বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩১

কমিটি পেলেই সবাই চুপ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০২৪  

 
#  অঙ্গসংগঠনের ইউনিট ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয় না কয়েক বছর
# নেতাদের দ্বন্দ্বে পরিবর্তন হয় না কর্মীদের ভাগ্য
 
 

নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে কমিটি পেলেই সবাই চুপ পৃথাটি শুধু বিএনপির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। বিগত দিনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ক্ষেত্রে একই দৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্নভাবে লবিং ও দৌড়ঝাঁপ করে কেন্দ্র থেকে আংশিক কমিটি আসলেই নেতারা ভূলে যেত ইউনিট ও পূর্ণাঙ্গ কমিটির কথা। এভাবেই চলতো বছরের পর বছর। ঠিক হঠাৎ নানা বিতর্ক কর্মকান্ডে কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন মুখের কমিটি আসলে সেই একইভাবে চলতে দেখা যেত। বর্তমানে পটপরিবর্তনে পালিয়েছে আওয়ামী লীগের সর্বস্থরের নেতাকর্মীরা। যাকে ঘিরে মাঠ এখন পুরোই বিএনপির দখলে। সেই ক্ষেত্রে জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনসহ তাদের সর্বস্থরের নেতাকর্মীদের মাঠে উজ্জীবিত ও শক্তিশালী রাখতে প্রয়োজন ইউনিট ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি। যা বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলোর একটির মধ্যে ও নেই। 

 

 

জানা গেছে, গত দুই বছর যাবৎ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল চলছে কেন্দ্রের দেওয়া সেই ৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটির মধ্য দিয়েই। এদিকে জেলা ও মহানগর শ্রমিকদল একই দশায়। তা ছাড়া ছাত্রদলে নেই কোন কমিটি। এ দিকে ইতিমধ্যে মহানগর যুবদলের ৩ ট্রাম্প প্রায় ৮ বছর যাবৎ ইউনিটের নেতাকর্মীরা পরিচয়বিহীন অবস্থায় যুবদল নেতা হিসেবেই আছে। এমনকি দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দের ভিতরগত বিভিন্ন্ কারণে রাজনৈতিক পরিচয় পাননি যুবদলের শত শত নেতাকর্মী। একইভাবে বছরের পর বছর পাড় হলে ও স্বেচ্ছাসেবক দলেও নেই কোন ইউনিট বা পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এদিকে গত অক্টোবর মাসে অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রস্তুতি সভায় ঘোষণা দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হুশিঁয়ারী দিয়েছেন আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অঙ্গসংগঠনের প্রতিটি ইউনিট কমিটি গঠনের জন্য। কিন্তু এ নিয়ে ২/৩টি কর্মসূচিতে যুবদলের নানান আলোচনা লক্ষ্য করা গেলে ও তা আবার ঝিমিয়ে পরেছে। 

 

 

এদিকে জেলা ও মহানগর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদলে রয়েছে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এবং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কের মধ্যে তুমুল দ্বন্দ্ব যাকে ঘিরে কেউ কাউর সাথে কথাতো দূরের কথা এক টেবিলে বসে না। যার কারণে বর্তমানে অনেকটাই হ-য-ব-র-ল অবস্থার বিরাজমান হচ্ছে সংগঠনে। একই সাথে জেলা ও মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক এক সাইড ও সদস্য সচিব আরেক সাইডের দখল নিয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। তা ছাড়া বর্তমানে যুবদল দ্বন্দ্বে থাকায় যুবদলের নেতাকর্মীরা একেক জন একেক কেন্ডিটেডকে চয়েজ করেছেন যাকে ঘিরে বন্ধ হয়ে আছে ছাত্রদলের কমিটির কার্যক্রম। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ছাত্রদলের তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। সব মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিএনপির অঙ্গসংগঠনের অনেকটাই বেহাল দশা।

 

সূত্র বলছে, গত বছরের ২৯ আগস্ট মনিরুল ইসলাম সজলকে আহ্বায়ক, সাগর প্রধানকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাহেদ আহমেদকে সদস্য সচিব করে ঘোষণা করা হয় মহানগর যুবদলের ৩ সদস্যের আহবায়ক কমিটি। এই কমিটি ও বিগত দিনের মতোই ২ বছর অতিবাহিত করে ফেললো কিন্তু ইউনিট কমিটি ও তাদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ রূপে গঠন করা হয়নি। একইদিনে সাদেকুর রহমান সাদেককে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও মশিউর রহমান রনিকে সদস্য সচিব করে জেলা যুবদলের ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্র। কিন্তু এর পর থেকে ৩ মাথা কখনো এক হয়নি। ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে জেলা যুবদলের দুইটি ব্যানারে কর্মসূচি পালিত হতে দেখা যায়। 

 

 

এদিকে ইউনিট কমিটি বা নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ নিয়ে ও তাদের মধ্যে নেই কোন আলোচনা। একই দিনে বিএনপির আকেরটি অন্যতম অঙ্গসংগঠন জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। জেলাতে আহ্বায়কের দায়িত্ব পান মাহবুব হোসেন ও সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সাল্লু তারা তিনজন তিন বলয়ের। আহ্বায়কের বলয় কাজী মনিরুজাম্মান ও সদস্য সচিবের বলয় রেজাউল করিম ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক দিপু ভূইঁয়ার বলয়ের। যাকে ঘিরে ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে চলছে এই সংগঠনটির রাজনীতি। তা ছাড়া মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলে আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছে শাখাওয়াত হোসেন রানা ও সদস্য সচিবের দায়িত্বে মমিনুর রহমান বাবু। এরা দুইজন একসাথে কর্মসূচি পালন করলে ও আহ্বায়ক রানা বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরের পরিবহন সেক্টর দখলে নিতে ব্যস্ত রয়েছেন। 

 

 

যাকে ঘিরে বর্তমানে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের হচ্ছে না ইউনিট কমিটি ও নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ। তারা বর্তমানে সকলেই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন সংগঠন ও দলের কর্মী সমর্থকদের কথা কোন নেতাই ভাবছেন না। এদিকে একইভাবে মেয়াদউত্তীর্ণ অবস্থায় বেহাল দশায় পরে আছেন জেলা ও মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক কমিটি। এই সংগঠনটি ও দীর্ঘদিন যাবৎ পারেনি তাদের ইউনিটের কমিটি গঠন করতে। এদিকে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে গত ১৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এর পরে ৩ মাসে ও দেওয়া হয়নি কমিটি। যাকে ঘিরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে নেই কোন প্রকারের উৎলাস। সব মিলিয়ে বর্তমানে বেহাল দশায় রয়েছেন বিএনপির অঙ্গসংগঠনের রাজনীতি। 

এই বিভাগের আরো খবর