শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ৬ ১৪৩১

নাক চেপে মসজিদে যান মুসুল্লীরা

ইউসুফ আলী এটম

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

 

পূর্ব ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকার সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদটির নাম ‘পূর্ব ইসদাইর শাহী জামে মসজিদ’। আশির দশকের শুরুতে নতুন এই মহল্লার কতিপয় মুসুল্লী টিনের একটি ছাপড়া তুলে এই মসজিদটির গোড়া পত্তন করেছিলেন। দিন গড়ানোর সাথে সাথে মহল্লার পরিধি বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে লোক সংখ্যাও। এলাকাবাসীর সার্বিক সহায়তায় সেই ছাপড়া ঘরের মসজিদটি আজ দৃষ্টিনন্দন তিন তলায় রূপায়িত করা হয়েছে।

 

 

মসজিদটির ভেতরের সূক্ষ্ম কারুকাজ দেখলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, কিছু অবিবেচক নারী-পুরুষ মসজিদের পশ্চিম পাশের খালি জায়গাটিকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করে ফেলেছেন। বাসা থেকে ময়লাভর্তি পলিথিনের ব্যাগ হাতে নিয়ে বের হয়ে মসজিদের পাশের এই খালি জায়গায়টায় ছুঁড়ে ফেলে নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটতে থাকেন।

 

 

আশপাশের কয়েকটি বহুতল ভবনের দু’তলা, তিনতলা এমনকি ছাদে দাঁড়িয়েও ময়লাভর্তি পলিথিনের ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলতে দেখা যায়। এভাবে দিনের পর দিন বাধাহীনভাবে ময়লা ফেলার কারণে গোটা এলাকার পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ে। স্তূপীকৃত ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। নামাজের সময় মুসুল্লীদেরকে নাক চেপে মসজিদে ঢুকতে হয়। ওখানে ময়লা না ফেলতে মৌখিকভাবে নিষেধ করেও কোন কাজ না হওয়ায় এলাকার কিছু তরুণ স্বপ্রণোদিতভাবে এগিয়ে আসে।

 

 

‘এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা সম্পূর্ণ নিষেধ, আদেশ অমান্যকারীকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে’ লেখাসম্বলিত  দু’টো সাইনবোর্ড বাঁশ গেড়ে অকুস্থলে টানিয়ে দেয়া হয়। সাইনবোর্ডে দু’একটি ভুল বানান এবং শব্দ চয়নে অসঙ্গতি থাকলেও এলাকাবাসীর টনক নড়তে শুরু করেছে। রাস্তার পাশে আত্মগোপনে থেকে অনেক তরুণকে পাহারা দিতে দেখা গেছে। এই নজরদারির ফলে ওখানে ময়লা ফেলা কমতে শুরু করেছে।
 

 


বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে পূর্ব ইসদাইর শাহী জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ইব্রাহিম নিট গার্মেন্টস(প্রাঃ) লিঃ-এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. ইউসুফ বলেন,‘আমি নিজে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও ওখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে পারিনি। তরুণদের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সমাজহিতৈষীরা তরুণদের ভালো কাজকে সবসময়ই সাপোর্ট দিয়ে থাকেন। দেখা যাক,ওরা কতোদিন ধৈর্য ধরে কাজ চালিয়ে যেতে পারে।’

 


মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল বাছেদ রতন বলেন, তরুণদের উদ্যোগ প্রশংশিত। কিন্তু তারা হাঁপিয়ে যাবে। আবেগের বশে হয়তো কয়েকদিন পাহারা দেবে কিন্তু ফাঁকা পেলেই সুযোগসন্ধানীরা ময়লা ফেলা শুরু করবে। অতীতে আমাদের নানা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

 


এলাকার ঐতিহ্যবাহী সামাজিক সংগঠন ‘শাপলা সংসদ’এর সভাপতি আব্দুল কাদের সিকদার তরুণদের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, মালিক যদি তার খালি জায়গাটি ভরাট করে ফেলেন তবে আর কিছুই করতে হবে না। এখানে ঈদগাহ করার জন্য মসজিদ কমিটিরি পক্ষ থেকে জায়গাটি ক্রয় করতে মালিককে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। প্রয়োজনে মসজিদ কমিটি আবার মালিকের কাছে এ প্রস্তাব নিয়ে যাবেন।       এন. হুসেইন রনী  /জেসি