শুক্রবার   ১৮ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ৩ ১৪৩১

চেয়ারে নজর দুর্ভোগে নীরব

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২৪  

 

 

নারায়ণগঞ্জের ৫টি উপজেলার মাঝে গত মে মাসে ইতোমধ্যে ৪টি উপজেলার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় মানুষের ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে জেলার চার উপজেলার নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা এখন শপথ নেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। 

 

কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাচন না হওয়ায় ১৫ বছর যাবত বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ বিশ^াস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তবে গত ৮ মে সদর উপজেলায় নির্বাচনের ভোট গ্রহনের ঘোষনা হলেও পরবর্তিতে তা ২২ এপ্রিল আদালতের আপিল ডিবিশনে শুনানি থাকার কথা উল্লেখ্য করে নির্বাচন কমিশন সচিব তা ২২ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করেন। 

 

কিন্তু সদর উপজেলার সম্ভাব্য প্রার্থীদের সুত্রমতে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের হয়ত এখানকার নির্বাচন হতে পারে। আর এজন্য এখানকার প্রার্থীরা মাঠে প্রস্তুতি নিচ্ছে।এ দিকে নারায়ণগঞ্জ চার উপজেলার নির্বাচনে যারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে সরকারি ভাবে তাদের নাম গেজেট প্রকাশ হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে জেলার বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহনের অপেক্ষায় রয়েছেন মাকসুদ হোসেন, 

 

একই সাথে জেলার অন্যান্য উপজেলার মাঝে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মাহফুজুর রহমান কালাম, আড়াই হাজার উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান হয়েছেন সাইফুল ইসলাম স্বপন, রূপগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন হাবিবুর রহমান হাবিব। তারা প্রত্যেকেই চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। জেলার চার উপজেলর নির্বাচন হলেও সদর উপজেলার নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় এখানকার ভোটাররা হতাশ হয়ে রয়েছেন। কবে নাগাত নির্বাচন হবে তা নিয়ে শংসয় রয়েছে।

 

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যানের চেয়ার দখলের জন্য মাঠে সক্রিয় রয়েছেন এমপি শামীম ওসমানের দুই অনুসারি। তার মাঝে সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে জানান দিয়ে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম। একই সাথে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে সদর উপজেলা প্রার্থী হিসেবে মাঠে প্রচারনায় সক্রিয় রয়েছেন মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু। 

 

তারা দুজনেই সাংসদ শামীম ওসমানের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিচিত। এমনকি তারা নিজেরাও বলে বেরান তাদের নেতা শামীম ওসমানের কর্মী হিসেবে তারা সব সময় মাঠে রয়েছেন। স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দ বলছেন এমপি শামীম ওসমানের এই দুই নেতারা পারাপারির কারনে সদর উপজেলা নির্বাচন স্থগিত হয়ে রয়েছে। তাদেরকে এক হয়ে একজনকে সদর উপজেলার প্রার্থী হিসেবে সমর্থন করতে বলা হলেও তা হয়ে উঠে নাই। 

 

তবে তারা দুজনেই মাঠে প্রার্থী হিসেবে জানান দিয়ে একে অপরকে বিভিন্ন ইঙ্গিতে খোঁচা দিচ্ছেন। তাছাড়া তারা দুজনেই মাঠে উত্তাপ তৈরী করছে। সাংসদ শামীম ওসমানের এই দুই বিশ^স্ত কর্মী সদর উপজেলা চেয়ারম্যানি চেয়ার দখলের জন্য পুরোদমেই সক্রিয় রয়েছে। অথচ কয়েক দিন আগে রেমাল নামক ঝরের বৃষ্টিতে ফুতল্লাবাসি পানিতে তলিয়ে গেলেও সেদিকে তাদের কোন নজরদারি নেই। ফতুল্লার জলাবদ্ধতা নিয়ে তারা দুজনেই নিরব রয়েছেন।

 

জানা যায়, বর্ষা না আসতেই ঘুর্ণিঝড় রিমেলের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জের গুরুত্বপূর্ন ও ঘণবসতিপূর্ন জনপদ ফতুল্লা। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে ড্রেনগুলোও তলিয়ে গেছে পানির নিচে। ডিএনডি এলাকাসহ ফতুল্লার নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি ও দোকানপাটেও ঢুকেছে বৃষ্টির পানি। এমনকি মসজিদ মাদরাসাও বাদ পড়ে নাই।  এতে করে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন ফতুল্লার কয়েক লক্ষ মানুষ।

 

 ডিএনডি প্রজেক্টের আওতায় খালগুলো উদ্ধার ও খনন করা হলেও অভ্যন্তরীন ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভঙ্গুর হওয়ায় ড্রেনগুলোতে পানি নামছে না। এতে খাল পর্যন্ত পানি যাচ্ছে না। ফলে ডিএনডি প্রকল্পের কাজ এগিয়ে গেলেও ফতুল্লা সহ আশপাশের অঞ্চলের মানুষ জলাবদ্ধতার ভোগান্তি থেকে রেহায় পাচ্ছে না। বৃষ্টিতে ফতুল্লা ইউনিয়নের লালপুর, পৌষার পুকুরপাড়, টাগারপাড়, দাপা ইদ্রাকপুর,  

 

এনায়েত নগর ইউনিয়নের ইসদাইর, গাবতলা, কুতুবপুর ইউনিয়নের দক্ষিন সেহাচর, পিলকুনী, নন্দলালপুর সহ প্রায় প্রতিটি জনপদ, কাশিপুর ইউনিয়নের গোয়ালবন্দ, হাট খোলা সহ বিভিন্ন এলাকা, এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাসদাইর, আমতলা, সহ বিভিন্ন এলাকার সড়কগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কোথায় হাঁটু আবার কোথায় জমেছে কোমড় পানি। কোথাও কোথাও বাড়ির নিচতলার রান্না ঘর ও সৌচাগার পানিতে তলিয়েছে। 

 

এতে স্বাভাবিক জীবন যাপনে বিরুপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ভোগান্তিতে পড়ছেন শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও। এমনকি কর্মী জীবিদেরকে কর্মস্থলে বিজে যেতে হচ্ছে। এতে করে অনেকে পানি বাহিত রোগ সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এত কষ্টের পরেও তাদের পাশে কেউ দাড়ায় নাই। স্বাধীনতার পর থেকে চলা ফতুল্লাবাসি এই ভোগান্তিতে মুক্তি পাচ্ছে না। কবে নাগাত তাদের মুক্তি মিলবে তাও কেউ জানেন না। 

 

তবে নির্বাচন আসলেও জনপ্রতিনিধিদের থেকে আশার বানি শুনেই যাচ্ছে। তাদের সেই আশা আর পুরণ হচ্ছে না। তাছাড়া সদর উপজেলা নির্বাচন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম এবং মহানগর যুবলীগের সভাপতি সাজনুর মাঝে হৈ চৈ চল্লেও ফতুল্লার মানুষের ভোগান্তি নিয়ে তাদের তেমন কোরন মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু এখানকার চেয়ারম্যানের চেয়ার দখলের জন্য তারাও বড় বড় বানি শুনান মাইকে। তাই ফতুল্লাবাসির দাবী সদর উপজেলার নির্বাচনে মানুষ তাকেই চেয়ারম্যান বানাতে চানা যে তাদের এই সমস্যা সমাধানের কাজ করবেন। কথায় বানী শুনাবেন না।

এই বিভাগের আরো খবর