শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১

আসছে জাকির খান, থাকছে রাজীব-মোশারফ

প্রকাশিত: ২ মার্চ ২০২০  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট : জেলা বিএনপির কমিটির বিলুপ্ত করে দেয়ায় বেজায় খুশি তৃণমূল। দেরীতে হলেও যে কেন্দ্র দুর্বলতা আর অসঙ্গতিটি ধরে কমিটি বিলুপ্ত করেছেন তাতে নড়েচড়ে বসেছে কর্মীরা। আন্দোলন,সংগ্রাম আর নেতৃত্ব দিতে যে যোগ্য নেতার প্রয়োজন তা অনুভব করছেন সকলে।

 

কমিটি বিলুপ্ত হবার পর কে হচ্ছেন সভাপতি-সেক্রেটারি তা নিয়ে নানা আলোচনা, লবিং, সুপারিশ চলছে। তবে সবার দাবি যারাই আসবে তারা যেন দলের প্রতি নিবেদিত হয়। দীর্ঘদিন মূল্যায়িত হননি, নানা কমিটিতে থেকে চাপে কাজ করার সুযোগ পাননি এমন নেতাদেরও সুযোগ দেয়ার দাবি তুলছে কর্মীরা। 


সূত্র জানিয়েছে, জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন করে পূর্ণাঙ্গ কিংবা আংশিক কমিটি দেয়ার কোন ইচ্ছে নেই কেন্দ্র। উর্ধ্বতন নেতারা এবার এমন একটি কমিটি দিতে চায় যাতে জেলার নেতাদের বাজিয়ে দেখে তাদের নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতাটিও যাঁচাই করতে চায়।

 

সভাপতি, সেক্রেটারি পদ নিয়ে নেতারা যার যার ইচ্ছার কথা নানাসূত্রে কেন্দ্রে জানাচ্ছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জের জেলা বিএনপির একটি আহবায়ক কমিটি দেয়া হবে। আর তাতে আহবায়ক, যুগ্ম আহবায়ক পদে নানা চমক থাকবে। তবে আংশিক কমিটি দিলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।  

 


নবীন ও প্রবীণ নেতাদের মিশেলে এবার জেলা বিএনপির কমিটি হবে বলে জানিয়েছে সূত্র। যুগ্ম আহবায়ক কিংবা সাংগঠনিক পদে জেলার তিন জনপ্রিয় নেতার থাকাটা মোটামোটি নিশ্চিত বলে জানিয়েছে সূত্র। তিন নেতা সম্পর্কে নানা সমালোচনা থাকলেও তাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে কর্মীদের মাঝে। 

 


কেন্দ্রীয় যুবদল ঢাকা বিভাগের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন, বিলুপ্ত জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান এবার জেলা বিএনপির কমিটিতে নিশ্চিতভাবে থাকবেন বলে জানিয়েছে সূত্র। 

 


সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির জনপ্রিয় ছাত্রদল নেতা জাকির খান মাঝেসাঝে ছদ্মবেশে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে আসেন। কেন্দ্রীয় নেতাদেরসহ স্থানীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ অন্য যে কোন সময়ের চাইতে অনেক বেশি তার। অনুপুস্থিত থেকেও বিশাল কর্মীবাহিনীর একটি সমর্থন তার রয়েছে।

 

জেলা বিএনপির গত কমিটিতে থাকার চূড়ান্ত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও নানা কূটচালে সেটি হয়নি। তবে জাকির খানকে কমিটিতে রাখলে যে কমিটি উজ্জ্বীবিত হবে তা নিয়ে বির্তক নেই বলে মানে কেন্দ্র। আর তাই জাকির খানকে এবার আহবায়ক কিংবা আংশিক কমিটি যাই হোক তাতে রাখা হবে বলে জানিয়েছে সূত্র। সেক্ষেত্রে সাংগঠনিক কিংবা যুগ্ম আহবায়ক পদে তাকে দেখা যেতে পারে। 

 


সূত্র জানায়, মহানগর কিংবা জেলা যুবদল, মহানগর কিংবা জেলা বিএনপির কোন কমিটিতে সাবেক  জেলা যুবদলের সভাপতিকে মোশারফ হোসেনের নাম নেই দেখে তাতে বিস্মিত হয়েছিল অনেকেই। কিন্তু সময়ের সাথে পাল্টে গেছে অনেক কিছু। মোশারফের নেতৃত্বগুনের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ছিল কেন্দ্র।

 

আর তাই তাকে কেন্দ্রীয় যুবদলের ঢাকা বিভাগের সহসাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। তবে নারায়ণগঞ্জে যে মোশারফ তার কর্মীবাহিনী নিয়ে দলের প্রয়োজনে জাগরণ ঘটাতে পারবে সেটিও কেন্দ্রের জানা। আর যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে জেলা বিএনপির কমিটিতে মোশারফের নাম থাকলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আংশিক কমিটি হলে সাংগঠনিক পদে থাকবেন মোশারফ এমনটিই জানিয়েছে সূত্র। 

 


জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব ছিলেন প্রভাবশালী একজন ছাত্রনেতা। বিশাল কর্মীবাহিনী আর বুদ্ধিদিপ্ত সিদ্ধান্ত দিয়ে তিনি শুধু জেলাতেই নয় প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন সারাদেশে। জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটিতে তাকে পুরস্কার স্বরূপ সাংগঠনিক পদে দায়িত্ব দিয়েছিল কেন্দ্র।

 

কিন্তু সেখানে রাজীব যেন থেকেও নেই। খোদ তৃণমূল কর্মীদের দাবি, ব্যবসায়ী আর পদলোভী নেতাদের কারণে রাজীবকে সাংগঠনিক কাজ করার সুযোগ দেয়া হয়নি। নিজেরাও করেনি আর করতেও দেয়নি এমন নেতার সংখ্যা ঢের বেশি ছিল বিলুপ্ত জেলা বিএনপির কমিটিতে।

 

 

আর সেকারণে কাজ করার ইচ্ছা থাকার পরও করতে পারেননি রাজীব। যেহুতু কেন্দ্র এবার স্বয়ং দল মেরামতে হাত দিয়েছে আর তাই নিজের রাজনৈতিক মেধা খাটাবার সুযোগ পাবে রাজীব। জেলা বিএনপির যেই কমিটিই দেয়া হোক তাতে রাজীব থাকছেন এটি মোটামুটি নিশ্চিত বলে জানিয়েছে সূত্র।  

 


জাকির খান, মোশারফ এবং রাজীব তিন বিএনপি নেতা জেলা বিএনপির কমিটিতে থাকলে সংগঠনে যে প্রাণ ফিরবে তা নিয়ে দ্বিমত নেই সমালোচকদেরও। কিন্তু তাদেরকে নানাভাবে হেয় করে কেন্দ্রের সামনে উপস্থাপনের জন্য একটি চক্রও মাঠে নেমেছে বলে জানিয়েছে সূত্র। তবে কেন্দ্র যে এবার সেসবে কান দেয়ার সম্ভাবনা খুব কম, কেননা আন্দোলনটাই যে দরকার!
 

এই বিভাগের আরো খবর