শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৭ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নানা অনিয়ম

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৭ মে ২০২৩  


নারায়ণগঞ্জ এর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবনতির কথা নতুন কিছু নয়। তবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে এই বেহাল দশা যেন কাটছেই না। হাসপাতাল ঘুরে সারা দিন অপেক্ষা করেও মাঝে মাঝে ডাক্তারের দেখাই মেলে না সেবা নিতে আসা রোগীদের। হাসপাতালের নোংরা পরিবেশ সুস্থ মানুষকেও যেন অসুস্থ বানিয়ে দেয়। হাসপাতালের আসে পাশে মানা হয় না কোনো নির্দেশনা।

 

 

নানা অপকর্ম চলে হাসপাতালের চার পাশে। নারায়ণগঞ্জ এর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট খান পুর হাসপাতাল অনিয়মের জরজরিত একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে মানা হয় না কোনো বিধি নিষেধ, এসব অনিয়মের বিষয় কর্তৃপক্ষ কে অনেক বার অবগত করলেও তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি তাদের।

 

 

হাসপাতালের ভিতরে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। এবিষয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যুগের চিন্তাকে এক স্বাক্ষাতকারে বলেন তাদের হাসপাতালের মজুদ করা পানি সম্পূন্য বিশুদ্ধ এবং পান করার যোগ্য। তবে এবিষয় মানতে নারাজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। তারা  বলেন হাসপাতালের পারি ফিল্টার না করে কেউ খাওয়ার উপযোগী মনে করবেন না এটাই স্বাভাবিক। এই হাসপাতালের রোগীরা বাইওে থেকে কিনে অথবা নিজেদের বাসা থেকে পানি নিয়ে এসে পানি পার করার ব্যবস্থা করেন।

 

 

এখানে চিকিৎসা নিতে আসা বর্হিবিভাদের রোগীদের ও একই অভিযোগ, হাসপাতালের নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা কিছুখনের জন্য এখানে সেবা নিতে এসে পানি পান করার প্রয়োজন পরলে বাইরে থেকে পানি কিনে এনে পান করতে হয়।  হাসপাতালে পানির ব্যবস্থা শুধু বাথরুমে রয়েছে। তবে সেখানকার পরিবেশ দেখে পানি পান করার মতো রুচি কারোর হবে না বলে অভিযোগ করেন রোগীরা।

 

 

অন্যদিকে হাসপাতালের বাথরুম গুলোর সমানে দিয়ে হেটে গেলেও দুর্গন্ধে নাকে কাপর দিয়ে হাটা লাগে। এমনকি হাসপাতালের চারপাশের বাতাসে একটা চাপা গন্ধ ভাসে । এতে করে এখানে থাকা রোগীদের মাঝে এক প্রকার অস্থিরতা কাজ করে। চিকিৎসা গ্রহন কিংবা এখানে ভর্তি  হওয়া রোগীদের খাবারের সময় অনেকটাই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। হাসপাতালের প্রতিটি বাথরুম ও টয়লেটের এই দুর্গন্ধে আশেপাশে মানুষ দাড়িয়ে থাকাও কঠিন হয়ে পড়ে। এবিষয় রোগীরা বলছেন হাসপাতাল কর্র্র্তৃৃৃৃপক্ষকে এবিষয় জানালেও তাদেও তেমন কোনা ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

 

 

হাসপাতালে আর একটি বড় সমস্যা জনবল সংকট। এখানে লোকবল খুবই কম যার ফলে নানা ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারন মানুষের। জনবল-সংকটের কারণে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কর্মচারীরা পড়ছেন ভোগান্তিতে, তেমনি দুর্ভোগ পোহান রোগীরাও। সরকারি চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এই হাসপাতালটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারায়ণগঞ্জের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য অন্যতম ভরসা এই হাসপাতাল। তবে জনবল-সংকট দেখা  দেওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে। এই বিষয়ে একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েও সুরাহা পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

 

 

অন্যদিকে হাসপাতালের বাইরে গেলে বোঝার উপায় থাকে না যে এটা হাসপাতাল। ব্যাটারি চালিত রিকশাসহ হাসপাতালে আসা রোগী ও কর্মকতা দের গাড়ি ও মটর বাইক পার্ক করা থাকে হাসপাতালের  আসেপাশে। অন্যদিকে লক্ষ্য করা যায় হাসপাতালের বাইরে একটু দুরে হাসপাতালে কর্মরত কর্মকর্তা দের কোয়াটরের পাশে খোলা জায়গায় বসে চলছে মাদক সেবন।

 

 

হাসপাতলের বাইরে বসে এসব মাদসেবীরা নিরভয়ে জনসমূখে মাদক সেবন করছে যেন এদেও বাধা দেবার কেউ নেই। হাসপাতালে আসা রোগীরা এবিষয় সংকোচ প্রকাশ করে বলেন হাসপাতালটাকে মাদকের আস্তানা বানিয়ে ফেলেছে। এখানে চিকিৎসা নিতে আসলেও ভয় করে।

 

 

এ বিষয় খানপুর হাসপাতালের উপ-পরিচালক জনাব আবুল বাসার যুগের চিন্তাকে বলেন, আমরা প্রায়ই এবিষয় পুলিশকে জানাই এবং তারা কিছুদিন আগেও ৩ জন কে ধরেও নিয়ে গেছেন। আমরা এবিষয়গুলো দেখি না তেমন নয়। এটি আমাদের হাসপাতালের জন্য অনেক ঝূকিপূর্ণ  এবং এ বিষয়ে পুলিশ অবগত আছে তারা প্রায় এখানে টহল দিতে আসবেন। এন.হুসেইন/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর