রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪   ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

আনোয়ার-আরাফাত মুখোমুখি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০২৪  

 

 

পদ রক্ষা ও আটকানোর খেলা চলছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগে। বর্তমান কমিটির শীর্ষ নেতারা নিজেরাই এ খেলার জন্ম দিয়েছে অভিযোগ দলের একটি অংশের। গত ১২ ফেব্রুয়ারি মহানগরের ১৭ টি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষনা হওয়া নিয়ে দলের বর্তমান কমিটির সাথে কোন আলোচনা-পরামর্শ না করেই কমিটি ঘোষনা করেন সভাপতি সেক্রেটারি। এমনকি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি নাসিক মেয়র আইভী সহ অন্য সংসদ সদস্যদেরও।

 

 ফলে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটির মাঝে দুটি গ্রুপ তৈরী হয়ে একটি অংশ শীর্ষ নেতাদের বিরোধিতায় নেমেছে। একই সাথে  মহানগর আওয়ামী লেিগর সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহাকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করেছে। বিবদমান দুপক্ষই অদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য একে অন্যকে দায়ী করছে। তাছাড়া সভাপতি সেক্রেটারির অনুসারীরা জি এম আরাফাতকে গণধোলাইয়ের ঘোষনা দিয়েছে। যা নিয়ে উত্তপপ্ত পরিবেশ বিরাজমান। কোন ভাবেই থামছে না মহানগরের উত্তপ্ত পরিবেশ। আজকে এক গ্রুপ বললে কালকে আরেক গ্রুপ বলে। এনিয়ে দলের মাঝে সমর্থকদের নিয়ে দুপক্ষের মাঝেই উত্তেজনা পরিবেশ বিরাজমান।


এদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগে ২৭টি ওয়ার্ডের মাঝে সদর বন্দরের ১৭টি ওয়ার্ডে আংশিক কমিটি ঘোষনা নিয়ে এই কোন্দল তৈরী হয়ে রয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের ১০টি ওয়ার্ডে এখনো পর্যন্ত সম্মেলন করতে ব্যর্থ হয়েছে সভাপতি সেক্রেটারি। এই দশ ওয়ার্ডের কমিটি হওয়ার আগেই মহানগরে বিশৃঙ্খলা তৈরী হয়ে রয়েছে। তবে সভাপতি সেক্রেটারির ঘোষিত ১৭টি ওয়ার্ড কমিটিতে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, রাজাকারপুত্র ও হত্যা মামলার আসামিদের নাম আসায় দলের একটি অংশ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মাঠে নেমেছেন। 

 

এছাড়া সভাপতি সেক্রেটারি স্বজন প্রীতি সহ বিভিন্ন ফায়দা নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া বর্তমান নেতারা দলের ত্যাগীদের বাদ দিয়ে নিজেদের অনুসারীদের কমিটিতে স্থান দিয়েছেন এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। আর এনিয়ে মহানগরে একটি অংশ ঘোষিত কমিটি নেতাদের পদ রক্ষা এবং আরেকটি অংশ এই কমিটি আটাকানোর খেলায় তৎপর হয়ে মাঠে নেমেছে। এই খেলা যে কবে শেষ হবে তাও জানেন না নেতা কর্মীরা।


মহানগর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঘোষিত কমিটির প্রতিবাদে সচ্চার থেকে সভাপতি সেক্রেটারির বিরুদ্ধে কড়া হুশিয়ারি দিয়ে বক্তব্য রাখেন একই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত বলেন, এই নারায়ণগঞ্জে যদি কথা বলি তাহলে এই শহরে আপনারা অনেকে পা দিতে পারবেন না। দলের দূর সময়ে আইভী মেয়র নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামীলীগের মুখ উজ্জল করেছে। আর আপনারা মেয়রের বিরুদ্ধে কথা বলেন। 

 

আমরা বলেছি নারায়ণগঞ্জ শহরের ১৫ ও ১৬নং ওয়াডের্র এই কমিটি ভালো হয়নি। এই কমিটিতে ত্যাগিদের মূলায়ণ করা হয়নি। আমার সাহসের কথা জানতে চান? যখন বাংলাদেশে আসতে পারেন নাই, যখন নারায়ণগঞ্জে ডুকতে পারেন না তখন আরাফাতকে ফোন দিয়েছেন। সাহসের কি দেখেছেন আপনি, আপনি জানেন না আমার সাহস কি? আপনাকে সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি এটা আমাদের অন্যায় না অপরাধ না। এটা দুর্বলতা নয়, আমরা এতোই শক্তিশালি যেটা আপনি কখনও চিন্তাই করতে পারবেন না। এই নারায়ণগঞ্জের গণমানুষের নেত্রী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী যদি ডাক দেয় তাহলে এক মুহুর্তে এই নারায়ণগঞ্জ অচল হয়ে যাবে।


আরাফাত বলেন, ১৬নং ওয়ার্ডে কোন সাহসে আপনারা সেখানে কমিটি করেছেন, এই কমিটি ত কেউ মানবে না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা সেই দাবি জানিয়েছি, আমরা সেটা জমাও দিয়েছি। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছেন আপনারা আপনাদের কাজ করেন আমরা সেটা অবশ্যই দেখবো। তিনি আরও বলেন, এই শহর আওয়ামীলীগের সম্মেলন যখন হয়, তখন না গঞ্জে আসতে পারেন না।


মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে আরাফাত বলেন, আপনি কিভাবে সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সেই পছিনের কথা ভুলে যেয়েন না। আপনি তাদের ধমক দেবেন যারা আপনার দাতন খায়, আপনি তাদের ধমক দেবেন যারা আপনার জুতা বহন করে। কিন্তু আমাদের কর্মীদের নিয়ে আমাদেরকে নিয়ে সাবধানে কথা বলবেন। ভবিষ্যতে কিন্তু আর কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই কমিটির বিরুদ্ধে আগামীতে শহর ও বন্দরে আরও আন্দোলন হবে এটা আপনারা নিশ্চিত থাকেন।


এর আগে বন্দরের সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা কারো নাম প্রকাশ না করে বলেন, আজ অনেকে আনোয়ার ভাইকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করেন। আরে আনোয়ার ভাইয়ের হাত ধরে নারায়ণগঞ্জের শত শত নেতাকর্মীর সৃষ্টি। এই বয়সে এসে ওনাকে অবাঞ্ছিত হওয়ার কথা শুনতে হয়। দলকে বিভাজন করার চেষ্টা চলছে। তাই নেতাকর্মীদের তিনি সাবধানে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এই বিভাগের আরো খবর