বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে একশনে সিভিল সার্জন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

 

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নারায়ণগঞ্জে অধিক সংখ্যক অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। এই সকল ক্লিনিকে অদক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে পরিচালিত অধিকাংশ ক্লিনিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ভুল চিকিৎসায় প্রাণহানির ঘটনার অভিযোগ রয়েছে। তবে অবৈধ ক্লিনিক বন্ধসহ চিকিৎসাসেবার মান নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

 

সেই সাথে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযানের নামার ঘোষনা দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছেন।

 

এদিকে জানা যায়, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ অবৈধ ক্লিনিক সিলগালা করার পাশাপাশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন কারণে জরিমানা করেছে। একই সাথে নগরীর একাধিক প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছেন। তার মাঝে কাগজপত্রহীন অবৈধ ভাবে খানপুর এলাকার আয়েশা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইমন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও মেডিএইড নামে তিনটি অবৈধ প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হয়।

 

এছাড়া গ্যাস্ট্রোলিভ, সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আকিজ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বন্দরের কদমরসূল ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সর্তক করা হয়। অভিযোগ রয়েছে এই সকল প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ নগরীর খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের দালাল সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। তাছাড়া ইমন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকের ভাই রবিন ৩শ’ শয্যা হাসাপাতালে দালালি করে এক নিজেই ক্লিনিক খুলে বসেছে। তার প্রতিষ্ঠানে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হলেও তিনি অবৈধ ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেন।

 

অপরদিকে সতর্ক করা গ্যাস্ট্রোলিভ প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে পরিচালনায় রয়েছেন ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে ডাক্তার সাইফুল ইসলাম, এখান থেকে বদলী হওয়া ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের সুপারের সাবেক সহকারি সোহেল ও মুক্তা। মুক্তার পিতা হারুন এখানে দালালি করে রোগিদের ভাগিয়ে নেন। তাছাড়া মুক্তা, তার মা-পিতা হারুন মিলের খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের দালাল সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। তাদের প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হলেও তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে।

 

বন্দর উপজেলায় নিবন্ধনবিহীন উপজেলার স্কুল ঘাট সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত ময়না জেনারেল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বন্দর ইউনিয়নের হাজী সাহেব মোড়ে ডিজিল্যাব ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করে বন্ধ করে দেয়া হয়। একই সাথে প্রতিষ্ঠান দুটিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে ৪ টার দিকে বন্দরে এই অভিযান চলে।  

 

একই দিনে সোনারগাঁ উপজেলার কাচঁপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কাঁচপুর জেনারেল হাসপাতালকে ১ লক্ষ টাকা, কাঁচপুর মডার্ন হাসপাতালকে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে শুভেচ্ছা জেনারেল হাসপাতালকে সিলগালা করে দেয়া হয়।

 

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এমন অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।তাছাড়া অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। ভুল জায়গায় চিকিৎসা নেওয়ার চেয়ে, চিকিৎসা না নেওয়াই ভালো বলেও জানান তিনি।

 

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে এতো অনিয়ম অসঙ্গতি, মন্ত্রী হিসেবে এর দায় এড়ানো সম্ভব নয়। এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর