শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৭ ১৪৩১

না.গঞ্জ ক্লাবের উন্নয়নে সবসময়ই পাশে আছি : এম. সোলায়মান

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪  

 ব্যবসায়ীদের যে কোন সংকটে পাশে এসে দাঁড়ান এমন প্রশ্ন করলে যে কোন ব্যবসায়ী সজ্জন ও নির্ভেজাল লোক হিসেবে এম সোলায়মানের নাম উচ্চারণ করবেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের পর ফ্যাস্টিস্ট সরকার পতনের পর ক্ষতিগ্রস্ত নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সংস্কারের জন্য যে সংস্কার কমিটি করেন সেখানেও এম সোলায়মানকেই দায়িত্ব দেন ক্লাবের সদস্যরা। বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনকে সংগঠতি করার জন্যও ৫ আগস্টের পর এম সোলায়মানকেই বেঁছে নেন ব্যবসায়ীরা। এককথায় সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যবসায়ী হিসেবে সবসময়ই খ্যাতি রয়েছে এম সোলায়মানের। এই মাসেই ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের নির্বাচন। ক্লাবের সদস্যদের অনুপ্রেরণায় ক্লাবটির অগ্রগতি এগিয়ে নেয়ার জন্য আবারও সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রার্থী হয়েছে এম. সোলায়মান। ক্লাব সদস্যদের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ এবং উৎসবমূখর পরিবেশে এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। ভোটারদের সাথে নির্বাচন সংক্রান্ত আলাপচারিতার ফাঁকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ক্লাবের নানা বিষয় নিয়ে যুগের চিন্তার সাথে কথা বলেছেন এম. সোলায়মান। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সাথে আমার আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এখানকার যারা সদস্য তাদের প্রত্যেককেই আমি আমার পরিবারের অংশই মনে করি। আর আমার এই কৃতজ্ঞতা থাকার কারণও আছে। ১৯৯৮ সালে আমি যখন প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সদস্য পদে নির্বাচিত হই, তখন মাত্র ২৫০ জন সদস্য ছিল। ক্লাবের ফান্ডের অবস্থাও তেমন ভালো ছিলনা। কিন্তু আমি সুযোগ পাওয়ার পর সকলের সাথে মিলেমিশে ধারাবাহিকভাবে ক্লাবের উন্নয়নে কাজ করি। ক্লাব সদস্যরা বারবার আস্থা রেখেছেন বলেই আমি তিনবার জুনিয়ার ভাইস প্রেসিন্ডেন্ট, তিনবার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং তিনবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। আমি ক্লাবটির উন্নয়নে সবসময়ই সম্পৃক্ত ছিলাম। ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ক্লাবটির সুইমিং পুল নির্মাণ কনভেনয়ারিং কমিটিতে ছিলাম। পুরনো কমিউনিটি সেন্টারটি যখন হয় তখন আমি সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলাম। ৬ জন্য সভাপতির সাথে আমি ক্লাবের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। ৫ আগস্টের পর ক্লাবের সংস্কারে যখন আমাকে সদস্যা দায়িত্ব দেন আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি ক্লাবটিকে ব্যবহার উপযোগী করার জন্য।

৫ আগস্টের পর দায়িত্ব পালন নিয়ে এম সোলায়মান বলেন, ক্লাবের ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে ক্লাব স্টাফদের অবদান সব সদস্যই একবাক্যে স্বীকার করবেন। কেননা ২৭০ জনের বেশি স্টাফ যাদের বেতন আনুমানিক ৪৭ লাখ টাকার মতো, তাদের সাথে যখন শলাপরামর্শ করি, তারা বলেছেন, তারা অর্ধেক বেতন নিয়ে হলেও ক্লাব দ্রুত চালু হওয়া পর্যন্ত তাদের কাজ চালিয়ে যান। তাদের এই ৪ মাসের ত্যাগের কারণেই ক্লাবটি দ্রুত চালু করা গেছে। ক্লাবের লসগুলো দ্রুত কাটিয়ে উঠা সম্ভবপর হচ্ছে। আমি আমার ক্লাবের সম্মানিত সদস্যদের দৃঢ়কণ্ঠেই বলেই, আগামী ৩ মাসের মধ্যে নিমার্ণাধীন কমিউনিটি সেন্টারটি চালু হয়ে যাবে। এটি চালু হয়ে গেলে ক্লাবের আর কোন লস থাকবেনা। তিনি বলেন, এর সাথে আরেকটি কথা না বললেই নয়, ৫ আগস্টের পর ক্লাবের সদস্যরা যে যেভাবে পেরেছেন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ক্লাবের ফান্ডের বাইরে যে যেভাবে পেরেছেন ব্যক্তিগতভাবে অর্থায়ন করে, বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে ক্লাবটিকে দ্রুত সচল করার ব্যাপারে  সহযোগিতা করেছেন। এজন্য আমি তাদের সকলের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। ৫ আগস্টের পর এখন অবধি যত হিসাব আছে আসন্ন এজিএমে আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সকল হিসেব দিয়ে দিবো।

এম সোলায়মান বলেন, যদি ক্লাবের সম্মানিত সদস্যরা আমার উপর আস্থা রাখেন, আমি সুযোগ পাই সেক্ষেত্রে প্রথম কাজটি হবে আগামী তিনমাসের মধ্যে ক্লাবের কমিউনিটি সেন্টারটি চালু করে ফেলা। তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ ক্লাব সবসময়ই স্নুকার, টেনিস এবং সুইমিংয়ে বিভিন্ন ক্লাবের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথম সারির পুরস্কার জেতে। আমি চাইবো, এই ধারাটি যাতে সবসময় অব্যাহত রাখতে পারি। এই খেলাগুলোতে যাতে সবসময়ই আমরা জেতার রেকর্ডটা ধরে রাখতে পারি। যদি নির্বাচিত হয়ে সুযোগ পাই তবে, ক্লাবের সদস্যদের জন্য খাবারের মানটা উন্নত করার চেষ্টা করবো, ক্লাবের ডিসিপ্লিনটা ঠিক করার ব্যাপারে কাজ করবো। ক্লাব মেম্বারদের সুযোগ-সুবিধার দিকটা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কাজ করবো। ক্লাবের ফান্ডে নয়, মেম্বারদের ব্যক্তিগত ফান্ডে আমেরিকা, সিঙ্গাপুরসহ দেশে ও বিদেশে নানা বিনোদন প্রোগ্রামের আয়োজন করবো। এম সোলায়মান বলেন, যেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেটি হচ্ছে আমাদের ক্লাবের লাইব্রেরিটা পুড়ে গেছে। আমি এই নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্লাব সদস্যদের বলতে চাই, আগামী ৩ মাসের মধ্যেই আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নের আমি ক্লাবের লাইব্রেরিটা আগের রূপে ফিরিয়ে এনে চালু করবো। ক্লাবের সদস্যরা যদি প্রয়োজন মনে করেন, ক্লাবের উন্নয়নের স্বার্থে আমাকে প্রয়োজন; আমি অবশ্যই আমার অভিজ্ঞতা এবং স্পৃহা দিয়ে ক্লাব সদস্যদের এই ভরসার মূল্যায়ন দেয়ার চেষ্টা করবো। বিগত দিনেও আমি সেই কাজটিই করেছি।  

এম সোলায়মান বলেন, নির্বাচন হচ্ছে, উৎসবমুখর বিষয়। ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবের সদস্যরাই এই নির্বাচনের ভোটার। আমরা একটা পরিবার।  কোন ধরণের বিশৃঙ্খলায় আমরা জড়াবোনা। আমরা আনন্দের সাথে যারাই জয়ী হোক, তাদেরকে নিয়ে একত্রিত হয়ে ক্লাবের উন্নয়নে কাজ করবো।

প্রসঙ্গত, আগামী ২১ ডিসেম্বর ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের নির্বাচন। নির্বাচনে ১১টি পদের মধ্যে একজন সভাপতি, একজন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, একজন জুনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং আটজন পরিচালক। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে এম সোলায়মানের সাথে মো. মাহবুবুর রশিদ জুয়েল, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে ইকবাল হাবিব ও মারুফ আহমেদ বাবু, জুুনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মো. সাইদুল্লাহ হৃদয়, ইঞ্জিনিয়ার আমিনুজ্জামান মৃধা, খাজা এবায়দুল হক টিপু, এবং সদস্য পদে পরিচালক পদে এড. ইন্দ্রজিৎ সাহা দীপক, দিলারা মাসুদ ময়না, হারুন-অর-রশিদ, খান আব্দুল কাদির মাহবুব, কাজী আব্দুস সাত্তার, কৌশিক সাহা, মো. জাহিদ হোসেন, মো. তৌহিদুল ইসলাম খান, তাইজুদ্দিন আহমেদ, সেলিম রেজা সিরাজী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লি. নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম সানি, সদস্য আলহাজ্ব সাইফুল আলম, কুতুবউদ্দীন আহমেদ, এডভোকেট মো. রাকিবুল হাসান শিমুল, মোহাম্মদ হোসেন মিঠু এবং নির্বাচন আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান এড. মো. জাকির হোসেন, সদস্য মো. নবী হোসেন, খন্দকার মাহাবুব হোসেন (বাবু) ।
 

এই বিভাগের আরো খবর