গরমে প্রাণ জুড়ায় সুমনের ঐতিহ্যবাহী মাঠা
নুরুন নাহার নিরু
প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩৫ পিএম
নারায়ণগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে নগরীর সবচেয়ে বড় পাইকারি কাঁচা শাকসবজির বাজার দিগুবাবুর বাজারের প্রবেশ পথের পাশে এবং নয়নসুপার মার্কেটের নিচ তলায় ছোট একটা দোকানে প্রতিদিন মাঠা নিয়ে বসেন সুমন ঘোষ। যদিও সবার কাছে তিনি সুমন নামেই বেশ পরিচিত। ২০০৭ সাল থেকে প্রায় ১৫ বছর যাবৎ মাঠা বিক্রি করেন তিনি।
এর আগে তার বাবা-দাদারাও এই কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। প্রথম দিকে ১০ থেকে ১৫ কেজি মাঠা নিয়ে প্রতিদিন বসতেন তিনি। চাহিদার তুলনায় ধীরে ধীরে তা এখন ২০০ কেজিতে এসেছে। তবে বর্তমানে রমজানকে কেন্দ্র করে রোজ ৩০০ কেজি মাঠা বিক্রি করছেন। ১ লিটার মাঠা ১০০ টাকা এবং প্রতি গ্লাস ২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
মাঠা তৈরির উপকরন সম্পর্কে জানতে চাইলে সুমন ঘোষ যুগের চিন্তাকে বলেন, “মাঠা বানানো প্রথম শিখা আমার বাবার কাছ থেকেই। দোকানে যা যা দেখছেন সবই আমি নিজেই বাসায় তৈরি করি। মাঠাতে ভেজাল জাতীয় কোনো দ্রব্য মিশ্রন করি না। সাধারণত টকদই, চিনি এবং লবন দিয়ে এটা তৈরি করে থাকি।
১মণ দুধের সাথে ১ কেজির ডানো দুধের প্যাকেট ব্যবহার করি। আগে শুধু মাঠাটাই বিক্রি করতাম বর্তমানে দোকান নেওয়ার কারনে মাঠার পাশাপাশি দই, রসমালাই, খোলা ঘি বিক্রি করি। আমার কাছে রমজান আর সারাবছর ১৯-২০ মাত্র কারন আমার মাঠার সবসময় চাহিদা একটু বেশি।”
শামসুল হক নামের এক ব্যক্তি বলেন, “অন্যান্য মাঠার তুলনায় সুমন ভাইয়ের মাঠাটা অনেক ভালো লাগে । আমি এই মার্কেটে আজ ৩-৪ বছর ধরে কাজ করি। সেই থেকে ভাইয়ের বিক্রি করা মাঠা আমি প্রায় খেয়ে থাকি। আরো অনেকেরই তো মাঠা খাইছি কিন্তু এই মাঠার মতো মাঠা আমি নারায়ণগঞ্জে আর পাই নাই।”
লিমন মিয়া নামের এক ক্রেতা বলেন, “রোজা রেখে সারাদিন ক্লান্ত হয়ে যাই, রোজা ভেঙ্গে ঠান্ডা কিছু খেলে সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। এছাড়া আমি প্রায় আমার পরিবারের জন্য নিয়ে যাই। তারাও খুব মজার সঙ্গে এটা খায়।”
হাসিনা নামের অপর ব্যক্তি বলেন, “সত্যি বলতে আমি এর আগে মাঠা তেমন একটা পছন্দ করতাম না। কিন্তু মামার মাঠাটা খাওয়ার পর থেকে আমি এখন সপ্তাহে প্রায় ৪-৫ দিন সেই কলেজ রোড থেকে এখানে এসে খেয়ে যাই। আমার কাছে মনে হয় সবার থেকে মামার মাঠাটা বেস্ট। আর কার কাছে কেমন লাগে জানিনা তবে আমার কাছে একদম অমৃতের মতো।” এন.হুসেইন/জেসি