সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

তীব্র যানজটে নাভিশ্বাস ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের যাত্রীদের

সায়মুন ইসলাম

প্রকাশিত: ৭ জুলাই ২০২২  

 

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডটি অত্যন্ত ব্যস্ততম একটি সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। রাজধানীর সবচেয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা হওয়ায় ব্যবসায়িক, ব্যক্তিগত এবং  পড়াশোনার কাজে প্রায় প্রতিদিনই এ রুটে চলাফেরা করে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের মানুষ। এত গুরুত¦পূর্ন একটি রাস্তা হওয়া সত্ত্বেও এ রাস্তার বেহাল দশা ও ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ চলমান থাকার কারণে প্রায় এক বছর ধরে  প্রতিদিন যানজটের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘন্টা। তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।  কাজ  ১৭ মাসের মধ্যে সম্পাদনের চুক্তি হয়। কিন্তু সময় প্রায় ফুরিয়ে গেলেও  অনেক কাজ  বাকি। কাজের এই কচ্ছপ গতির কারনে ভোগান্তির শেষ নেই সাধারণ মানুষের। তারা কাজের এই ধীর গতির কারনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

 

জানা যায়,যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ৮ জুলাই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডটি ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়নে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এনডিই-টিবিএল-এইচটিবিএল-জেভি নামক যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করা হয়। বলা হয় জুন ২০২২ এর মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য। এ প্রকল্পের আওতায় ৩ টি আন্ডারপাস ও ২ টি ফুটওভার ব্রিজ হবে।  ফুটওভার ব্রিজগুলো তৈরি হবে সাইনবোর্ড ও  জেলা প্রশাসক এর কার্যালয়ের সামনে। আর আন্ডারপাসগুলো তৈরি হবে যথাক্রমে শিবু মার্কেট, জালকুড়ি ও ভুঁইগড় এলাকায়। ধারণা করা হচ্ছে এই আন্ডারপাস ও ফুটওভার ব্রিজগুলি তৈরি হয়ে গেলে যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে। তবে সময় শেষ হয়ে গেলেও প্রকল্পের সিংহভাগ কাজ এখনও বাকি। পরবর্তীতে প্রকল্পের মেয়াদ মেয়াদ আরোও এক বছর বাড়িয়ে দেয়া হয় অর্থাৎ নতুন চুক্তিতে ২০২৩ সালের জুন এর মধ্যো কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় শিবু মার্কেট, জালকুড়ি,ভুঁইগড় এলাকায় সড়ক প্রশস্তকরনের কাজ চলছে। শিবু মার্কেট থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত এলাকায়  কিছু কিছু কাজ করে রাখা হয়েছে। যার ফলে রাস্তায় থেমে থেমে চলছে গাড়ি। আধাঘন্টার রাস্তা পাড় হতে সময় লাগছে ২ ঘন্টা।


সবচেয়ে বেশি যানজট এ ভূগতে হচ্ছে শিবুমার্কেট ও জালকুড়ি এলাকায়।  যানজটে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ  এই দীর্ঘমেয়াদী যানজট নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ।


এই যানজটের কবলে পড়া ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, সপ্তাহে ৬ দিন আমি এই রাস্তায় চলাফেরা করি।  আমার ক্যাম্পাসে যেতে সময় লাগে ১ ঘন্টা । অথচ আমি ৩ ঘন্টা সময় নিয়ে বের হই। বাকি ২ ঘন্টা এ জ্যামে চলে যায়। গত এক বছর ধরে এই সমস্যা নিয়ে চলাফেরা করছি। যানজটের এই প্রভাব আমার পড়াশোনা ও শারীরিক অবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।


এ রুটে নিয়মিত চলাচল করা উৎসব বাসের এক চালক জানান,  নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা যেতে আমাদের মূলত ৩০ মিনিট সময় লাগে। অথচ বিগত কয়েক মাস ধরে দ্বিগুন, তিনগুন সময় বেশি লাগছে। এতে করে আমাদের ট্রিপ এর সংখ্যা কমে গেছে। ইনকাম কমে গেছে।
জালকুড়ি এলাকার এক বাসিন্দা জানান, এখানে প্রতিদিন দীর্ঘক্ষণ জ্যাম লেগেই থাকে। রাস্তার কাজের জন্য মূলত এই অবস্থা। তবে রাস্তার কাজের ধীরগতির কারনে তিনি বিরক্ত এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন । তিনি তথা প্রত্যেকে এর দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করার  দাবি জানান।এমই/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর