শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৭ ১৪৩১

জাতীয় দলে নতুন মুখ না’গঞ্জের ক্রিকেটার শহিদুল

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২১  

আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফরে জাতীয় ক্রিকেট দলে ডাক পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সন্তান শহিদুল ইসলাম। তিনি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন আদমজী ইপিজেড এলাকার বাসিন্দা। এছাড়াও তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।শ্রীলঙ্কা সফর উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) গতকাল শুক্রবার ২১ সদস্যের দল ঘোষণা করে। এতে নতুন মুখ হিসেবে দলে জায়গা করে নেন নারায়ণগঞ্জের উদীয়মান ক্রিকেটার শহিদুল ইসলাম।

তিনি নারায়ণগঞ্জের ওসমানী পৌর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘চন্দ্রা স্পোটিং ক্লাবে’ অনুশীলন করতেন। এই টিমের হয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ প্রিমিয়ার লিগসহ বিভিন্ন ঘরোয়া টূর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলেন। অতঃপর ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট লীগে বরিশাল বিভাগের হয়ে সামনে আসেন তরুণ এই ক্রিকেটার। একই বছরের ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) চট্টগ্রাম ভাইকিংসের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় শহিদুলের।

২০১৮-২০১৯ সেশনে বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগে মধ্যাঞ্চল ক্রিকেট দলের হয়ে বোলিংয়ে নৈপূণ্য দেখিয়েছিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম পাঁচ উইকেট শিকার করার কৃতিত্ব অর্জন করা ডানহাতি এই পেসার। গতবছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনাল ম্যাচে বাবার মৃত্যুশোক কাটিয়ে শেষ ওভারে জেমকন খুলনার জয়ের নায়ক হয়েছিলেন শহিদুল। এদিকে শহিদুলের জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত তার সাবেক ক্লাব নারায়ণগঞ্জের ‘চন্দ্রা স্পোটিং ক্লাবের’ কোচ, পরিচালক ও সতীর্থ ক্রিকেটাররা।

শহীদুল ইসলামের সাবেক কোচ মো. ওমর ফারুক সোহাগ দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘এটা খুবই আনন্দের বিষয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো শহিদুল খুবই ভালো ছেলে এবং পরিশ্রমি একজন ক্রিকেটার। প্র্যাক্টিসে কখনো ফাঁকি দিতো না। প্র্যাক্টিসে মনোযোগি ছিলো। সর্বদা পারফর্ম করার চেষ্টা করে। আসলে চেষ্টা করেছে বিধায় শহিদুল আজ এই পর্যায়ে। অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সে চেষ্টা চালিয়ে গেছে। গত ৩-৪ বছর শহিদুল ধারাবাহিক পারফর্ম করেছে। ও পাইপ লাইনেও ছিলো। এটা আমার কাছে আনন্দের বিষয়। আমি গর্ববোধ করছি যে, আমার একাডেমির একটি ছেলে ন্যাশনাল টিমে সুযোগ পেয়েছে। আমি নিজেও একজন ক্রিকেটার। পেশাদারী কোচ না হয়েও ক্রিকেটের পাশাপাশি কোচিং করিয়েছি শহিদুলকে। সেই শহিদুল আজ ন্যাশনাল টিমে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।’

তিনি বলেন, ‘শহিদুল যথেষ্ট ভালো ও সৎ ছেলে। আমার জানা মতে, বিগত ১০ বছরে ও এক ওয়াক্ত নামাজও ছাড়েনি। আমি শহিদুলের আরো সফলতা কামনা করছি। পাশাপাশি সকলের কাছে দোয়া চাচ্ছি, যেন ও ন্যাশনাল টিমে ভালো করতে পারে।’ চন্দ্রা স্পোটিং ক্লাবের পরিচালক মো. ফিরোজ মাহমুদ সামা দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘আমার নিজের একাডেমির প্লেয়ার শহিদুল জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে। এটা নিয়ে আমার চেয়ে বেশি খুশি কেউ হবে বলে মনে হয় না। এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের বিষয়। আমার একাডেমির একটি প্লেয়ার জাতীয় দলে খেলবে, এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কী হতে পারে! শহিদুল কেবল খেলোয়াড়ই নয় একজন মানুষ হিসেবেও যথেষ্ট ভালো। আমি তার আরো সফলতা কামনা করি। যেন জাতীয় দলে ধারাবাহিক ভাবে পারফর্ম করে বাংলাদেশের জয়ে ভূমিকা রাখতে পারে। শহিদুলের জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।’শহিদুলের সতীর্থ খেলোয়াড় মো. তরিকুল ইসলাম নিলয় দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত। আসলে শহিদুল একদিন জাতীয় দলে খেলবে- এমন প্রত্যাশা আমাদের সকলেরই ছিলো। ও একজন কোয়ালিটি সম্পন্ন খেলোয়াড়। পেস বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং ও ফিল্ডিং উভয় বিভাগেই পরিণত একজন ক্রিকেটার।’

এদিকে, জাতীয় দলে প্রথম বারের মত সুযোগ পাওয়া শহিদুল ইসলাম গতকাল দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘জাতীয় দলের হয়ে খেলাটা স্বপ্নের মতো। সকলের দোয়ায় মহান আল্লাহ আমাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে। অনুভুতি বলে বোঝাতে পারবো না। তবে, জাতীয় দলের হয়ে দেশের জন্য ভালো কিছু করতে চাই। এখনো কিছু ধাপ বাকি আছে। করোনা পরীক্ষা করিয়েছি। নারায়ণগঞ্জসহ দেশবাসির কাছে দোয়া চাই। যেন স্কোয়াডে সুযোগ পেলে ভালো কিছু করতে পারি।’ 

এই বিভাগের আরো খবর