বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩১

আ.লীগের অফিস ভেঙে বিএনপির অফিস বানানোর ঘোষণা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০২৪  

 

বিগত ১৫ বছরে ক্ষমতায় থাকা ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের অফিস ভেঙ্গে বিএনপির কার্যালয় বানানোর ঘোষনা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতা। তার এই মন্তব্য নিয়ে রীতিমত হৈ চৈ পড়ে গেছে। সেই সাথে দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটির এতই করুন অবস্থা হয়ে গেছে তাদের অফিসে এখন বিএনপির কার্যালয় বানানোর গোষনা দেন। যদিও এর আগে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী বিএনপির অফিস ভেঙ্গে গুরিয়ে দিয়েছেন।

 


এদিকে গতকাল শহরের এক সভায় জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আনিসুল ইসলাম সানি বলেন, নগরীর ২ নম্বর গেট এলাকায় চুনকা পাঠাগারের সাথে ভবনে বিএনপির অফিসের জন্য ৭ বার সর্বোচ্চ টেন্ডার দিয়েছি। তার পরেও আমাদের দেয়া হয় নাই। কিন্তু সেখানে স্বৈরাচারি শেখ হাসিনার অন্যতম দোসর সাবেক মেয়র আইভী এই অফিসটি দখল করে নিয়েছে।

 

 

আমি বিএনপির নেতৃবৃন্দকে বলবো যদি এই বিল্ডিংয়ে কোন জায়গা খালি থাকে তা দখল করে বিএনপির অফিস বানিয়ে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিবেন। আমি আপনাদের সাথে থাকবো। এখানে যদি বিএনপিার অফিস না দেয়া হয় তাহলে শহরের ২ নম্বর রেলগেট আওয়ামী লীগের অফিস ভেঙ্গে সেখানে বিএনপির অফিস বানামু। সেখানে স্বৈরাচারি দোসরদের কোন অফিস থাকবে না।

 


অপরদিকে বিগত ১৫ নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয় প্রতিনিয়ত নেতাকর্মূদের চলাচলে মুখরিত ছিল। এমনকি শেখ হাসিনা পদত্যাগের দিনও জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পার্টি অফিসের কার্যালয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকে প্রতিরোধ করতে অবস্থান নিয়ে ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে যান। এই অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব প্রদান করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই।

 

 

কিন্তু ৫ আগষ্ট দুপরের পর যখন জানাজানি হয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তখন সারাদেশের তুলনায় নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও পালিয়েছে। সেই থেকে এখনো পর্যন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ এমপি থেকে শুরু করে তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের দেখা নেই।

 


তাছাড়া যেখানে মাস তিনেক আগেও যেখানে জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় নেতাকর্মীদের পদচারনায় উজ্জীবিত ছিল আজ সেই অফিসের দরজা টিন দিয়ে আটকানো রয়েছে। জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধুর মুরালের ঢালাই করা অংশে এখন শহরের টোকাইদের বিশ্রামাগার আড্ডা খানায় পরিনত হয়েছে। শহরের ছিন্তাকারী, টোকাইরা রাতের বেলা জেলা মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে সুয়ে থাকে।

 

 

এখানে থেকে গভীর রাত হলেও তারা ছিন্তাই কাজে ছড়িয়ে পরে। আবার দিনের বেলা এসে এক দল টোকাই এখানে শুয়ে থাকে। তারা এখন নিজেদের আড্ডা খানা বানিয়ে ফেলেছে এক সময়ের দাপুটে থাকা আওয়ামী লীগের অফিসকে। এছাড়া অফিসের দরজা থেকে শুরু করে সব কিছু লুট হয়ে যাওয়ায় দরজার সামনে কোনরকম টিন দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। যাতে করে ভিতরে কেউ প্রবেশ করতে না পারে। অথচ আওয়ামী লীগের অফিসকে রক্ষা করার জন্য তাদের দলীয় কোন নেতাকর্মী এগিয়ে আসে নাই। এতে করে আওয়ামী লীগের করুন দৈন্য দশা পাওয়া যায়।  

 


খোঁজ নিয়ে জানাযায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে সহিসংতার রূপ নিলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং রেল গেইট এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর কার্যালয়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় নাশকতাকারীরা। এছাড়া গত ৫ আগষ্টের দিন এক মুহুর্তে আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস তছনছ করে ফেলে। অফিসের ভিতরে আগুন জালিয়ে সবকিছু পুরে ফেলার পাশা পাশি এসি, ফ্যান সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায় দুর্বত্তকারীরা। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে শেখ মুজিবের কোন মুর্তি থাকতে পারবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি নেতা।  

 


মহানগর শ্রমিক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মামুনের সঞ্চালনায় ও নিহত রবিউলের বাবা আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির, নারায়ণগঞ্জ জেলা জাসাস’র সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, মহানগর জাসাস’র সভাপতি মো. স্বপন চৌধুরী, মহানগর বিএনপি’র নেতা আওলাদ হোসেন।

 

 

হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের পরিচালক মো. শাহীন হোসেন, এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, মহানগর দর্জি শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, মহানগর দর্জি শ্রমিক দলের সভাপতি মনির মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, জেলা যুবদল সহ সভাপতি পারভেজ মল্লিক, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা জাসাসের সভাপতি টিপু খান, সাবেক মহানগর যুবদল নেতা মনিরসহ নেতৃবৃন্দ।      এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর