরিচালক (এসোসিয়েট) আলহাজ্ব মোঃ নাছির, শেখ, হাজ্বী মোঃ শাহীন হোসেন, আলহাজ্ব নাছিম আহমেদ, আলহাজ্ব মোঃ আতাউর রহমান, আলহাজ্ব মোঃ মিজানুর রহমান। এরা জিম্মি করে রেখেছিলেন হোসিয়ারী এসোসিয়েশন। এদিকে তাদের মূল মাথা শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান এবং নাজমুল আলম সজল-কবির হোসেন গণঅভুন্থানে পালিয়ে গেলে বর্তমানে নয়া প্যানেলের বদু ও রেজা রিপনের হাত ধরে আরো মাথা চাড়া দেওয়া পায়তারা করছেন সেই বিগত দিনের ওসমান দোসররা।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন