সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

অবৈধ পার্কিংয়ে নগরজুড়ে নৈরাজ্য, বাড়ছে যানজট

তানজিলা জামান তিন্নি

প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২২  

মার্কেট আছে, গাড়ি আছে, কিন্তু নেই পার্কিং। ফলে সড়ক দখল করে গড়ে উঠেছে গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা। এতে বাড়ছে যানজট ও জনদুর্ভোগ। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠছে শহরের পথঘাট, অলিগলি। সৃষ্টি হচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতা। নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

 

 রাস্তা দখল করে পার্কিংয়ের কারণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনাও। নগরীতে পার্কিং নৈরাজ্য দীর্ঘদিনের। দিন যতই যাচ্ছে, ততই এ সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে। অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, শহরের ৪০ শতাংশ যানজটের জন্য দায়ী অবৈধ গাড়ি পার্কিং।

 

এজন্য প্রতিবছর অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি হচ্ছে কয়েক হাজার কোটি টাকা। নারায়ণগঞ্জ হচ্ছে দেশের ধনী জেলা। এখানে গামের্ন্ট শিল্প সহ দেশের খাদ্য দ্রব্যের বৃহত্তর পাইকারি বাজার এই শহরে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগরীর বহুতল ভবনে নেই পার্কিং সুবিধা। ফ্ল্যাট অনুপাতে আরও বহুতল ভবনে পর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থা নেই। 

 

ফলে ব্যস্ত সড়কের উপর অবৈধভাবে বাড়ছে গাড়ি পার্কিং। এতে শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এসব অবৈধ পার্কিং নগরবাসীর জীবনে বিষফোঁড়া হয়ে উঠছে। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন নারায়ণগঞ্জবাসী। 

 

পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে গাড়ি, কমছে সড়ক। আর এতে করে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। বিভিন্ন সময় পার্কিং নৈরাজ্য নিয়ে একাধিক সংস্থা কাজ করার কথা বললেও, সমস্যার জটিলতা কমেনি। বরং এই সময়ে পার্কিং নৈরাজ্য বেড়েছে বহুগুণ।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরীর অধিকাংশ ভবনের নেই পার্কিং-এর ব্যবস্থা। বড় বিপণি বিতানগুলোতে পার্কিং ব্যবস্থা থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এ ছাড়া সড়কের পাশেই গড়ে ওঠা মার্কেটগুলোতে রাখা হয় না পার্কিংয়ের সুবিধা। ফলে গাড়ির মালিকের ইচ্ছা ও চালকদের সুবিধার জন্য সড়ককেই বেছে নেন।

 

 ব্যস্ত শহরের বাণিজ্যিক এলাকা, কিংবা মার্কেটের সামনের রাস্তায় চোখে পড়ে অবৈধ গাড়ি পার্কিংয়ের দৃশ্য। ফুটপাথ থেকে শুরু করে যেখানে সেখানে রাখা হচ্ছে এসব গাড়ি। সুবিধা মতো পার্কিংয়ের জায়গা না থাকায় যত্রতত্র গাড়ি রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকেন চালকরা। সড়ক দখল করে গড়ে তোলেন বাস কিংবা কার স্ট্যান্ড। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। বিশেষ করে অফিস সময়ে অসহনীয় যানজটের ভোগান্তির শিকার হতে হয় কর্মজীবীদের।


 
অন্যদিকে তাছাড়া যেখানে সেখানে অবৈধ পার্কিং আর ফুটপাতে হকার দের দখলে বেহাল রূপ ধারন করেছে নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক। সড়কের দুই পাশে রয়েছে মার্কেট, রেস্টুরেন্ট, ডায়াগনিস্টিক সেন্টার সহ আসে পাশের মার্কেট গুলোর সামনে বেশির ভাগ অবৈধ ভাবে সড়ক দখল করে পার্কিং করা হয়। সাথে চালানো হয় ফুটপাতের অবৈধ ব্যবসা।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মানুষের চলার রাস্তায় অবৈধ ভাবে পার্ক করা থাকে মটর সাইকেল। মূলত পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও মার্ক টাওয়ারের সামনে থাকে বাইক, বাধন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে প্রাইভেট গাড়ি এবং উপ-ডাকঘরের সামনে সিএনজি পার্ক করা থাকে। 

 

যার কারণে অসুস্থ রোগীরা ও সাধারন পথযাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। পপুলার ডায়াগনস্টিক ও মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা ভিড় জমান এবং ফুটপাতে পার্ক করেন তাদের মটর বাইক। যাতে ভোগান্তিতে পড়েন পথযাত্রী ও অসুস্থ রোগীরা। মূল সড়কে প্রাইভেট গাড়ি, রিক্সা এবং সিএনজি পার্ক করা থাকে ।

 

 যার কারণে মূল সড়কে প্রাই যানজটের সৃষ্টি হয়। বাদ পড়েনি পপুলারের পাশের গল্লি। সেখানে অবৈধ হকাররা চালাচ্ছে নিজেদের ব্যবসা। অসুস্থ রোগিদের জন্য খাবার বিক্রি হয় যা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তাছাড়া সেখানে খাবার ছাড়াও নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক পন্য বিক্রি করা হয় ভ্যানে। যা সম্পূর্নই পপুলার সংলগ্ন।

 

এ বিষয় এক পথচারী বলেন, মানুষের কাজ দূর্ভোগ পোহানো, এখানে বাইক রাখলেও কেউ কিছু বলার নেই। এখানে ফুটপাতে বাইক রাখা এখন নিত্য দিনের ঘটনা।

 

ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের বাইক ফুটপাতের উপর রেখে চলে যান ডাক্তার দের সাথে ভিজিট করতে। পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিলেও ফুটপাতে বাইক রাখা যেন থামছেই না। ঔষধ কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধির সাথে কথা বল্লে তিনি জানান, এখানে রাখা বাইক গুলো আমাদের না। আর এখানে মূলত সবসময় বাইক থাকে না।

 

পপুলারের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিরাপত্তা কর্মী জানান, এখানে রাখা বাইক গুলো তাদের কর্মকর্তা দের নয়। এটা যারা রোগী দেখতে আসেন বাইক গুলো মূলত তারাই নিয়ে আসেন।

 

এ বিষয় চাষাড়া পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ টিআই করিম বলেন, আগের থেকে অনেক কমে গেছে আমরা একেবারে এটা কমাতে পারিনি কিন্তু এটা আরো কমবে। আমরা গিয়ে তাদের সড়িয়ে দিয়ে আসলেও কিছুখন পর তারা আবার চলে আসেন।এসএম/জেসি 

এই বিভাগের আরো খবর