শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ১৩ ১৪৩১

তীব্র শীতে দুর্ভোগে খেটে খাওয়া মানুষ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬ জানুয়ারি ২০২৩  


কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে সৃষ্ট তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ নগরীর জনজীবন। বিশেষ করে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জের ৫টি উপজেলাতেই তীব্র শীতের তথ্য মেলে। বলা যায়, পুরো জেলার মানুষই শীতে কাঁপছে। কনকনে ঠাণ্ডায় ঘর থেকে বের হতে সমস্যায় পরছেন অনেকেই।

 

 

গ্রাম-গঞ্জসহ শহরেও অনেকে আগুন জ্বালিয়ে শীতকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছেন। গোটা শরীর গরম কাপড়ে ঢেকেও যেন শীত ঠেকানো যাচ্ছে না। ভোর রাত থেকে বেলা বাড়া পর্যন্ত সড়ক-মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে সকল যানবাহন। রিকশা-ভ্যান, অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালকরা কনকনে ঠাণ্ডায় বেশি বিপাকে পড়েছে।

 

 

ঠাণ্ডা বাতাসে ফাঁকা রাস্তায় হাত গুটিয়ে গাড়িতে বসে আছে এসব চালক, অনেকেই গাড়ির হ্যান্ডেল ধরে কাঁপছে। আবার ঠাণ্ডা বাতাসে কাজের খোঁজে ঘুরছে দিনমজুরেরা।

 


 
প্রতিদিন সকালে নগরীর ২নং গেট ও মন্ডলপাড়া পুলে বসে দিনমজুরের বেচাকেনা। শহরের লোকজন তাদের বাসাবাড়িতে কাজের জন্য এইখান থেকে দরকষাকষি করে দিনমজুরদের নিয়ে যায়। দেখা যায়, তীব্র শীতের প্রভাবে এসব খেটে খাওয়া দিনমজুর কোন কাজ পাচ্ছেন না।

 

 

অসহায় মানুষগুলো ঠাণ্ডায় জবুথবু হয়ে বসে আছেন, যদি কেউ কাজে নিয়ে যায় সেই অপেক্ষায়। ২নং গেট এলকায় কাজের সন্ধানে দিনমজুর আয়জার আলী শীতের লম্বা সুয়েটার আর মাফলার পড়ে খালি চোখ দুটো বের করে বসে আছেন। তিনি বলেন, সকাল ৭ টা থেকে বসে আছি, এখন পর্যন্ত কেউ কাজে ডাকছে না।

 

 

শীতের জন্য কয়েক দিন থেকে কাজ-কাম একটু কমই পাচ্ছি। কাজ না পেলে চলবো কি করে? নগরীর চাষাঢ়া মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশাচালক মজিবুর হোসেন বলেন, ক'দিন থেকে খুবি শীত পড়ছে, আর ঠাণ্ডা বাতাসে বাহিরে গাড়ি চলাতে পারছি না। কিন্তু কি করবো পেটের ক্ষুধা তো আর শীতের দাপট মানে না।

 

 

বাড়িতে ছেলে-মেয়েরা আছে, একদিন রিকশা না বের করলে সংসার চলে না। সংসারের চাহিদা মেটাতে শীতে কাঁপলেও গাড়ি বের করেছি। সকালে কথা হয় একজন বাসচালক মোহম্মদ আলীর সাথে, তিনি বলেন, ‘দুই থেকে তিন দিন যাবৎ সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। সারাদিন তো নারায়ণগঞ্জ-বায়তুল মোকাররম পর্যন্ত থাকতে হয়, সব জয়গায় একই রকম ঠাণ্ডা বাতাস। বাতাসই বেশি কাবু করছে। হাত-পা বরফ হয়ে আছে গাড়ি চলাতে খুব অসুবিধা হচ্ছে।’

 

 

দিগুবাবুর বাজারের সবজি দোকানদার সোহেল রানা বলেন, ‘শীতে তো কাঁপছি, আবার সবজিতে পানি দিতে হয়। পানি তো আরও ঠাণ্ডা। ঠাণ্ডায় জীবন শেষ, দুইদিন থেকে সুর্যের মুখও দেখা যায়নি। যদিও এ বেলা ১২টার পর থেকে সুর্য উঠতে দেখা গেছে। তবে ঠান্ডা বাতাস কমেনি।

 

 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধানজনিত কারণে যে শীতের তীব্রতা এটা আরও দু-একদিন থাকতে পারে। শনিবার থেকে হয়তো পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে সেটা স্থায়ী হবে না, দু-এক দিন পর হয়তো আবার পরিস্থিতি এমনই থাকবে। এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর