রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪   ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

ধোঁয়াশায় জেলা বিএনপি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২৪  

 

 

পরিবর্তন হচ্ছে নেতৃত্ব আসছে নয়া কমিটি। কমিটিতে স্থান পেয়েই হয়ে যাচ্ছে রাজা-মহারাজা করছেন কমিটি বাণিজ্য ও লুটছেন আর্থিক সুবিধা। বিগত দিনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রত্যেকটি কমিটিকে ঘিরেই এই দৃশ্যপট লক্ষ্য করা গেছে। তারা দলকে সুসংগঠিত করার বদলে দলের মধ্যে নিজেদের প্রভাব বিস্তারকে প্রাধান্য দিতেন বেশি। যার অভিযোগ শুধু নারায়ণগঞ্জেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না।

 

 হাইকমান্ড পর্যন্ত অবগত ছিলেন বিষয়টিতে। কিন্তু এতো কর্মকালাপ অতিবাহিত করলেও জেলা বিএনপিকে পুর্ণাঙ্গ কমিটিতে রূপ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন সকলেই। বিগত দিনে জেলা বিএনপির কার্যক্র ধীরগতি থাকায় কোন ইউনিটে কমিটি গঠন হয়নি এমনকি জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ বছর যাবৎ পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বঞ্চিত নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

 

 এদিকে সকল কালো হাত ভেঙ্গে দিয়ে সাবেক নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাবেক জেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম ফারুককে খোকনকে নিয়ে জেলা বিএনপির নবগঠিত ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। যার কয়েক মাসের মাথায় তারা দুইজন একত্রিত হয়ে জেলা বিএনপির সকল ইউনিটের কমিটি গঠন করে। কমিটি গঠনের পরের বছরের ১৭ জুন সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এই গিয়াস-খোকন। 

 

এর পর সম্মেলনের ১৩ মাসে এখনো হয়নি কমিটি পূর্ণাঙ্গ যা নিয়ে দিনে দিনে সংগঠনে ধোঁয়াশার মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছেন। বিগত দিনে কোন নেতৃত্ব করতে পারেনি জেলা বিএনপির পুর্ণাঙ্গ কমিটি। এবার ও নেতাকর্মীদের আস্থা থাকা কমিটি ও ব্যর্থতার প্রমান দিতে যাচ্ছেন। তা ছাড়া গত বছর জুলাই মাসে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভাষ্য দিয়ে বলেছিলেন যে, দলীয় হাইকমান্ড জেলা বিএনপির খসড়া জমা দিতে বলা হয়েছিলেন। 

 

সেই পরিপ্রেক্ষিতে তারা প্রতিটি ইউনিটের নেতাকর্মীদের সাথে একত্রিত হয়ে কয়েক দফায় মিটিং শেষে ৩০০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে একটি খসড়া কেন্দ্রে জমা দিয়েছিলেন। জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে ইচ্ছা পোষন করছে এদের সাথেই সমন্বয় করে ১৫১ সদস্য বা ১৬১, ১৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের আবাস পাওয়া থাকলে ও বর্তমানে সেই বিগত দিনের কমিটির মতোই বর্তমান আস্থাশীল কমিটির ও ঝিমিয়ে পড়া ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।  

 

কিন্তু দায়িত্বশীলরা বলছেন, দীর্ঘদিন বিএনপির আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে এই প্রহসনের নির্বাচন হয়ে যাওয়ায় হতাশা বোধ করলে ও বর্তমানে আবারো চলমান পক্রিয়ায় কমিটি গঠন প্রথা চালু করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় লক্ষ্য করা যাচ্ছে

 

কোনো সময় জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হতে পারে। যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে আপাতত মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও গোলাম ফারুক খোকনের নেতৃত্বেই বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হবে। যাকে ঘিরে আবারো ঝিমিয়ে পড়া জেলা বিএনপিতে স্থান পেতে লবিং করা নেতাকর্মীরা নড়া-চড়া দিয়ে বসেছেন। সকলেই আবারো কমিটিতে স্থান পেতে কেন্দ্রমুখী হওয়া শুরু করেছেন।  

 
 
দলীয় সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলনের ১৩ মাস পেরিয়ে যাচ্ছে।  কিন্তু এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটির আর দেখা মিলছে না। এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন সময় কমিটি গঠনের জন্য তৎপরতা পরিলক্ষিত হলেও পরবর্তীতে সেটার আর কোনো সফলতা দেখা যায়নি। জেলা বিএনপির লেছে সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়ে আসছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। তবে এবার কমিটি গঠনে বেশ সরবতা পরিলক্ষিত হচ্ছে বিএনপিতে।

 

 এর আগে দীর্ঘ ১৪ বছর পর (১৭ জুন) নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সভাপতি পদে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদকপদে গোলাম ফারুক খোকন। জানা গেছে, জেলা বিএনপির ৯ সদস্য আহ্বায়ক কমিটির গঠনের পর থেকে এই গিয়াস ও খোকন একের পর এক চমক দেখিয়েছেন। এমনকি এদের ধারা সকল ইউনিট আরো শক্তিশালী ও গতিশীল হতে দেখা গেলেও। বর্তমানে জেলা বিএনপিতে স্থবিরতা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে যা কমিটি পুর্ণাঙ্গ না হওয়ার কারণেই হচ্ছে বলছে নেতৃবৃন্দ।

 

তা ছাড়া এর আগে ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামানকে সভাপতি ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। সাড়ে ৩ বছর পর সেই কমিটি ভেঙে দিয়ে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্র থেকে পুনরায় তৈমূরকে আহ্বায়ক ও মামুন মাহমুদকে সদস্য সচিব করে জেলা বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন কর হয় । তবে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মেয়র নির্বাচন করায় তৈমূর আলম খন্দকারকে আহ্বায়কের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে মনিরুল ইসলাম রবিকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয়।

 

 একটি কমিটি ও সংগঠনটিকে পুর্ণাঙ্গ করতে পারেনি। পরবর্তীতে একই বছরের ১৫ নভেম্বর মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও গোলাম ফারুক খোকনের নেতৃত্বে কমিটি আসলে কমিটিতে গতির দেখা মিলে। কিন্তু যখনই তারা দুইজন সম্মেলন করে আহ্বায়ক কমিটি ভেঙ্গে দুই নেতার জেলা বিএনপি করে ফেলেন তখনই জেলা বিএনপি সেই গর্জন অনেকটাই ঝিমিয়ে পরতে দেখা যায়। যা পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের মাধ্যমে জেগে উঠবে বলছে নেতাকর্মীরা।



এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন যুগের চিন্তাকে বলেন, বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যে কমিটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে যে কোনো সময় কেন্দ্রীয় বিএনপি থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটির ঘোষণা হতে পারে। এই কমিটি আরো আগেই আশার কথা থাকলে ও বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে হাইকমান্ড ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু এবার শতভাগ আশাবাদী জেলা বিএনপিকে আরো গতিশীল করতে যোগ্যদের মাধ্যমে  আসছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি।

এই বিভাগের আরো খবর