নারায়ণগঞ্জে কাজী নজরুলের ‘অভিযান’
রণজিৎ মোদক
প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২৩
“নতুন পথের যাত্রা পথিক/ চালাও অভিযান/ উচ্চ কন্ঠে উচ্চারো আজ/ মানুষ মহীয়ান” এই বিখ্যাত কবিতাটি নারায়ণগঞ্জ ক্লাব ঘরে বসে লিখেছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ১৯৪০ সালে অবিভক্ত বাংলার নারায়ণগঞ্জ ইউরোপিয়ান ক্লাব (বর্তমান নারায়ণগঞ্জ ক্লাব) বিশ্বখ্যাত এইচ এম ভীর গ্রামোফোন কোম্পানীর রেকডিং রুমে বসে রিহার্সাল করতেন কবি নজরুল ও তার সহযোগীবৃন্দ।
এখানে বসেই লেখা হয় মানবতাবাদী কবির শ্রেষ্ঠ কবিতা। সেই স্মৃতি স্মরণ করে আজও নারায়ণগঞ্জবাসী গর্ব অনুভব করে আসছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের আকাশে এক নব ধুমকেতু। জন্মেছিলেন ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ২৪ মে বাংলা ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে।
পিতা কাজী ফকির আহম্মদ। মাতা জাহিদা খাতুন। মাত্র নয় বছর বয়সে পিতা হারিয়ে সীমাহীন অর্থকষ্টে দিন কাটে। দুঃখ দারিদ্রের মধ্যে কাজ নেয় রুটির দোকানে, কখনো অন্যের দয়া দাক্ষিণ্যে বাল্য ও কৈশর অতিবাহিত করার পর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ৪৯ নং বাঙ্গালী পল্টনে নাম লিখিয়ে নৌ-সেনায় প্রশিক্ষণ শেষে করাচিতে স্থায়ী হন।
যুদ্ধের পর ১৯২০ সালে কলকাতায় ফিরে বাঙ্গালীর মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিস ঘরে আস্তানা গাড়েন। কমরেড মুজাফফ্র আহমদের মত মানুষের ¯েœহ সুধায় অভিষিক্ত হন কবি। ১৯২১ সালে কুমিল্লার সৈয়দা খাতুন ওরফে নার্গিস বেগম এর সঙ্গে অসফল প্রণয় পরিণয়ের পর ১৯২২ সালে লিখলেন ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ ফলশ্রুতীতে হল কারাবাস।
পরবর্তীতে ১৯২৪ সালের ২৫ এপ্রিল কুমিল্লার প্রমীলা সেনগুপ্তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কলকাতায়। দুটি সন্তানের অকাল মৃত্যুর পর সব্যসাচী অনিরুদ্ধের জন্ম হয়। ১৯৩৯ সালে স্ত্রী প্রমীলা পক্ষাঘাত হয়ে শয্যাশায়ী হলেন। দুঃখের মধ্যে দুঃখ যেন আরো দ্বিগুন রূপে সামনে এসে দাড়াঁয় ১৯৪২ সালে কবি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন চিরতরে।
কবি পতœী ১৯৬২ সালে মারা যান। দূর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি দুখু কবির জীবন থেকে। নিদারুণ অর্থকষ্ট রোগাক্লিষ্ট কবি তার পরিবার নিয়ে অযতœ অবহেলায় দিনযাপন করে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর কবিকে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।
“রতনে রতন চিনে, মানিক চিনে মানিক” সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীনতার মূল প্রেরণা পেয়েছিলেন সাহসী কবি নজরুলের বিদ্রোহ ও সাম্যের কবিতা থেকে। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই বিদ্রোহী প্রতিভাকে স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে এসে তাকে জাতীয় কবির সম্মানে ভূষিত করেন। স্বাধীন বাংলাদেশকে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র উপহার দেন জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমান। এ যেন কবির প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অকৃত্রিম ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ।
কবি নজরুল ইসলামের গানের সাথে যাদের নাম উচ্চারণ না করলেই নয়, তারা হলেন- কমল দাস গুপ্ত, ফিরোজা বেগম ও কোকিল কন্ঠের অধিকারী আব্বাস উদ্দিন আহমেদ। প্রমত্যা পদ্মার বুকে কবি ও আব্বাস উদ্দিন আহমেদ তার ছোট্ট মেয়ে ফেরদৌসীকে নিয়ে কলকাতা থেকে ঢাকায় আসার পথে লিখলেন, “পদ্মার ঢেউরে... আমার শুন্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা, নিয়ে যারে.....”।
এই গানটি কবি নিজেই শিশু শিল্পী ফেরদৌসীর কন্ঠে তুলে দিলেন এবং সেই গানটি ঢাকার বেতার কেন্দ্র উদ্বোধনে শিশু শিল্পী ফেরদৌসী পরিবেশন করেন। ঘটনাবহুল কবির জীবন যেন এক মহাকাব্য।
বাঙলার সন্তান হয়েও একসময় একশ্রেণীর বাঙালিদের কাছেই বেশি ঘৃণার পাত্র হয়েছিলেন নজরুল। তার কারণ ছিলো তিনি বিদ্রোহী ও সাম্যবাদী ছিলেন। নজরুল তার জীবনীতে এ কথা নিজেই বলে গেছেন। মানুষ কবিতায় কবি তার পরিচয় দিয়েছেন। গ্রামোফোন কোম্পানীর সাথে যুক্ত হওয়ার থেকেই নজরুল অজ¯্রভাবে গান লিখে যাচ্ছিলেন।
প্রায় ৩ হাজার গান রচনা করেছেন নজরুল। নজরুলের শ্যামা সঙ্গীত, দেশত্ববোধ এবং রণ সঙ্গীত শ্রেষ্ঠত্বের দাবি রাখে। আজাদ হিন্দ ফৌজের নায়ক নেতাজী সুবাস চন্দ্র বসু, কাজী নজরুলকে রণসঙ্গীতে শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে স্বর্ণের দোয়াত কলম উপহার প্রদান করেন।
নেতাজী বলেছিলেন, আমি বিশ্বের বহু দেশ ঘুরে বেড়িয়েছি কিন্তু নজরুলের লেখা রণসঙ্গীতের ন্যায় এত উচ্চমানের রন সঙ্গীত কোথাও শুনিনি। মূলতঃ আধুনিক বাংলা প্রেম গানের বিশিষ্ট রূপকার ছিলেন নজরুল। তাছাড়া ভক্তিমূলক গান রচনায় নজরুল অদ্বিতীয়।
নজরুলের ইসলামী ভাব ধারায় গানগুলোতে মুসলিম ঐতিহ্য প্রকাশ পেয়েছে। নজরুলের প্রথম ও সবচেয়ে জনপ্রিয় গজল গানের বই ‘বুলবুল’ ছিল বাংলার মানুষের অত্যন্ত প্রিয়। ইসলামী গজল, হামনাদ রচনায় নজরুল যেমন শ্রেষ্ঠ, হিন্দু সনাতন ধর্মালম্বীদের শ্যামা সঙ্গীত রচনায় নজরুল তেমনই শ্রেষ্ঠ।
মূলত ঃ নজরুলের লেখার মধ্যে বাংলার মানুষের অন্তরের স্রোতধারাই প্রবাহিত এবং প্রকাশিত হয়েছে। জীবৎকালে যেমন মৃত্যুর পরেও কবিকে নিয়ে কবির সৃষ্টিকর্ম নিয়ে প্রকৃত মূল্যায়নের চেয়ে রাজনীতিই হয়েছে বেশি দুঃখ এখানেই। যে অনুদান সাম্প্রদায়িক শক্তি কবির জীবদ্দশায় তাকে শ্রদ্ধা, ভালবাসা পার্থিক আনুক‚ল্য কিংবা পৃষ্ঠপোষকতা করেনি বিন্দুমাত্র।
সাধারণের ভক্তি ভালবাসায় অভিষিক্ত কবিকে তারাই এখন আপনজন বলে বুকের ভেতর পুরতে চাইছে। দুঃখ এখানেই যে কবি গণ মানুষের, যে কবি শিকল ভাঙ্গার গান গেয়েছেন। যে কবির বাণীর লাগি আমরা আজ পেতে থাকি আমাদের যাবতীয় সংকটে দুঃখ ধৈর্য্যে সেই সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কাঁপা মহা প্রলয়ের দোনাচার্যকে আমার আমাদের সীমিতবোধ বুদ্ধির ঘেরাটোপে বৃত্তাবদ্ধ করতে চাইছি, দুঃখ এখানেই।
বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের কবি নজরুল। কালের দাবি পূরণ করতেই তার আবির্ভাব। নজরুল অপ্রতিরোধ্য, অগ্রগামী, অনন্ত এক মানুষ। নজরুলকে নিয়ে ডঃ করুণাময় গোস্বামী বলেছিলেন, ‘রবীন্দ্র-নজরুল একই সাগরের দুটি রূপ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাগরের তলদেশ আর নজরুল ইসলাম সাগরের উপরের উত্তাল তরাঙ্গায়িত রূপ।’
হোসেনুর রহমান তার এক প্রবন্ধে বলেছেন, ‘বাঙ্গালী মুসলমানকে বুঝতে হবে তার এক সুগভীর অতীত আছে। সেই অতীতে সে হিন্দু-বৌদ্ধ ঐতিহ্যে অবগাহন করেছে।’
১৯৪০ সালে বিদ্রোহী কবি কাজী ইসলাম কলকাতা থেকে স্টিমারযোগে এবং ট্রেন যোগে ঢাকা হয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের তৎকালীন এইচ এম ভীর ষ্টুডিওর ভবনে বসে বসে গান রচনা করে রেকর্ডিং আব্বাস উদ্দিনের কন্ঠে। আর এই নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বসেই কবি লিখেছিলেন তার সেই বিখ্যাত কবিতা ‘নতুন পথের যাত্রা পথিক/ চালাও অভিযান উচ্চ কন্ঠে উচ্চারো আজ।
মানুষ মহীয়ান’। নারায়ণগঞ্জবাসীর মন মানসিকতায় শান্ত শিশু হৃদয়ের বন্ধু প্রীতিম সাঙ্গাবস্থানকে লক্ষ্য করেই কবি শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী, মেঘনা ও বুড়িগঙ্গা ব্রহ্মপুত্র বিধৌত পলির পরশ নিয়েই ‘অভিযান’ কবিতায় কবি লিখেছেন, কুচকাওয়াজের বাজাও মাদল/ গাও প্রভাতের গান!/ ঊষার দ্বারে পৌছে গাবি/ ‘জয় নব উত্থান!’ এন.হুসেইন রনী /জেসি
- রূপগঞ্জে গাজী টায়ার্সে আগুন : তদন্ত প্রতিবেদনে নিখোঁজের বিষয়
- কুতুবপুরে আধিপত্য বিস্তারে ব্যস্ত টিটু
- আবারো তৎপর আ.লীগ নেতা জুয়েল ও মোমিন
- মোস্তফার নয়-ছয়ে করোনাকালের স্বেচ্ছাসেবীদের লাখ লাখ টাকা লোপাট
- সেনাসদস্য হত্যায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড
- সেনাসদস্য হত্যায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড
- অবশেষে শাওন হত্যার ঘটনায় মামলা, আসামি ডিসি এসপি ও এমপিসহ ২৫২
- পাগলা হামিদের রিমান্ডে এসআই কামালের কারিশমা !
- আওয়ামী লীগ অফিস এখন টোকাইদের বিশ্রামাগার
- ইরানের ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধজাহাজ নিয়ে হাজির রাশিয়া
- হিউম্যান এইড ইন্টারন্যাশনাল নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি অনুমোদন
- সিদ্ধিরগঞ্জে গ্যাসের ভয়াবহ বিস্ফোরণ
- ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হাসিনার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে : মামুনুল হক
- রতন-আরিফের কৌশলে জিম্মি কাশীপুর
- না.গঞ্জে আ.লীগকে ওসমান লীগ বানিয়েছে শামীম ওসমান
- অনুপ্রবেশকারীদের হর্তাকর্তা মান্নান
- সংস্কারের নামে অফুরন্ত সময় নিলে জনপ্রিয়তা হারাবেন
- সিদ্ধিরগঞ্জে ইলেকট্রনিক্সের শো-রুমে অগ্নিকাণ্ড
- নির্বাচন কমিশন গঠনে দ্রুত সার্চ কমিটি: মাহফুজ আলম
- বেপরোয়া শাহেনশাহকে রুখবে কে
- রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পল্লী বিদ্যুতের ছয় কর্মকর্তা রিমান্ডে
- খালেদা জিয়া ও জাকির খানের সুস্থতা কামনায় দোয়া
- ডেঙ্গু প্রতিরোধে ‘দেওভোগ যুব সমাজ’ সংগঠনের সচেতনতামূলক কর্মসূচি
- পরপারে সাংবাদিক এহসান কাদির রুমি
- প্রকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলাকারী সিরাজ
- সিদ্ধিরগঞ্জে ঘর থেকে বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
- মান্নানের শেল্টারে বেপরোয়া ভূমিদস্যু গোলজার
- সোনারগাঁয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
- ছাত্রদলের পর আলোচনায় যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল
- চেয়ারের স্বাদ অধরাই রয়ে গেল
- ২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন
- ঝুটের নিয়ন্ত্রণ নিতে উৎপাত, গ্রেফতার পাগলা হামিদ- আনিস
- খোকনের চ্যালা চাঁদাবাজ পিন্টু গ্রেফতার
- হিরণ-লিটনের হাতে সোনার হরিণ
- চাঁদাবাজির অভিযোগে তারাব পৌর বিএনপির সেক্রেটারি পিন্টু গ্রেফতার
- ভয় দেখিয়ে বিপুল অর্থবাণিজ্য
- শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাঅষ্টমীতে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে কাশীপুর ইউনি
- এইচএসসির ফল মঙ্গলবার
- কৈলাশে ফিরলেন দেবী দূর্গা
- ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি, ধরাছোঁয়ার বাইরে অস্ত্রধারীরা
- বহিষ্কার-শোকজেও থামছে না বিএনপির ‘অবাধ্য’ নেতারা
- চাঁদাবাজির অভিযোগে তারাব পৌর বিএনপির সেক্রেটারি পিন্টু গ্রেফতার
- শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করেছেন আবু সাঈদ
- জলাবদ্ধতা নিরসনে উজ্জ্বলের খাল পরিষ্কার কার্যক্রম
- চেয়ারের স্বাদ অধরাই রয়ে গেল
- ছাত্রদলের পর আলোচনায় যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল
- পিকআপ চালক থেকে যেভাবে শত কোটি টাকার মালিক পাগলা হামিদ
- সাময়িক বরখাস্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের মুখে প্রশংসা নজর কেড়েছে নারায়ণগঞ্জ
- দখলদারিত্ব নিয়ে টিটু-আলী গ্রুপের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ