রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

জলাবদ্ধতায় বিঘ্নিত শিক্ষা কার্যক্রম

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০২৩  

 

# রাস্তার পাশের খোলা ড্রেনে পড়ে গিয়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা
# শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠানো নিয়ে চরম দ্বিধায় অভিভাবকেরা

 

 

জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত ফতুল্লার জনজীবন। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থা। তবে বর্তমানে জলাবদ্ধতা এতটাই প্রকট যে শিক্ষা ব্যবস্থা পর্যন্ত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফতুল্লার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জলাবদ্ধতার কবলে শিক্ষাদান ব্যাহত হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পানি ঢুকেছে এবং যাওয়ার রাস্তায় হয়েছে হাঁটু সমান পানি। এতে করে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারছে না।

 

সম্প্রতি খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন ও চট্টগ্রাম এর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চট্টগ্রামে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের একজন ছাত্রী রাস্তায় জমে থাকা পানিতে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। সুতরাং স্কুলে পাঠানো কিংবা না পাঠানো নিয়ে অভিভাবকরা পড়েছে চরম দ্বিধায়।

 

ফতুল্লার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে জলাবদ্ধতার ভয়াবহ চিত্র প্রত্যক্ষ করা গেছে। সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, ফতুল্লা পাইলট স্কুল, হরিহরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর মাসদাইর প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ মডেল কলেজ, পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়, দেলপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মিসির আলি কলেজ শহ গোটা ফতুল্লার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ জলাবদ্ধতার কবলে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

 

কোন কোন প্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি ঢুকে গিয়েছে। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার রাস্তায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে করে ভেঙে পড়েছে ফতুল্লায় অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে ফতুল্লা পাইলট স্কুলের অভিভাবকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এই স্কুলের রাস্তায় হাঁটু সমান পানি, এই পানিগুলো ময়লা পানি, বিষাক্ত পানি।

 

আবার রাস্তার পাশে খোলা ড্রেন। এই বিষাক্ত পানি মাড়িয়ে বাচ্চা স্কুলে গেলে পানিবাহিত রোগ হবে। পাশের ড্রেনে যদি পড়ে যায় তাহলে মারাত্মকভাবে আহত হবে। এজন্য বাচ্চা কি স্কুলে আসতে দিতে ভয় লাগে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু সামনে পরীক্ষা, স্কুলে না আসলেও সমস্যা। এতে করে চরম দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি।

 

৭১ নং উত্তর মাসদাইর প্রাথমিক বিদ্যালয় এর এক অভিভাবক জানান, আমার বাচ্চা দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে ।এই বিদ্যালয় আসার রাস্তায় অনেক পানি জমে আছে। বিদ্যালয় এর মাঠেও পানি। বাচ্চারা স্কুলে আসার সময় ড্রেনে পড়ে যেতে পারে, যেকোনো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এজন্য অনেক কষ্ট করে নিয়ে আসতে হয়। পানির কারণে বাচ্চারা পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারছে না। শিক্ষকরা সময় মত আসতে পারছে না। তিনি এ জলাবদ্ধতার অবসান কামনা করেন।

 

এ ব্যাপারে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, স্কুলের মাঠে পানি, স্কুলে আসার রাস্তায় পানি। এতে করে শিক্ষার্থীদের যেমন আসতে অসুবিধা হয়, শিক্ষকদেরও তেমন অসুবিধা হয়। কেউ আসে আবার কেউ আসে না। এর ফলে মারাত্মকভাবে পাঠদান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান চান।

 

এ ব্যাপারে ফতুল্লা থানাধীন ইউনিয়ন পরিষদ এর জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, ফতুল্লার জলাবদ্ধতার সাময়িক সমাধান হয়েছে। শামীম ওসমানের হস্তক্ষেপে জেলা পরিষদ থেকে পাম্প দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য উচ্চ পর্যায়ে কথাবার্তা হচ্ছে। আশা করি জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান হবে খুব দ্রুত।

 

আরো বলেন, ফতুল্লা থানার জন্য ড্রেন এর ব্যবস্থা উন্নয়নে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। ড্রেন গুলো হয়ে গেলে জলাবদ্ধতা অনেকাংশ কমে যাবে। তবে স্থানীয়রা চান অতি দ্রুত এসব সমস্যা সমাধান হোক এবং জলাবদ্ধতা সমস্যা থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হোক। এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর