রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৮ ১৪৩১

ঈদে কোন দাওয়াতে যাবোনা, এটাই আমার মৌন প্রতিবাদ : রাজিব

প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০১৮   আপডেট: ১৪ জুন ২০১৮

স্টাফ রিটেপার্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজিব। প্রতিশ্রুতিশীল একজন তরুণ রাজনৈতিক নেতা। সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে তার ছাত্ররাজনীতির ইতি ঘটে। সরকারী তোলারাম কলেজের সাবেক এই ভিপির কাছে ঈদ মানে বিশেষ কিছু। তবে এবার তেমনটা নয়।

 

রাজনীতিতে স্পষ্টভাষী এই তরুণ নেতা যুগের চিন্তা ২৪ এর ঈদ আড্ডায় কথা বলেছেন তার ভাললাগা মন্দলাগা নিয়ে। ঈদের পাশাপাশি সেই আড্ডা ডালপালা মেলেছে তার রাজনৈতিক অঙ্গনেও কথা হয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে। যুগের চিন্তা ২৪ এর পাঠকদের জন্য এর অংশ বিশেষ তুলে ধরা হলো।

যুগের চিন্তা: কেমন আছেন?

দেশের এমন পরিস্থিতিতে যেমন থাকা যায়।

যুগের চিন্তা: বিশ্বকাপ ফুটবলের উন্মাদনা কেমন উপভোগ করছেন?

ঈদ এবং বিশ্বকাপ দুটোই আনন্দ উৎসব। কিন্তু আমাদের মাতৃসম নেত্রীসহ সহযোদ্ধাদের কারাগারে রেখে সেই উৎসবটাকে উৎসব হিসেবে উদযাপন করতে পারছি না। নেত্রী কারাগারে এই কথাটা মনে হলে নিজের মধ্যে আর কোন আনন্দ কাজ করে না। তাই কোন উন্মাদনাও কাজ করছে না। সাদামাটা ঈদ পালন করলেও খেলা দেখা হবে। আমার বাসায় সকলেই ব্রাজিলের সাপোর্টার। এমনকি আমার দ্বিতীয় শ্রেণি পড়–য়া মেয়ে সেদিন এসে আমার কাছে ব্রাজিলের পতাকা চাইল। আমি জিজ্ঞেস করলাম মা তুমি ব্রাজিল সাপোর্ট করো কেন? জবাব দিল, তুমি করো তাই(হাসি)।

যুগের চিন্তা: ঈদ বিষয়টা আপনার চোখে কেমন?

আমার কাছে সব সময় ঈদ মানে বিশেষ কিছু। এক মাস রোজা রাখার পর এটা অল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার স্বরুপ। সবাইকে নিয়ে উদযাপন করলেই ঈদে আনন্দটা সত্যিকার অর্থে উপভোগ করা যায়। আমরা ধীরে ধীরে আরও বেশি ব্যক্তি কেন্দ্রীক হয়ে পড়ছি। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারনে এবার বিশেষত্বটা কাজ করবে না।

যুগের চিন্তা: শৈশবের ঈদ আর এখনকার ঈদের মধ্যে পার্থক্য কি দেখেন?

আমার কাছে ঈদ মানেই নতুন জামা। বরাবরই ঈদে নতুন জামার জন্য পাগল ছিলাম। শৈশবে ঈদের নতুন জামা কাউকে দেখতে দিতাম না। এটা মনে পড়লে আজও ভাল লাগে। তবে বাবা হওয়ার পর এখন আর নতুন জামা নিয়ে তেমন আগ্রহ কাজ করে না। আগে নিতে ভাল লাগতো। এখন দিতে ভাল লাগে। সন্তানের আনন্দটাই এখন মূল ব্যাপার। তখন সকলের মধ্যে অনেক আন্তরিকতা ছিল। এখন সবাই যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে।

যুগের চিন্তা: শৈশবের কোন ঈদের স্মৃতি মনে পড়ে?

শৈশবে ঈদের আকর্ষণীয় বিষয় ছিল ঈদের সালামি। তখন নামাজ পড়ে এসে সবাইকে সালাম করতাম। একটা ঘটনার কথা আজও মনে পড়ে। একবার ঈদে ১৪০-১৫০ টাকার মতো সালামি পেলাম। ফুফুর বাড়ি যাওয়ার সময় সেই টাকা হারিয়ে যায়। তারপর কি যে কান্না! তা দেখে ফুফুৃ আমাকে সালামির পুরো টাকা দিল। কিন্তু সেই দুঃখ আর যায় না। কারো বাসায় ঘুরতে গেলে যতই খাবার দিক সালামি না দিলে খারাপ লাগতো।

যুগের চিন্তা: এবারের ঈদ উদযাপন নিয়ে পরিকল্পনা কি?

অন্যবছর ঈদের এই সময়টাতে কেনাকাটা নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতাম। কিন্তু এবার মার্কেট কি সেটা এখনো জানিনা। ঈদে কোন দাওয়াতে যাবোনা। নামাজ পড়ে বাসায় আসবো। অন্যসব দিনের মতোই নেতা কর্মীরা আসলে তাদের সঙ্গে আড্ডা দেবো। এটাই আমার মৌন প্রতিবাদ।

যুগের চিন্তা: ঈদের প্রিয় খাবার কি?

মায়ের হাতের পুডিং খুবই প্রিয়। অন্যসব খাবারের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই। কিন্তু এটার প্রতি বিশেষ দূর্বলতা কাজ করে। পুডিং খাওয়ার সময় নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। অনেক বেশি খেয়ে ফেলি। সেজন্য দেখা যায় মা আমার কথা মনে রেখে বেশি করে পুডিং তৈরী করেন।

যুগের চিন্তা: কখনো পরিবার ছাড়া ঈদ পালন করলে সেটা নিয়ে বলুন।

পড়াশুনার জন্য যখন ব্যাঙ্গালুরে ছিলাম তখন দুইটা ঈদ পরিবারের বাইরে করেছি। সকলের কাছে আহ্বান থাকবে যতই ব্যস্ততাই থাকুক কেউ যেন পরিবার ছাড়া ঈদ পালন না করে।

যুগের চিন্তা: ঈদের পর বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন। সেটা নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি?

একটা ক্লিয়ার কথা বলতে চাই। সরকারকে মোকাবেলা তরার মতো যে ধরনের সাংগঠনিক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা প্রয়োজন আমাদের নেতাদের তা আছে বলে আমার জানা নেই। ঈদের পর এটা করবো সেটা করবো এগুলা বলার বিষয় না। এগুলো বলতে গিয়ে বারবার কর্মীদের পুলিশি হয়রানী করা হচ্ছে। যারা সত্যিকার অর্থেই করে তারা আগে থেকেই এভাবে মিডিয়ায় বলে না। কি করবো সেটা বলতে চাই না। তবে দল যে সিদ্ধান্ত নিবে সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজপথে থাকবো সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে এতটুকুই বলতে পারি। ধন্যবাদ, যুগের চিন্তার পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা। আপনাকেও ধন্যবাদ। যুগের চিন্তার পাঠকদের প্রতিও ঈদের শুভেচ্ছা রইল।

এই বিভাগের আরো খবর