# প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য স্বাক্ষাতে দীপে ভরসা রাখছে তৃণমূল
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ-৩ নির্বাচনী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ছড়াছড়ি। দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করে একাধিক প্রার্থী প্রচার চালাচ্ছেন। এ নিয়ে একে অপরের মধ্যে বিরোধও রয়েছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সভা-সমাবেশের পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যোগ দিচ্ছেন, অনুদান দিচ্ছেন।
অপরদিকে সোনারগাঁ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে নারায়ণগড়ঞ্জ-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা কমিটি গঠন করে যাচ্ছে। তাদের মাঝে আন্দোলনে থেকে মাঠে নেতা কর্মীদের চাঙ্গা রাখছেন বিএনপি। তারাও কোন অংশে পিছিয়ে নেই। তবে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ভিড় লেগেছে।
এদিকে নির্বাচন নিয়ে বিএনপিতে রয়েছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও আতঙ্ক। নিজেদের মধ্যে বিরোধও আছে। আগেকার মামলা এবং সাম্প্রতিক ‘গায়েবি’ মামলায় দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে অনেকে। তবে নির্বাচন নিয়ে বিএনপিতে তেমন কোনো কর্মকাণ্ড নজরে পড়ছে না। কিন্তু সরকার পতনের দাবী আন্দোলনে তারা সক্রিয় রয়েছে। এছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদসহ সম্প্রতি সময়ের বিদ্যুৎের লোডশেডিং এবং অনিয়ম নিয়ে মাঠে রয়েছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ টানা দুই বার ২০১৪ সাল থেকে এ আসনটি নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। এবারও এ আসন থেকে তিনি লড়াই করবেন বলে তার সমর্থকরা জানান। সেই অনুযায়ী নির্বাচনের আগে মাঠ গুছিয়ে নিচ্ছেন তিনি। এর আগে ২০০৮ সনের নির্বাচনে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। পরে জাতীয় পার্টি মহাজোটের সাথে শরীক হওয়া এই আসনটি তাদের ছেড়ে দিতে হয়।
কিন্তু এবার এই আসনটি ছাড়তে নারাজ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। আর এজন্য তারা এবার আগে থেকে এখানে নৌকার প্রার্থী দেয়ার দাবী জানিয়ে আসছেন। তাই এখানে এবার অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় একাধিক প্রার্থী মাঠে নেমে মনোনয়ন পেতে কাজ করে যাচ্ছেন। সে হিসেবে এবার ক্ষমতাসীন দলের মাঝে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভিড় লেগেছে। এই ভিড়ের মাঝে কে নৌকা ছিনিয়ে আনবে তা নিয়ে উঠেছে আলোচনা।
নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঝে আলোচনায় রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। তিনি সোনারগাঁ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচি থেকে শুরু করে সামাজিক সভায় অংশ গ্রহন করে আগামীতেও নৌকার জন্য ভোট চেয়ে যাচ্ছেন। তার সাথে পাল্লা দিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধরণ মাহফুজুর রহমান কালামও রয়েছেন।
তিনিও দলের হয়ে নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি মানুষের সাথে সংযোগ রেখে যাচ্ছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীর দিক দিয়ে কোন অংশে পিছিয়ে নেই ক্ষমসতাসীন দলে এই নেতা। তাছাড়া প্রচারনায়ও রয়েছেন তিনি। সোনাগাঁ উপজেল আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি নৌকার প্রার্থী দেয়ার দাবী জানিয়েছেন। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী বিরুও আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল থেকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে এলাকায় গণসংযোগ করে যাচ্ছেন।
তাছাড়া দলীয় কর্মসুচিতেও পিছিয়ে নেই আওয়ামী লীগের এই নেতা। তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে নৌকার মনোনয়ন পেতে সোনারগাঁ উপজেলার নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ করে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি মোবারক হোসেনের পুত্র এরফান হোসেন দীপ। তিনিও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় নৌকার ভোট চেয়ে গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। সেই সাথে কেন্দ্রেও জোরালো ভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি তিনি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তার সমর্থকদের নিয়ে তিনিও ইউনিয়ন গুলোতে গিয়ে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া এখানে সিআইপি বজলুর রহমানও নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্থানীয় নেতা কর্মীরা মনে করেন আগামী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিবে না আওয়ামী লীগ। আর এজন্য এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভিড় লেগেছে। এই ভিড়ের মাঝে এবার হেভিওয়েট নেতারাও রয়েছেন। তাদের মাঝে প্রতিযোগিতায় কেউ কাউকে ফালাই দিতে পারবে না। তবে সব কিছু মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে নৌকার মনোনয়নে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হবে। আগষ্টের পরেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে এই মনোনয়ন লড়াইয়ে কে জিতবে। এস.এ/জেসি