সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ব্যাটারীচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১  

বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মতো ব্যস্ততম সড়কে অবাধে চলছে নিষিদ্ধ ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি ও লেগুনা। মহাসড়কে তাকালেই মনে হয়, মহাসড়কটা ব্যাটারীচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের দখলে। এসব গাড়িগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে মহাসড়কে উল্টো পথে চালকদের ইচ্ছে মতো চলছে ব্যাটারীচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের মতো এসব অযান্ত্রিক যান। মহাসড়কে এসব তিন চাকার অবৈধ নিষিদ্ধ যানগুলো বেপরোয়াভাবে চলাচলের ফলে প্রতিদিনই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।

 

গতকাল বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়, সাইনবোর্ড, কাঁচপুর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। পুলিশের সামনে দিয়ে শত শত ব্যাটারীচালিত রিক্সা, সিএনজি, লেগুনা অবাধে চলাচল করছে। তবে হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের টিআই  প্রশাসন মো. মশিউর আলমের দাবি, মহাসড়কে নিষিদ্ধ যান পেলেই আটক করে মামলা দিয়ে সরাসরি ডাম্পিং এ পাঠিয়ে দিচ্ছি। গত আগষ্ট মাসে ৫৮১ টি মামলা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশ মামলা ছিলো ব্যাটারী চালিত নিষিদ্ধ রিকশার বিরুদ্ধে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের ঢাকা মূখী পয়েন্টে প্রতিনিয়ত যানজট রয়েছে, তার মূলে রয়েছে উল্টো পথে চলাচল করা ব্যাটারী চালিত রিকশা। চালকের আসনে অধিকাংশই হলো ১২-১৪ বছরের শিশু ও বৃদ্ধদের দেখা যায়। ফলে তাদের মধ্যে সচেতনতা বা দায়িত্ববোধ নেই বললেই চলে। এতে সড়ক দুর্ঘটনার পাশাপাশি যানজটের জন্য মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে। কথা হয় ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক মো. টুকু মিয়ার সাথে, তিনি বলেন, ব্যাটারী চালিত রিকশার দাম কম ও ভাড়া বেশী হওয়ায় এটি নতুন ব্যবসা হিসেবে নিয়েছেন তিনিসহ অনেকে। প্রতিদিন ১ থেকে ২ হাজার টাকা পযর্ন্ত তার আয় হয়। মহাসড়কে ভাড়া বেশী পাওয়ার আশায় রিকশা চালান তারা।  

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিদিন নতুন করে রিকশা নামছে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সড়কে। একটি রিকশা রাস্তায় নামলেই মালিকের লাভ। একটি ব্যাটারী চালিত রিকশা তৈরীতে খরচ হয় ৩০/৪০ হাজার টাকা। মাসে আয় হয় কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা। রিকশার কোনো লাইসেন্স লাগে না। চালকেরও কোন লাইসেন্স বা প্রশিক্ষণ লাগে না।  

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এসব অটোরিকশার কারণে বিকেল এবং সন্ধ্যায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া এসব অটোরিকশাগুলো যেসব ইলেকট্রিক হর্ণগুলো ব্যবহার করে এগুলোর কারণে প্রচুর পরিমাণে শব্দদূষণ হচ্ছে। এতে করে এ মহাসড়কে যাতায়াত করা হাজার হাজার মানুষ নানাবিধ সমস্যায় ভুগছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডে ইজিবাইক ও সিএনজির লাইন ম্যান মাসুদ আর কামালের মাধ্যমে পুলিশ কে ম্যানেজ করে এসব ইজিবাইক, সিএনজি ও লেগুনা চলাচল করে আসছে।

 

বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি শিমরাইল শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাওলাদার বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে পাত্তা না দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত থ্রি হুইলার (ইজিবাইক) ও মোটরচালিত রিকশা চলাচল করছে। কখনো কখনো পুলিশের অভিযানের মুখে এগুলোর চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকছে। তবে অভিযান থেমে গেলে পরিস্থিতি ফিরছে আগের অবস্থায়। ফলে বিভিন্ন অহরহ দূর্ঘটনার মত ঘটনা ঘটেছে। যোগাযোগে অতি গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যেখানে, হেভি পন্যবাহি ও পরিবহন চলাচল করে করে তাই দূর্ঘটনারোধের জন্য এই মহাসড়কে কোনভাবেই নিষিদ্ধ ও অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধ করার দাবি জানান তিনি।  

 

গাজীপুর রিজিয়ন হাইওয়ে পুলিশ সুপার আলী আহম্মদ খান বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন এলাকা হওয়ায় চলাচলের জন্য তারা লাইসেন্স দিয়ে থাকে সার্ভিস লাইনে চলাচলের জন্য। তারপরও আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। মহাসড়কে অযান্ত্রিক যান পেলে আটক করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুসারে দুই হাজার পাঁচ শত টাকা জরিমানা করে মামলা দেওয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরো খবর