রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪   ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২৪  


# ভারত আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে চায়না, প্রভুত্ব করতে চায়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
# খালেদা জিয়া অসুস্থ্য, তাকে মুক্তি দেওয়া হয় না, এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্য: গিয়াসউদ্দিন
# আ.লীগ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে: এড. সাখাওয়াত

বিএনপির চেয়ারপার্সন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (১ জুলাই)  বিকেলে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে ওই  সমাবেশের আয়োজন করা হয়। মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও  জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন এবং মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

 

 

এছাড়া প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও বেনজির আহম্মেদ টিটো। সভায় বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামন মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
 

 


প্রধান অতিথি বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার, নাগরিক অধিকার, বেচেঁ থাকার অধিকারসহ সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত করে স্বাধীন দেশে পরাধীন নাগরিক হিসেবে বসবাস করছি। আমরা কিছু বললেই ওবায়দুল কাদের লাফ দিয়া উঠে।  তারা বলে ‘বিএনপি আওয়ামী লীগকে ভারতের সেবা দেশ বানানো চেষ্টা করছে’। এখনো সেটা হওয়া বাকি আছে? আজকে ওবায়দুল কাদের বলেছে, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি নাকি দৃষ্টতা।

 

 

অথচ খালেদা জিয়াকে জেলে রাখা যে কতটা অন্যায়, কতটা অবিচার; সময় আসলে বাবাধন টের পাইবা। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটা মামলাও সঠিক না। এটা প্রতিবেশীদের খুশি করার জন্য। খালেদা জিয়ার অপরাধ, তিনি দেশবিরোধী চুক্তি করতে নারাজ, তিনি দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিতে রাজি নন। খালেদা জিয়া বলেছে আমাদের প্রতিবেশী দেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নাই।

 

 

আমরা প্রতিবেশী দেশের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই, কিন্তু তারা তো আমাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে চায়না। তারা প্রভুত্ব করতে চায়। ভারতের সাথে বাংলাদেশের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক,যেই দেশ বড় তারাই স্বামী। বন্ধুত্ব আর স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক তো এক না। আওয়ামী বলে চায়নাও নাকি আমাদের বন্ধু। যেভানে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক আছে সেখানে চায়নার সাথে কি পরকিয়া।

 


তিনি বলেন, এই দেশে  চোর, ডাকাত, পাচারকারী আর লুটপাটকারী সকলের আড়তদার। তাদের  বিচার চেয়ে তো লাভ নাই। দুর্নীতি ছাড়া যাদের কোনো নীতি নাই, অথচ সরকার বলে, দুর্নীতিতে কোনো আপোস নাই। কিন্তু দুনীতি ছাড়া তাদের কোন নীতিই নেই। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, বেকারত্ব বাড়ছে, নতুন কর্মসংস্থান নাই। আমদানি-রপ্তানি নিন্মগতি কিন্তু বিশাল একটা বাজেট করছেন।

 

 

বাজেট আর প্রকল্প মানেই হচ্ছে চুরি। উন্নয়ন তো কোন দয়া না, কোন খয়রাত না। উন্নয়ন জনগনের অধিকার কারণ জনগণের টাকায় হয়। সেই উন্নয়নের নামে তারা টাকা লুটপাট করে খায়। স্বাস্থ্যখাতের অবস্থা তো করোনার সময়ের চেয়েও খারাপ। যেদিকে তাকাবেন সব খাতেই চুরি আর ডাকাতি। শেখ হাসিনা এখন জনগণের নেত্রী না, তার জনগণ দরকার নাই। বিএনপি এই নেতা বলেন, মুদি থাকলেই উনি (শেখ হাসিনা) এই দেশে থাকতে পারবে।

 

 

আমাদের বাংলাদেশের উপর দিয়ে ট্রেন যাবে আর আমরা কিছু বলতে পারবো না। এটা কার স্বার্থে করা হচ্ছে? ভারতের স্বার্থে। আমরা ভারত হয়ে নেপাল যাবো সেটার ট্রানজিট পাচ্ছি না। এটা হওয়ার পর কিছু আছে ঢিলা মারবো তারপর ইন্ডিয়া বলবো আমাদের নিরাপত্ত্বার অভাব। ভারতের আর্মি এখানে আইন্না বসায় দিবো, আর আমাদের আর্মি ঘরে বসে চিনা বাদাম খাবে।
 

 


তিনি বলেন, স্বাধীন দেশে মানুষকে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। প্রতিবেশী দেশের সাথে স্বার্থবিরোধী কোন চুক্তি নিয়ে কিছু বললেই আমাদের বলে আমরা নাকি ভারত-বিদ্বেষী। একটা চক্রান্ত চলছে। আওয়ামী লীগকে ভারতের সেবাদাস বানানোর চক্রান্ত চলছে।
 

 


ভারতকে করিডোর দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন,  আমাদের দেশ স্বাধীন করতে লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। আমরা পাকিস্তানের অত্যাচার ও অর্থনৈতিক বিষম্য মানতে পারলাম না কিন্তু এখন আমরা দিল্লীর গোলামি করি। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় দিতে না পারলে বাংলাদেশ নামে দেশটির নাম মানচিত্রে থাকবে না। ভারতের পরিকল্পনা অনেক বড়। তারা সেই ৬ হাজার বছরের পুরনো মহাভারতে ফিরে যেতে চায়। ভারত অন্য কোন দেশের অস্তিত শিকার করতে চায় না।
 

 


গয়েশ্বর বলেন, আমাদের পথে চলা বন্ধ হবে সেদিন, যেদিন শেখ হাসিনাকে গণভবন থেকে টুঙ্গিপাড়ায় পাঠাতে পারবো। সমাবেশে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, আজ সমগ্র জাতি লজ্জিত। যে নেত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে যার ভূমিকা রয়েছে অপরিসীম, তিন তিন বারের প্রধান মন্ত্রী বিএনপির চেয়ারম্যান পার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করতে হয়।
 

 


তিনি বলেন, আমরা কেন বা আন্দোলন করবো নেত্রীর জন্য, যার মুক্তিযুদ্ধে অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। যে নেত্রীর স্বামী দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। নিজে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। দেশের শাসনভার হাতে নিয়ে সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করেছেন। তাকে আজকে অন্যায় ভাবে শাস্তি দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে।

 

 

অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয় না, এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক এড.সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ১৮ কোটি মানুষের নেত্রী। আমাদের নেত্রীকে প্রধানমন্ত্রী শত্রু হিসেবে মনে করেন। বাংলাদেশে খালেদা জিয়া একমাত্র ব্যাক্তি যার, নিন্ম আদালতে সাজা হয়েছে, সেটাকে কমানোর জন্য উচ্চ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে সাজা না কমিয়ে উল্টো বাড়িয়ে দেয়া হয়।

 


এড.সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এই সরকার বাংলাদেশের সাংবিধানিক যে অর্গান রয়েছে। সবগুলোতে কুক্ষিগত করে। বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে কুক্ষিগত করে। দেশের আশে পাশে কিছু সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে কুক্ষিগত করে। আজকে আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। আজকের এই সভা থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবী ও সুস্থতা কামনা করছি।

 


মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও  জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন এবং মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এছাড়া প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও বেনজির আহম্মেদ টিটো।

 


সভায় বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামন মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, আব্দুল মান্নান প্রমুখ।     এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর